Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রশংসায় মন ভেজেনি, দূরত্বেই মান্নান-অধীর

এতদিন বাদে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেও চিঁড়ে ভিজল না! সারদা-কাণ্ডে তাঁর আইনি লড়াইয়ের জন্য দলীয় নেতৃত্বের কোনও সাধুবাদ পাচ্ছেন না বলে ‘অভিমান’ ছিল বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের। এখন মান্নানের লড়াইয়ের সুফলেই তৃণমূলের সারদা-দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে বলে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী স্বীকার করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৯
Share: Save:

এতদিন বাদে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেও চিঁড়ে ভিজল না!

সারদা-কাণ্ডে তাঁর আইনি লড়াইয়ের জন্য দলীয় নেতৃত্বের কোনও সাধুবাদ পাচ্ছেন না বলে ‘অভিমান’ ছিল বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের। এখন মান্নানের লড়াইয়ের সুফলেই তৃণমূলের সারদা-দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে বলে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী স্বীকার করলেন। মান্নানকে ‘দলের সম্পদ’ এবং তাঁর প্রতি দল কৃতজ্ঞ বলে প্রকাশ্যে কুর্নিশ জানালেন। কিন্তু এতদিন বাদে প্রদেশ সভাপতির ‘স্বীকৃতি’তে আপ্লুত নন মান্নান।

অধীরের প্রশংসায় বরং মান্নানের প্রতিক্রিয়া, “যাঁরা প্রশংসা বা অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে কারও প্রশংসা বা নিন্দার আশায় লড়িনি। যারা গরিব মানুষের টাকা লুঠ করেছে, তাদের সাজা হোক এটাই চাই।” তিনি বরং কৃতজ্ঞতা জানাতে চান আইনজীবী ও সিপিএমের প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্যকে। প্রদেশ সভাপতির ‘প্রশংসা’য় মান্নান-অধীরের দূরত্ব ঘোচার খুব একটা আশা দেখছে না কংগ্রেসের একাংশ। মান্নান ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বরং গুঞ্জন, সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল মে মাসে। প্রায় সাত মাস পরে মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কথা মনে পড়ল অধীরের! দলের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রদেশ নেতৃত্বকে এ দিন দুপুরে বিধান ভবনে ডেকেছিলেন অধীর। আগামী ২০ জানুয়ারি শহিদ মিনারে সারদা-দুর্নীতি, বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং জমি অধিগ্রহণ অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-সভার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয় সেখানে। দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর নির্দেশে রাজ্যের নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে পথে নামার পরামর্শ দেন অধীর। সভায় দৃষ্টান্তমূলক ভিড় যাতে হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতেও অনুরোধ করেন তিনি। কলকাতায় সভার আগে জেলায় জেলায় তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে জোর দিতে নেতারাও প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে একমত হন। এ দিনের বৈঠকেও গরহাজির মান্নান। তাঁর ডাকা বৈঠকে কেন মান্নান আসেন না, সে প্রসঙ্গে অধীরের জবাব, “ব্যক্তিগত ভাবে নেতাদের ডেকেছি। মান্নানও আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু উনি ব্যস্ত থাকেন, তাই আসতে পারেন না!” কংগ্রেসের ১৩০ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে হুগলির বৈদ্যবাটিতে সংহতি উৎসবের আয়োজন করেন মান্নান। এ দিন ছিল তার সমাপ্তি। সে কারণে কলকাতায় আসা যে সম্ভব নয়, তা আগেই প্রদেশ সভাপতিকে তিনি জানিয়েছেন বলে মান্নানের দাবি। অধীরকে কার্ড, চিঠি পাঠিয়ে তাঁর অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন মান্নান। প্রদেশ সভাপতির তা ‘অজ্ঞাত’ থাকলেও এ দিনের বৈঠক সেরে কিন্তু প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, সোমেন মিত্র, সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী প্রমুখ মান্নানের ডাকে সংহতি উৎসবের সমাপ্তিতে যোগ দিয়েছেন। প্রশংসার পরেও ‘দলের সম্পদ’-এর ডাকে কিন্তু বৈদ্যবাটিতে অনুপস্থিতই থাকলেন অধীর!

এ দিন বিকেলে বৈদ্যবাটি না গেলেও ২৪ ঘণ্টা পরেই রবিবার হুগলি জেলা কংগ্রেসের আয়োজনে ডানকুনিতে সভায় যাওয়ার কথা অধীরের। হুগলি জেলা কংগ্রেসের সভাপতিকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি বলে সূত্রের খবর। মান্নানেরও সেখানে যাওয়ার কথা নেই। সংশ্লিষ্ট জেলা সভাপতিদের না জানিয়ে যে ভাবে বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় অধীর সভা করছেন, তাতে শুধু মান্নান নন, একাধিক প্রদেশ নেতাই ‘ক্ষুণ্ণ’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mannan saradha scam adhir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE