Advertisement
E-Paper

সিইও-র মাথায় বিশেষ পর্যবেক্ষক, চাপে তৃণমূল

শাসক দলকে ফের চাপে ফেলল নির্বাচন কমিশন। ২০০৪-এর পর এ বারের ভোটেও ফিরিয়ে আনা হল বিশেষ পর্যবেক্ষকের পদ। বিরোধীদের দাবি মেনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের মাথায় এই বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে বসানো হল বিহার ক্যাডারের আইএএস সুধীরকুমার রাকেশকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৫
বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরে সুধীরকুমার রাকেশ।—নিজস্ব চিত্র।

বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরে সুধীরকুমার রাকেশ।—নিজস্ব চিত্র।

শাসক দলকে ফের চাপে ফেলল নির্বাচন কমিশন। ২০০৪-এর পর এ বারের ভোটেও ফিরিয়ে আনা হল বিশেষ পর্যবেক্ষকের পদ। বিরোধীদের দাবি মেনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের মাথায় এই বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে বসানো হল বিহার ক্যাডারের আইএএস সুধীরকুমার রাকেশকে। এ রাজ্য আগেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কড়া মানুষ হিসাবে পরিচিত এই অফিসারের।

এ রাজ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে অজস্র অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। এমনকী মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-র দফতরের বিরুদ্ধেও বিরোধী দলগুলি কমিশনের কাছে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছিল। গত মাসে উপ-নির্বাচন কমিশনার বিনোদকুমার জুৎসি এসে ডিএম-এসপি-দের সর্তক করে যান। এর পর গত ৫-৬ এপ্রিল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পতের নেতৃত্বে রাজ্যে আসে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সেখানেও প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে বিরোধী দলগুলি। পাশাপাশি, প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি রাজ্যে এক জন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের দাবি তোলেন বিরোধী নেতারা। কমিশনের ফুল বেঞ্চ ফিরে যাওয়ার পর পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠা অফিসারদের সরিয়ে দেয় কমিশন। ৪২টি কেন্দ্রেই পাঠানো হয় পুলিশ পর্যবেক্ষক। এর পরেই নির্বাচন কমিশন বিশেষ পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবার রাতেই কলকাতা এসেই সেই দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন সুধীরকুমার রাকেশ।

কমিশনের সচিব কর্তা যে বার্তা সিইও অফিসে পাঠিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, এ রাজ্যে ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ পর্যবেক্ষকই হবেন কমিশনের চোখ ও কান। তিনি প্রয়োজনে কমিশনকে রিপোর্ট পাঠাবেন। কোনও অফিসার বা কর্মী সম্পর্কে তাঁর কিছু বলার থাকলে তিনি সরাসরি ‘নির্বাচন সদন’কে রিপোর্ট দিতে পারবেন বলেও কমিশনের ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। তবে পর্যবেক্ষক হিসাবে তিনি নিজে থেকে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবেন না।

এ রাজ্যে প্রথম বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে ২০০৪ সালে এসেছিলেন বিহারের আইএএস অফিসার আফজল আমানুল্লা। তিনি সেই সময় রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে নির্বাচন কমিশনকে একটি রিপোর্ট দেন। তাতে তিনি বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করেন এই রাজ্যে ঠিক কী কী ভাবে রিগিং হয়। প্রশাসনকে কী ভাবে সরকার পক্ষ কাজে লাগায়। আমানুল্লার পর ২০০৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কমিশনের পরামর্শদাতা হিসাবে এই রাজ্যে এসেছিলেন কে জে রাও। তিনি ভোট প্রক্রিয়া শুরুর পরেও ২ লক্ষের বেশি ভোটারের নাম তালিকা থেকে কেটে বাদ দিয়েছিলেন।

সুধীরকুমারকে এর আগে ২০১১ সালে রাজ্য বিধানসভা ভোটের সময়ও ৬ সদস্যের পর্যবেক্ষক দলের নেতা হিসাবে এ রাজ্যে পাঠিয়েছিল কমিশন। তখন তিনি ছিলেন বিহারের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার। এখন তিনি বিহারের ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ এর ডিরেক্টর জেনারেল। এ দিন রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে তিনি বলেন,“সিইও-র সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি জেনেছি। যেমন যেমন পরিস্থিতি হবে, সেই মতো ব্যবস্থা নেবে কমিশন।”

বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “সিইও অফিস সক্রিয় ছিল না। কমিশন আমাদের দাবি মেনেছে। আশা করি, এ বার প্রশাসন নিরপেক্ষ হবে।” তবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ইউপিএ সরকার যেমন সিবিআই-কে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে, সে ভাবেই কমিশনকে দিয়ে নানা রাজ্যের উপরে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। এ রাজ্যে ২০০৪ সালের মতো পরিস্থিতি এখন নেই। তা সত্ত্বেও তারা বিশেষ পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে!” পার্থবাবুর যুক্তি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে। প্রাক্-নির্বাচনী হানাহানি আগের মতো নেই। পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীরা যখন সুষ্ঠু ভাবে ভোট পরিচালনার কাজে নেমেছেন, সেই সময়েই কমিশনের এই সিদ্ধান্তে তাদেরই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।

election commission special observer sudhir kumar rakesh tmc ceo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy