Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সরকারের জমি চেয়েও পাচ্ছেন না শিল্পদ্যোগীরা

জমি আছে। জমি নেওয়ার জন্য মাঝারি শিল্পদ্যোগীও রয়েছেন। কিন্তু সরকারি আমলাদের উদাসীনতায় জমি বন্টনের ব্যবস্থাই করা যাচ্ছে না। রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যেরই ৩৭জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মালিকরা জমির বিষয়ে নিগমের থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। বিষয়টি জানানো হয়েছে দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথকেও।

দিবাকর রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৩
Share: Save:

জমি আছে। জমি নেওয়ার জন্য মাঝারি শিল্পদ্যোগীও রয়েছেন। কিন্তু সরকারি আমলাদের উদাসীনতায় জমি বন্টনের ব্যবস্থাই করা যাচ্ছে না। রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যেরই ৩৭জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মালিকরা জমির বিষয়ে নিগমের থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। বিষয়টি জানানো হয়েছে দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথকেও। স্বপনবাবু বলেন, “আমি বিষয়টি জানি। নিগমের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যত শীঘ্র সম্ভব এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রাজ্যে বড় শিল্পে বিনিয়োগ সেভাবে না আসায় গ্রামীণ এলাকায় শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন নিগমের তরফে বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করেছে। নিগমের পরিকল্পনা ছিল, রাজ্যের সাতটি এলাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩১৫ একর জমিতে ওই পরিকাঠামো তৈরি করে ক্ষুদ্র শিল্পদ্যোগীদের দেওয়ার কথা ছিল। আরও পাঁচটি এলাকায় পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে।

নবান্ন সূত্রে খবর, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত জমির জন্য রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন নিগমের কাছে ৩৭টি আবেদন জমা পড়েছে। বাউড়িয়া এবং আমবাড়ি-ফালাকাটা শিল্পতালুকে আবেদন সবচেয়ে বেশি পড়েছে। রেজিনগর, খড়্গপুর, বোলপুর, কল্যাণী, অশোকনগর, ফালাকাট, ইসলামপুর এবং দুর্গাপুরের শিল্পতালুকগুলিতেও জমি নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন শিল্পোদ্যোগীরা। ফার্মাসিউটিক্যালস, বেকারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, এমন নানা শিল্পের আবেদন করা হয়েছে।

বাউড়িয়াতে জমির জন্য আবেদন করেছেন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থার মালিক অশোক অগ্রবাল। তিনি বলেন, “মাস ছ’য়েক আগে জমির জন্য আবেদন করেছিলাম। নিয়ম মেনে সমস্ত কিছু কাগজপত্র জমাও দিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিগম থেকে কোনও ডাক পাইনি। অন্য কোথাও জমি নিতে পারছি না। কেননা পরিকাঠামোর দিক থেকে নিগম বেশ কিছু সুবিধা দেবে বলে জানিয়েছে।”

কিন্তু কেন নিগম ডাকেনি? রাজ্য ক্ষু্দ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচি বলে, “বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলব না। তবে সমস্যার কথা দফতরের মন্ত্রীকে জানিয়েছি।” নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পারভেজ আখতারও বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে এ সব নিয়ে কিছু বলব না।” কিন্তু দফতরের কর্মীদের একাংশেরই বক্তব্য, আবেদনকারীদের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন না নিগমের শীর্ষস্থানীয়রা। “যাঁরা জমির জন্য আবেদন করেছেন তাঁরা বারবার এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কিন্তু কর্তাদের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না,” জানান এক কর্মী।

তবে নতুন নতুন শিল্প পার্কের পরিকল্পনা আটকে নেই। নিগম সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, বীরভূমের বোলপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর, বাঁকুড়ার বড়জোড়া, বর্ধমানের বড়শূল, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর এবং জলপাইগুড়ির ডাবগ্রামে শিল্প পার্ক গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়াও মুর্শিদাবাদের রেজিনগর এবং জলপাইগুড়ির আমবাড়ি-ফালাকাটা এলাকার শিল্পতালুকে জায়গা দেওয়ার জন্য শিল্পদ্যোগীদের কাছ থেকে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হবে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে নিগমের। ওই পরিকাঠামোতে প্রায় ৩২০০ ছোট ও মাঝারি শিল্প ইউনিট জায়গা পেতে পারে।

কিন্তু যে গতিতে নিগম কাজ করছে তাতে রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dibakar roy government land
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE