মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যকে আবার ডেকে পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। প্রবীণ শিল্পীকে আগামী সপ্তাহে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি অফিসে ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত মার্চ মাসেও ইডি শুভাপ্রসন্নবাবুকে জেরা করেছিল। তখনও সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী পিয়ালি ও ছেলে শুভজিৎ গ্রেফতার হননি। সারদা কেলেঙ্কারির এত তথ্যও এসে পৌঁছয়নি ইডি-র হাতে। সেই তুলনায় এ বার শুভাপ্রসন্নবাবুকে ডেকে পাঠানোটা তাই আলাদা করে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শুভাপ্রসন্নবাবু রেলের ‘যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য’ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বৃত্তে অন্যতম মুখ শুভাপ্রসন্নবাবু। ইডি সূত্রের খবর, সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন তাঁর কাছ থেকে একটি চ্যানেল কিনেছিলেন। নিউটাউন-ভাঙর এলাকায় শুভাপ্রসন্ন যে ‘আর্টস একর’ গড়ে তুলেছেন, তাতেও সারদার টাকা রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
শুভাপ্রসন্নবাবুর কাছ থেকে সুদীপ্ত যে চ্যানেলটি কিনেছিলেন, সেটি অবশ্য কখনওই চালু হয়নি। ইডি সূত্রের খবর, সুদীপ্তকে কার্যত চাপ দিয়ে একের পর এক চ্যানেল ও সংবাদপত্র কিনিয়েছিলেন সমাজের বেশ কিছু ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তি। পরে সেই কাগজ ও চ্যানেল তাঁরা নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছেন। অভিযোগ, কেনার সময় ওই সংবাদমাধ্যমের যে বাজারদর ছিল, চাপ দিয়ে সুদীপ্তকে তার চেয়ে অনেক বেশি টাকায় তা কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল। এ ভাবেই ‘প্রভাবশালী’-দের ঘনিষ্ঠরা তাঁদের লোকসানে চলা ব্যবসা বিক্রি করে লাভবান হন। তদন্তকারীদের মতে, শুভাপ্রসন্নবাবুর নামও রয়েছে ওই লাভবানদের তালিকায়।
গত ৫ অক্টোবর সিবিআই-ও শুভাপ্রসন্নবাবুকে নোটিস পাঠিয়েছিল। তবে সে বার তদন্তকারীদের কাছে ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল না। বুধবার শুভাপ্রসন্নবাবুর এক প্রতিনিধি সিবিআই দফতরে গিয়ে তদন্তকারীদের কাছে নথিপত্র দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এ বার ইডি দফতরে তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবেই হাজিরা দিতে হবে।
এ ব্যাপারে কী বলছেন শুভাপ্রসন্নবাবু? বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে ফোন করা হলে এক ব্যক্তি ফোন ধরে বলেন, “দাদা বাড়ি নেই।” কখন ফিরবেন? উত্তর আসে, “বলতে পারব না।” তিনি কে বলছেন জানতে চাওয়া হলে জবাব মেলে, “আমি এই বাড়িতেই থাকি।” ফোন করা হয়েছিল শুভাপ্রসন্নবাবুর মোবাইলেও। কিন্তু সেটি বেজে যায়। এসএমএসেরও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। প্রায় আধঘণ্টা পরে তাঁর বাড়িতে আবার ফোন করলে এক ভদ্রমহিলা ফোন তুলে বেশ কয়েক বার ‘হ্যালো’ বলার পর, আনন্দবাজারের নাম বলামাত্র ‘শোনা যাচ্ছে না’ বলে ফোন রেখে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy