Advertisement
E-Paper

মধ্যমগ্রামে সিবিআই নয় কেন, জবাব চায় হাইকোর্ট

যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলে মধ্যমগ্রামের কিশোরীকে দ্বিতীয় বার ধর্ষিতা হতে হতো না বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হবে না, সাত দিনের মধ্যে আদালতে তার জবাব দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ২২:৫৮

যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলে মধ্যমগ্রামের কিশোরীকে দ্বিতীয় বার ধর্ষিতা হতে হতো না বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হবে না, সাত দিনের মধ্যে আদালতে তার জবাব দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
মধ্যমগ্রামের ঘটনায় পুলিশি গাফিলতি এবং চিকিৎসায় গলদের অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃতা কিশোরীর বাবা। বৃহস্পতিবার বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে মামলাটি ওঠে।
শুরুতেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, মধ্যমগ্রামের ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। কাজেই সিবিআই-কে তদন্তভার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এই সময়েই বিচারপতি দত্ত মন্তব্য করেন, বিষয়টা খুবই গুরুতর। “প্রথম বার ধর্ষিতা হওয়ার পরে পুলিশকে সব জানানো সত্ত্বেও মেয়েটি দ্বিতীয় বার ধর্ষিতা হয়েছে। এখানেই নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠছে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলে মেয়েটি দু’বার গণধর্ষণের শিকার হতো না।”
বিচারপতির কথার সাপেক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে সরকার অত্যন্ত সজাগ। বিচারপতি দত্ত বলেন, এটা কোনও রাজনৈতিক ঘটনা নয়। এক কিশোরীর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তাকে নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি। সেই জন্য রাজ্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। বলতে হবে, সিবিআইকে এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হবে না কেন।
সাত দিনের মধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানাতে হবে। রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা খতিয়ে দেখে আগামী ১৬ জানুয়ারি বিচারপতি তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে এ দিন জানিয়ে দেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, মেয়েটি প্রথম বার ধর্ষিতা হওয়ার পরে পুলিশকে সব ঘটনাই জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশে অভিযোগ করে ফিরে আসার পরেই তাকে দ্বিতীয় বার ধর্ষিতা হতে হয়। নিরাপত্তা না পেয়ে এর পরে কিশোরীর পরিবার মধ্যমগ্রামের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়। তাদের উঠে আসতে হয় নতুন জায়গায়। সেখানেও সে নিরাপত্তা পায়নি। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই কিশোরী তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। বিকাশবাবু আদালতকে বলেন, এখানেই হেনস্থার শেষ হয়নি। পুলিশ মৃতদেহটি জোর করে দাহ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর জন্য দেহ জবরদখল করা হয়। এখনও মেয়েটির পরিবারকে কোনও নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের ভূমিকা এখানে কী ছিল, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছেন বিচারপতি দত্ত।
এর পরেই বিচারপতি বলেন, ওই পরিবারের মানসিক এবং শারীরিক নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর বক্তব্য, আবেদনকারীর অভিযোগ যুক্তিযুক্ত কি না, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারেরই। তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবে এগোচ্ছে কি না, এটা সরকার শুধু মুখে বললেই হবে না। নির্যাতিতার পরিবার যাতে সে ব্যাপারে আস্থা রাখতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
তবেই মৃতার বাবা-মা কিছুটা স্বস্তি অনুভব করবেন।
এ দিন মধ্যমগ্রামের ঘটনার প্রতিবাদে কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন।
এই ঘটনা নিয়ে এসএফআই-সহ সব ছাত্র সংগঠনকে একসঙ্গে পথে নামার আবেদন জানিয়েছে ছাত্র পরিষদও।

madhyamgram rape
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy