Advertisement
E-Paper

লপসিতে অরুচি আফতাব-পড়শি নিতুর

আলিপুর জেলে কুখ্যাত জঙ্গি আফতাব আনসারির পাশের ঘরেই রাখা হল সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে। ফাঁসির আসামিদের জন্য বরাদ্দ এক নম্বর সেলে রয়েছে মার্কিন তথ্য কেন্দ্রে হামলা ও খাদিম-কর্তা অপহরণের মূল পাণ্ডা আফতাব। একই সেলে ঠিক তার পাশের ঘরেই নিতুকে রেখেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আফতাবের মতো নিতুর উপরেও সারা ক্ষণ সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৫

আলিপুর জেলে কুখ্যাত জঙ্গি আফতাব আনসারির পাশের ঘরেই রাখা হল সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে।

ফাঁসির আসামিদের জন্য বরাদ্দ এক নম্বর সেলে রয়েছে মার্কিন তথ্য কেন্দ্রে হামলা ও খাদিম-কর্তা অপহরণের মূল পাণ্ডা আফতাব। একই সেলে ঠিক তার পাশের ঘরেই নিতুকে রেখেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আফতাবের মতো নিতুর উপরেও সারা ক্ষণ সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

তবে শুধু নিতুু নন, সারদা তদন্তে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার সকলকেই নিরাপদে রাখতে কালঘাম ছুটছে কারা দফতরের। সিবিআইয়ের হাত ঘুরে এখনও পর্যন্ত চার জনের জেল হেফাজত হয়েছে। এঁদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ কারা দফতর। তাই আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেলের সব চেয়ে ‘সুরক্ষিত’ সেলটিতেই সারদা কেলেঙ্কারির অভিযুক্তদের রাখা হয়েছে। দিন কয়েক আগে আলিপুর জেল ভেঙে তিন বন্দি পালিয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এক কারা-কর্তা জানিয়েছেন, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের গতি-প্রকৃতিতে স্পষ্ট, আরও কয়েক জন প্রভাবশালীরও জেলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তাঁদের রাখার জায়গা ঠিক করে রাখতে দিশেহারা অবস্থা তাঁদের। আলিপুর, প্রেসিডেন্সি এবং দমদম জেলে আগে থেকেই কিছু সেল বাছাই করে রাখা হয়েছে। সিবিআইয়ের হাত ঘুরে ভিআইপি অভিযুক্তরা এলে এখানেই রাখা হবে।

জেল সূত্রের খবর, নিতুুকে এক নম্বর সেলের যে ঘরে রাখা হয়েছে, সেখানে এত দিন ছিল জামিলুদ্দিন নাসির মার্কিন তথ্য কেন্দ্রে হামলার আর এক আসামি। নিরাপত্তাজনিত কারণে কয়েক মাস আগে তাকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছে। তার পর থেকে ওই ঘরটি খালিই ছিল। সাধারণত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বা ভয়ঙ্কর অপরাধীদের জন্যই আলিপুরের এই সেলটি নিদিষ্ট। আদালতের নির্দেশে গত শুক্রবার নিতুুর জেল হেফাজত হওয়ায় তাঁকেও সেই ‘কনডেম্ড’ সেলেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গিয়েছে, শনিবার নিতুু বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন। প্রথম দিন জেলের খাবার অবশ্য তিনি মুখে তোলেননি। শুধু দু’তিন বার চা-বিস্কুট খেয়েছেন। আর খেয়েছেন বাড়ি থেকে আনা ছোলা-বাদাম। জেল কর্তারা তাঁকে জানান, ছোলা-বাদাম খেয়ে বেশি দিন থাকা যায় না। লপসি খাওয়া অভ্যাস করুন। নিতুু জেল কর্তাদের জানিয়েছেন, সিবিআই তাঁর কাছ থেকে বিশেষ কিছু পায়নি। ফলে অচিরেই জামিন পেয়ে যাবেন তিনি।

তবে আফতাবের সঙ্গে নিতুুর কথার্বাতা হয়নি বলেই জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। জেল কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই সেলের নিরাপত্তা এতটাই কঠোর যে গত দু’বছর আফতাবকে জেলের বাইরে বার করা হয়নি। অন্য রাজ্যের আদালতে হাজির করার অনুমতিও দেয়নি রাজ্য সরকার। এর মধ্যেই আলিপুর থেকে তিন বন্দি পালানোয় সেখানকার নিরাপত্তার কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। ওই ঘটনার পরে সুপার-সহ পাঁচ কারাকর্মীকে সাসপেন্ড করে সরকার। তার পরই সারদার মতো হাই প্রোফাইল মামলার এক অভিযুক্ত জেলে আসায় আর কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।

জেল কর্তারা জানাচ্ছেন, আলিপুরেই দু’জন ফাঁসির আসামির সঙ্গে রাখা হয়েছে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে। আলিপুর মহিলা জেলে কড়া নজরদারিতে রয়েছেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়। আর তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকে রাখা হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলের ১/২২ নম্বর সেলে। মূলত রাজনৈতিক বন্দি বা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদেরই এই সেলে রাখা হয়। এই সেলটিতেও সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হয়। এক জেল-কর্তা জানান, সারদা মামলায় সিবিআইয়ের জেরার পরে ফের জেলে ফেরত এসেছেন এই চার জন। সিবিআই প্রয়োজনে এদের আবার হেফাজতে নিতে পারে। সেই কারণেই এঁদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও শিথিলতা দেখানো হচ্ছে না।

atri mitra sardha scamp debabrata sarkar aftab ansari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy