Advertisement
E-Paper

পুলিশি প্রশ্নবাণ সামলেও হাসি অটুট মনোরঞ্জনার

পরপর দু’দিনে প্রায় ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের ধকল। তার সঙ্গে সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় স্নায়ুচাপ। উপরন্তু সংবাদমাধ্যমের নজরদারি। ফলে চাপ যে প্রবল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু প্রসাধন থেকে পোশাক এবং চালচলন থেকে কথাবার্তায় সেই টেনশন বা উদ্বেগ বিন্দুমাত্র প্রকাশ করলেন না। মুখে হাসি নিয়েই সংবাদমাধ্যমের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন। আবার অনেক প্রশ্নের জবাব এড়িয়েও গেলেন তিনি। হাসিমুখেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০৩:২৯
সল্টলেকে থানা থেকে বেরিয়ে আসছেন মনোরঞ্জনা।  ছবি: শৌভিক দে।

সল্টলেকে থানা থেকে বেরিয়ে আসছেন মনোরঞ্জনা। ছবি: শৌভিক দে।

পরপর দু’দিনে প্রায় ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের ধকল। তার সঙ্গে সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় স্নায়ুচাপ। উপরন্তু সংবাদমাধ্যমের নজরদারি। ফলে চাপ যে প্রবল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু প্রসাধন থেকে পোশাক এবং চালচলন থেকে কথাবার্তায় সেই টেনশন বা উদ্বেগ বিন্দুমাত্র প্রকাশ করলেন না। মুখে হাসি নিয়েই সংবাদমাধ্যমের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন। আবার অনেক প্রশ্নের জবাব এড়িয়েও গেলেন তিনি। হাসিমুখেই।

তিনি মানে প্রাক্তন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পূর্বতন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহ। এক বছর ধরে চেষ্টা চালানোর পরে অবশেষে বুধবার সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারল সল্টলেক পুলিশ। এ ক্ষেত্রেও অবশ্য কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র কৃতিত্বই প্রধান। কেননা তাদের ডাকেই মঙ্গলবার সকালে সল্টলেকে ইডি-র দফতরে হাজির হয়েছিলেন মনোরঞ্জনা। টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পরে সংবাদমাধ্যমের নজর এড়িয়ে রাতে ট্যাক্সিতে সোজা পাঁচ নম্বর সেক্টর থানায় গিয়েছিলেন তিনি। একটি সূত্রের খবর, মনোরঞ্জনা ইডি-র দফতরে হাজির হয়েছেন জেনে সল্টলেক পুলিশ তাঁকে ডেকেছিল। যদিও পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার মনোরঞ্জনা নিজেই হাজির হন থানায়।

ওই রাতে অবশ্য মনোরঞ্জনাকে জেরা করেনি পুলিশ। বুধবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই মহিলা গন্তব্যে চলে গিয়েছিলেন। একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাতে হোটেলে ছিলেন তিনি। এ দিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে মনোরঞ্জনা হাজির হন থানায়। মঙ্গলবারের দামি শাড়ি আর প্রসাধনের বহর বুধবার অনেকটাই বদলেছে। এ দিন পরনে ছিল কালো-ছাই এবং সাদা রঙের প্রিন্টেড সালোয়ার-কামিজ, ডান হাতে দামি ঘড়ি, মোবাইল। পায়ে মানানসই চটি। বদলায়নি শুধু রোদচশমাটি।

মনোরঞ্জনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সল্টলেকের গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষ এবং অন্যান্য তদন্তকারী। পুলিশি সূত্রের খবর, ওই মহিলা জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করেছেন। এমনকী বেশ কিছু তথ্য পরে পুলিশকে দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পরে হাসিমুখে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেও পুলিশ জানাচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে টেনশন বা উত্তেজনা ঢাকার চেষ্টা করছিলেন মনোরঞ্জনা।

তদন্তকারীরা পরে জানান, সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেল তৈরি ও একটি সংস্থা বিক্রির বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছিল মনোরঞ্জনার। তাঁদের মধ্যে ৪২ কোটি টাকার একটি চুক্তিও হয়েছিল। এ দিন সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মনোরঞ্জনাকে। সেই সঙ্গে মনোরঞ্জনার প্রাক্তন স্বামী মাতঙ্গ সিংহের একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের মালিকানা হস্তান্তরের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে জিজ্ঞাসাবাদে।

পরে থানার বাইরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে মনোরঞ্জনা নিজেও জানান, সুদীপ্তের সঙ্গে সাড়ে ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল তাঁর। তার মধ্যে সুদীপ্ত দিয়েছিলেন ২১ কোটি টাকা। সেই সংক্রান্ত নথিপত্র তিনি ইডি এবং সল্টলেক পুলিশকে দিয়েছেন।

তবে সাংসদ কুণাল ঘোষকে নিয়ে এ দিন ফের বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে সল্টলেক পুলিশ। গত ২৯ এপ্রিল সল্টলেক আদালতে সারদা মামলার শুনানিতে হাজির হয়ে কুণাল সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি করেও পুলিশ সে-দিন কুণালকে নিরস্ত করতে পারেনি। বুধবার ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল ওই সাংসদের। কিন্তু এ দিন কুণালকে আদালতে আনাই হয়নি। কেন তাঁকে আদালতে হাজির করানো হল না?

পুলিশ আদালতে জানায়, গাড়ির ব্যবস্থা করতে না-পারায় কুণালকে আনা যায়নি। তবে আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ, ভোটের সময়ে কুণাল যাতে সংবাদমাধ্যমের সামনে ফের মুখ খুলে সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে না-পারেন, তাই তাঁকে হাজির করানো হয়নি।

saradha manoranjana ed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy