বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরদারিতে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে কলেজে ছাত্রভর্তির সিদ্ধান্ত আগেই নাকচ করে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, অনলাইন ভর্তির ব্যবস্থা হবে কলেজ স্তরে এবং তা হবে বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবে সেটুকুও কার্যকর করতে পারল না রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি ছাত্রভর্তি সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা দফতরের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ পরিকাঠামোয় ঘাটতি থাকলে অনলাইনে ছাত্রভর্তি না-করতেও পারে কোনও কলেজ। অর্থাৎ ব্যবস্থার মধ্যেই ফাঁক রেখে দিল সরকার। শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, শঙ্কুদেব পণ্ডাকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হলেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর দাবি অমান্য করেনি উচ্চশিক্ষা দফতর। কলেজে অনলাইন ভর্তির ব্যাপারে ওই ছাত্র সংগঠনের যথেষ্ট আপত্তি ছিল। সেই কারণেই অনলাইন ভর্তির ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক না-করে সরকার শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের খবরদারির রাস্তাটা ছেড়েই রাখল।
অনেক কলেজ আগে থেকেই অনলাইন ছাত্রভর্তি করে। তার জন্য সরকারি নির্দেশিকার প্রয়োজন হয়নি। সম্প্রতি উচ্চশিক্ষা দফতর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ভর্তির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ রাখতে কলেজগুলি অনলাইনেই ভর্তি করবে। সেই সঙ্গেই ওই পরিকাঠামোর সমস্যার কথাও বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় উচ্চশিক্ষা দফতর জানায়, গ্রামাঞ্চলের কোনও কলেজে যদি পরিকাঠামো না থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে সন্তুষ্ট করে এবং রাজ্যের অনুমতি নিয়ে অনলাইন ছাড়াই ভর্তি করা যাবে।
কলেজ ভিত্তিক অনলাইন ছাত্রভর্তি করলেও পুরো স্বচ্ছতা আনা যে অসম্ভব, সে ব্যাপারে একমত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় অংশ। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইন ভর্তির প্রক্রিয়া চালুতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। রাজ্যের অধিকাংশ কলেজের অধ্যক্ষই কেন্দ্রীয় অনলাইনে ভর্তির পক্ষপাতী ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, নিজেদের পছন্দ মতো পড়ুয়া ভর্তি করাতে ছাত্র সংসদগুলি বহু সময় চাপ সৃষ্টি করে। টাকা লেনদেনেরও অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় ভাবে করা হলে মেধাতালিকা তৈরিতে ছাত্র সংসদের দাদাগিরির সুযোগ থাকে না।
কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব পেয়েই ভর্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থা নাকচ করে দেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তির প্রশ্নই নেই। এতে কলেজের স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হবে এবং অনেক ছাত্রছাত্রীই ভর্তি হতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, আগামী বছর থেকে প্রতিটি কলেজ পৃথক ভাবে অনলাইন ভর্তি করবে। বাধ্যতামূলক ভাবে এই প্রক্রিয়া চালু হবে বলে জানান তিনি।
তা হলে নির্দেশিকায় ফাঁক কেন? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ফাঁক বা ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই নেই। গ্রামের কোনও কলেজ, যেখানে হয়তো মোবাইল টেলিফোনের পরিষেবাটুকুও নেই, সেখানকার কলেজগুলির জন্যই অন্য ব্যবস্থা থাকবে।” সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আগামী বছর ৩১ মার্চের মধ্যে কলেজগুলিকে তাদের ওয়েবসাইট প্রস্তুত করে ফেলতে হবে।
সিপিএমকে বাঁচাতে ডাক দিলেন সৌগত
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
বিজেপির দাপট বাড়তেই বামেদের কাছের লোক মনে হচ্ছে তৃণমূলের! খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম নেতাদের নবান্নে ফিশ ফ্রাই খাইয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতেও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন একাধিক বার। নেত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে শনিবার তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “বিজেপির থেকে সিপিএম শ্রেয়।” আজীবন বাম বিরোধিতা করে ক্ষমতায় আসা মমতা নবান্নের বৈঠকে বিমান বসুদের কাছে জানতে চান, ভোটব্যাঙ্ক কেন ধরে রাখতে পারছে না সিপিএম। কেন বাম ভোট চলে যাচ্ছে বিজেপির ঝুলিতে। এ দিন হাবরার দেশবন্ধু পার্কের জনসভায় বামেদের ভোট ধরে রাখার উপায় বাতলে দেন সৌগতবাবু। তাঁর কথায়, “বিমান বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো পুরনো নেতৃত্বকে বদলানো দরকার। লোকেরা সিপিএমের পুরনো মুখ দেখতে চায় না। নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসুন।” সৌগতবাবুর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, “একে বলে মরণকালে হরিনাম। যখন সিপিএম-কে হারানো দরকার মনে হয়েছিল, তখন নিজেরাই কাঁধে করে বিজেপি-কে রাজ্যে নিয়ে এসেছিলেন। এমনকী মাওবাদীদেরও হাত ধরেছিলেন। এখন আবার হঠাৎ মনে হচ্ছে সিপিএম ভাল!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy