Advertisement
০৯ মে ২০২৪

স্কুল-পড়ুয়ারা ভোটগ্রহণ কেন্দ্র সাজাক, চায় নির্বাচন কমিশন

ভোট-প্রক্রিয়ায় সামিল হোক স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও। তারাই নিজের হাতে, নিজেদের মতো করে সাজাক বুথকে। এমনটাই চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাদের প্রস্তাব, ছবি এঁকে, স্লোগান লিখে কিংবা বুথের নির্দেশিকা দেওয়া মানচিত্র তৈরি করে রাজ্যে কিছু ‘মডেল-বুথ’ তৈরি করুক পড়ুয়ারা। কমিশনের আশা, এই উপায়ে দেশের ‘ভাবী’ ভোটারদের আরও বেশি করে ভোট-সচেতন করা যাবে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৫
Share: Save:

ভোট-প্রক্রিয়ায় সামিল হোক স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও। তারাই নিজের হাতে, নিজেদের মতো করে সাজাক বুথকে। এমনটাই চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাদের প্রস্তাব, ছবি এঁকে, স্লোগান লিখে কিংবা বুথের নির্দেশিকা দেওয়া মানচিত্র তৈরি করে রাজ্যে কিছু ‘মডেল-বুথ’ তৈরি করুক পড়ুয়ারা। কমিশনের আশা, এই উপায়ে দেশের ‘ভাবী’ ভোটারদের আরও বেশি করে ভোট-সচেতন করা যাবে।

রাজ্যের সহ-মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অমিতজ্যোতি ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, রাজ্য জুড়ে কিছু ‘মডেল পোলিং স্টেশন’ তৈরি করা হবে। সেই কেন্দ্রের বুথের বাইরে সংশ্লিষ্ট স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের দিয়ে ছবি আঁকানোর পাশাপাশি ম্যাপও আঁকানো হবে, লেখানো হবে বুথ । কমিশন চায়, যত বেশি সম্ভব পড়ুয়া এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হোক।

নির্বাচন কমিশনের তরফে এমন উদ্যোগ নতুন নয়। এর আগেও নতুন প্রজন্মকে ভোটে উৎসাহিত করতে নানা প্রকল্প নিয়েছে কমিশন। কখনও ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে ঘুড়ি উড়ানো, কখনও জাতীয় ভোটার দিবসে ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে ‘স্লোগান রাইটিং’ বা ক্যুইজ, আবার কখনও শিক্ষক দিবসে ‘ভারতীয় গণতন্ত্র’ বিষয়ে রচনা ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। সম্প্রতি কমিশনের তরফে নদিয়ার কিছু স্কুলে পড়ুয়াদের মাধ্যমে ‘সংকল্পপত্র’ বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, মা-বাবাকে ভোট দেওয়ায় ব্যাপারে অঙ্গীকার করানো।

তবে এ বারের উদ্যোগ একেবারেই নতুন। নদিয়ার নির্বাচন দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “ভোটকেন্দ্র সাজাতে পড়ুয়ারা নিজেদের আঁকা ভোট সংক্রান্ত প্রচারমূলক ছবি ব্যবহার করবে। এতে বুথ যেমন আকর্ষণীয় হবে, তেমনি হাতে-কলমে কাজ করতে গিয়ে নতুন প্রজন্মও ভোট বিষয়ে সচেতন হবে।” কমিশন সূত্রের খবর, এর আগে ভোট-প্রচারে যে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা হয়েছিল, সেই ছবিগুলি ফের ব্যবহার করা যাবে।

কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সব জেলার স্কুল কর্তৃপক্ষই। নদিয়ার শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কিংশুক চক্রবর্তী বলেন, “কমিশনের এই উদ্যোগে আগামী প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।’’ তবে স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি বলে তিনি জানান। ওই জেলারই মুড়াগাছা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, “এমন উদ্যোগে পড়ুয়ারা বুঝবে ভোট মানে শুধু গণ্ডগোল, সন্ত্রাস নয় তা আবশ্যিক এবং পবিত্র বিষয়।” কোচবিহারের ইন্দিরা দেবী বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নবনীতা চৌধুরী বলেন, “ভোটের জন্য স্কুল নেওয়ার কথা মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সব রকম সহযোগিতা করব।”

কোচবিহার জেলার ২৫টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে ইতিমধ্যেই ‘মডেল পোলিং স্টেশন’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ মেনে, জেলার প্রতিটি মহকুমা থেকে ৫টি করে স্কুলকে বাছা হয়েছে। কোচবিহারের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “গ্রাম থেকে দু’টি এবং শহর থেকে তিনটি স্কুলকে বেছে সেগুলিকে মডেল করা হচ্ছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী জানান, কমিশনের নির্দেশিকা মেনে মডেল বুথ তৈরির কাজ শুরু হবে। উদ্যোগী হয়েছে হুগলিও। ইতিমধ্যেই কমিশনের নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে নদিয়ায়। জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, “কমিশনের নির্দেশ আমরা পেয়েছি। জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত। মডেল কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’ নদিয়ার মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক কৌশিক রায় জানিয়েছেন, কমিশনের নির্দেশ এলে, তা চিহ্নিত স্কুলগুলির কাছে পৌঁছে দেবেন। ছোটরা কতটা উৎসাহ পায়, সেটাই দেখার।

মডেল কেন্দ্র কী

• ভোটারদের লাইনে থাকবে ছাউনি।

• বয়স্ক ও প্রসূতিদের জন্য থাকবে বিশ্রামাগার।

• বুথে থাকবে পর্যাপ্ত আলো, হাওয়া, জল কিংবা শৌচালয়ের ব্যবস্থা।

• মডেল ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির আয়তন হবে ন্যূনতম ২০ বর্গ মিটার।

• প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য ‘র‌্যাম্প’-এর ব্যবস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

election commission of india school student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE