বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিশিক্ষার অভিজাত কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের মর্যাদালাভের পথে শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (বেসু)-র সামনে থেকে শেষ বাধা সরে গেল। লোকসভায় অনুমোদনের পরে সংশ্লিষ্ট বিলটিতে আজ সিলমোহর দিল রাজ্যসভাও। ফলে দেশের সর্বপ্রথম ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ (আইআইইএসটি)-র তকমা বেসু-র ঝুলিতে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (সংশোধনী) বিলটি গত ডিসেম্বরে লোকসভায় পাশ হয়েছে। বাকি ছিল রাজ্যসভার সম্মতি। কিন্তু তেলঙ্গানা প্রশ্নে বিতণ্ডার জেরে সংসদের চলতি অধিবেশনে সেটি আদৌ পাশ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। আর এই অধিবেশনে বিল না-উতরোলে গোটা প্রক্রিয়া ফের শুরু করতে হতো নতুন ভাবে, কেননা বর্তমান লোকসভার এটাই শেষ অধিবেশন। সে ক্ষেত্রে লোকসভার মেয়াদ ফুরনোর সঙ্গে সঙ্গে বিলও তামাদি হয়ে যেত।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি। তেলঙ্গানা বিল ঘিরে আজ রাজ্যসভা বারবার মুলতুবি হলেও বিকেল চারটেয় বেসু-বিল পেশ হয়, পাশও হয়ে যায়। এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য কংগ্রেস, বাম, বিজেপি, সমাজবাদী পার্টি-সহ সব দলের সাংসদদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক ডেরেক ও’ব্রায়েন। “গোটা রাজ্যের জন্য সুখবর। এ বারেও পাশ না-হলে বিল নষ্ট হয়ে যেত। লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠিত হলে তখন গোড়া থেকে শুরু করতে হতো গোটা প্রক্রিয়া।” বলেন তিনি। রাজ্যসভায় বিল পাশের খবরে বেসু-চত্বরে আজ ছিল খুশির হাওয়া। বেসু’র উপাচার্য অজয় রায়ের প্রতিক্রিয়া, “অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। তবে দেশের প্রথম আইআইইএসটি হিসেবে আমাদের দায়িত্বও অনেক বেড়ে গেল। সেটা মাথায় রাখতে হবে।”
কেন্দ্রীয় স্তরে উত্তরণের সুবাদে বেসু ‘জাতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ’ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাবে। স্নাতক-স্নাতকোত্তর পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষণা চলবে, তৈরি হবে উৎকৃষ্ট মানের শিক্ষক-অধ্যাপক। বিদেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধাও অনেক সহজ হবে। শিবপুর আইআইইএসটি’র প্রথম পাঁচ বছরের জন্য ৫৯২ কোটি টাকা ধার্য হয়েছে। নতুন মর্যাদাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটিতে পড়ুয়া-ভর্তির পদ্ধতি কী হবে?
বেসু-সূত্রের খবর, আইআইইএসটি হয়ে যাওয়ার পরে নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রভর্তি হওয়ার কথা আইআইটি জেইই (মেন) মারফত। তবে এ বছর রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমেই বেসু-তে ভর্তি নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। বেসু’তে এই মুহূর্তে পড়ুয়া প্রায় ৩০০০। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে পাঁচ হাজারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy