Advertisement
E-Paper

ভগীরথ এ বার ৯ দিন সিটের হেফাজতে

পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষের উপরে গুলিচালনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ভগীরথ ঘোষকে শনিবার ৯ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেল বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি (সিট)। ওই ঘটনায় অধরা আরও দুই অভিযুক্তের নামে ফের হুলিয়াও জারি করা হল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০৮
আদালতে ভগীরথ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

আদালতে ভগীরথ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষের উপরে গুলিচালনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ভগীরথ ঘোষকে শনিবার ৯ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেল বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি (সিট)। ওই ঘটনায় অধরা আরও দুই অভিযুক্তের নামে ফের হুলিয়াও জারি করা হল। কাল, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি চহ্বাণ এবং বিচারপতি চমলেশ্বরের ডিভিশন বেঞ্চে পাড়ুই-মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা। বীরভূমের দু’টি কেন্দ্রে ভোট বুধবার, ৩০ এপ্রিল।

গত জুলাইয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে বীরভূমের পাড়ুই থানার কসবা পঞ্চায়েতের বাঁধনবগ্রামের বাসিন্দা, ওই পঞ্চায়েতের নির্দল প্রার্থী (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষকে গুলি করে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ মোট ৪১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ। তিনি যে চার জনের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছিলেন, ভগীরথ ঘোষ তাঁদের অন্যতম। তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে সম্পত্তি ক্রোক করার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। হামলায় আর এক প্রধান অভিযুক্ত সাত্তোর এলাকার বাসিন্দা শেখ ইউনিস ধরা পড়লেও, এখনও ফেরার বাঁধনবগ্রামের সুব্রত রায় ও কসবার বাসিন্দা শেখ আজগর। তাঁদের বিরুদ্ধে আগেও হুলিয়া ছিল। এ দিন নতুন করে হুলিয়া জারি হয় তাঁদের বিরুদ্ধে।

দীর্ঘদিন ফেরার ভগীরথ ঘোষ সিউড়ি আদালতে বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করার পরে সিট কেন তাঁকে হেফাজতে চাইল না, তা নিয়ে জলঘোলা হয়। এত দিন যাঁকে ধরা যায়নি, সেই ভগীরথ সিট বা জেলা পুলিশের নজর এড়িয়ে আত্মসমর্পণ করলেন কী ভাবে, সে প্রশ্নও ওঠে। শুক্রবার সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমে ভগীরথকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল সিট।

এ দিন কুন্তলবাবু সিউড়ির মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ভারপ্রাপ্ত বিচারক অর্ণব রায় চৌধুরীর কাছে দাবি করেন, ওই হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের তালিকায় ভগীরথের নাম রয়েছে। তাঁকে কোনও দিনই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি পুলিশ। কাজেই তাঁকে জেরা করে খুনের কাজে ব্যবহার করা আগ্নেয়াস্ত্র ও ওই ঘটনায় কে-কে জড়িত তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাইছে সিট। এতে তদন্তে অনেকটাই অগ্রগতি হবে। কুন্তলবাবু আদালতে আরও জানান, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ভগীরথের আইনজীবী শিবসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে পাল্টা দাবি করেন, “এর আগেও অনেকে ধরা পড়েছে। কিন্তু কিছু উদ্ধার হয়নি। পুলিশও তদন্তে তেমন কিছু পায়নি। ভগীরথকে সিটের হেফাজতে ১৪ দিন দেওয়ার যুক্তি নেই।” কুন্তলবাবুর দাবি, “বিচারক দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযুক্তকে ৯ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠান।” সিটের অফিসার ইনচার্জ তীর্থঙ্কর সান্যাল বলেন, “ভগীরথের আত্মসমর্পণের খবর আগাম জানতাম না। জানতে পেরেই ওঁকে হেফাজতে চাওয়া হয়। আশা করছি, ওঁর কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।”

আদালত চত্বরে এ দিন ভগীরথ দাবি করেন, “সংবাদ মাধ্যমে আমার নামে টানা মিথ্যা খবর প্রচার হওয়ায় পরিবারের উপরে চাপ তৈরি হয়েছিল। তাই আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছি।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতকে চেনেন কি না জানতে চাওয়া হলে তাঁর জবাব, “ওঁকে টিভিতে দেখেছি। চিনি না। আমি কোনও দলও করি না।” পরে তাঁকে চিৎকার করতে শোনা যায়, “নিমাই দাস আমাকে ফাঁসিয়েছে।” কসবা পঞ্চায়েত এলাকায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত নিমাইবাবু বলেন, “হৃদয়, ভগীরথ এবং এই মামলার আর এক ফেরার সুব্রতর সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। খুনটা আমার সামনে হয়নি। আমি কী ভাবে, কাউকে ফাঁসাবো?”

parui sagar ghosh murder case bhagirath ghosh sit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy