Advertisement
E-Paper

রাজভবনে বাম-বিজেপি, মাখড়ায় আজ অধীরেরা

বর্ধমানের বিস্ফোরণ এবং বীরভূমের পাড়ুই-কাণ্ডের জেরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অনাস্থা জানিয়ে এল দুই বিরোধী পক্ষ বাম ও বিজেপি। তাদের দাবি, বীরভূমের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করানোর জন্য উদ্যোগী হোন রাজ্যপাল। উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অবিলম্বে যাতে রাজ্য থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়, সেই দাবিও রাজ্যপালের কাছে জানিয়েছে বামেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:২৮
মাখড়া কাণ্ড নিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার হাওড়া সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

মাখড়া কাণ্ড নিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার হাওড়া সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বর্ধমানের বিস্ফোরণ এবং বীরভূমের পাড়ুই-কাণ্ডের জেরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অনাস্থা জানিয়ে এল দুই বিরোধী পক্ষ বাম ও বিজেপি। তাদের দাবি, বীরভূমের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করানোর জন্য উদ্যোগী হোন রাজ্যপাল। উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অবিলম্বে যাতে রাজ্য থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়, সেই দাবিও রাজ্যপালের কাছে জানিয়েছে বামেরা। রাজ্যপালের কাছে গিয়ে বিরোধীরা রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে চাইছে দেখে শাসক দলের তরফে আবার পাল্টা কটাক্ষ করা হয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী সব শক্তি এক হয়ে রাজ্যে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে!

রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী অবশ্য বীরভূম-সহ সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তিতে মাল্যদানের অনুষ্ঠানের অবসরে শুক্রবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেছেন, “ঘটনার কথা জেনেছি। কেন্দ্রীয় সরকারকে আমার যা জানানোর জানাব। এটা আমার এবং কেন্দ্রের ব্যাপার।” দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের নেতৃত্বে এ দিনই বিজেপি-র একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানিয়েছে, মাখড়া গ্রামে গিয়ে তিনিই সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে আসুন।

বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে এ দিনই রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন সুভাষ নস্কর, প্রবোধ সিংহ, আনন্দময় মণ্ডল, বিশ্বনাথ কারকের মতো বাম পরিষদীয় দলের নেতারা। বীরভূমের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের পাশাপাশিই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন বাম বিধায়কেরা। ভাঙড় থেকে পাড়ুই, একের পর এক ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য জুড়ে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার এবং রাজনৈতিক আনুগত্য না দেখে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিও করেছেন তাঁরা।

রাজভবন থেকে বেরিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার যে অবস্থা হয়েছে, তা একেবারেই নজিরবিহীন! বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক বা সাধারণ মানুষই শুধু নন, শাসক দলের লোকজনও আর নিরাপদ নন! এই অবস্থায় সর্বস্তরে সর্বদল বৈঠক ডাকা দরকার।” নন্দীগ্রামের সঙ্গে প্রায়শই পাড়ুইয়ের তুলনা করছেন বিজেপি নেতারা। সূর্যবাবু এ দিন বলেছেন, “যে নন্দীগ্রাম নিয়ে এত কথা, সেখানে বারবার নানা স্তরে সর্বদল ডাকা হয়েছিল। এখনকার শাসক দল তখন সেই সব বৈঠকে যেত না!”

বিজেপি এ দিন রাজভবনে গিয়েছিল তথাগত রায়, শমীক ভট্টাচার্য, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী-সহ ২৯ জনের বিরাট প্রতিনিধিদল নিয়ে! মাখড়া কাণ্ডে নিহত তৌসিফ শেখের দিদি মইনা বিবি এবং আরও দুই আক্রান্ত নইমা বিবি ও সামাদ শেখও সেই দলে ছিলেন।

চিন সফররত বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক এবং এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এ দিনই বেজিং থেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই। তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কের আইনে এ রাজ্য চলছে!” আবার এ দিনই কলকাতায় এসে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জগৎপ্রকাশ নাড্ডা তোপ দেগেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাজ্যে ‘জঙ্গল রাজ’ চলছে!

প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, আজ, শনিবারই পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবের নেতৃত্বে বিধায়কদের একটি দল মাখড়া যাবে। দলে উপস্থিত থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। মানসবাবুর মন্তব্য, “রাজ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি’দের আদৌ কোনও কার্যকারিতা আছে বলে বোঝা যাচ্ছে না! এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও তাঁরা কেউ বীরভূমে যাননি।”

বিরোধীদের এই সম্মিলিত তৎপরতার জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন পাল্টা বলেছেন, “বিচ্ছিন্নতাবাদী সব শক্তি এক হয়ে রাজ্যের মধ্যে বিচ্ছিন্ন ভাবে অশান্তি করার চেষ্টা করছে! বহু প্রতিকূলতা অতিক্রম করে রাজ্য যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখন কর্মসূচিহীন, জনহীন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি সংবাদমাধ্যমের একাংশের উপরে নির্ভর করে ভেসে উঠতে চাইছে। তারা সফল হবে না।”

tmc bjp parui agitation makhra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy