বর্ষীয়ান শিক্ষক মজিবুর রহমান আগে গ্রামের মানী ব্যক্তি ছিলেন। নিজে দু’বার হজে গিয়েছেন। মেজ ছেলে শাহনুর ছিল জনপ্রিয় ‘ডাক্তার’। সেজো ছেলে জাকারিয়া ধর্মপ্রাণ। শাহনুরের স্ত্রী ছিল মাদ্রাসার শিক্ষিকা। কিন্তু বর্ধমান বিস্ফোরণের পরেই সব ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে মজিবুর সাহাবের পরিবারে। জাকারিয়া ও সুজানা পুলিশের জিম্মায়। শাহনুর ফেরার। দফায় দফায় বাড়িতে চলছে তল্লাশি। গ্রামবাসীদের কাছে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না মজিবুর সাহেব। তাই আজ তিনি প্রকাশ্যেই তাঁর ফেরার পুত্রকে আত্মসমর্পণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বরপেটা থেকে ধরা পড়া ৬ জামাত সদস্যকে আজ ফের ১৪ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠায় আদালত। শাহনুরের স্ত্রী ধরা পড়লেও পুলিশ এখনও শাহনুরকে ধরতে পারেনি। কেবল পুলিশ নয়, গ্রামের মানুষেরও চাপ বাড়ছে পরিবারের উপরে। অশীতিপর মজিবুর ফেরার ছেলের উদ্দেশে অনুরোধ করেছেন, “শাহনুর যেখানেই থাকো, আত্মসমর্পণ করে পরিবারের মুখ রক্ষা কর।”
গ্রামপ্রধান আবদুল রশিদকেও কয়েক দফা জেরা করেছে পুলিশ-এনআইএ। তিনি জানান, পুলিশের কাছে গ্রামের সন্দেহভাজন ছয় যুবকের ব্যাপারে সব তথ্য জমা দিয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে অন্তত দু’জন রাজ্যের বাইরের কোনও মাদ্রাসার সঙ্গে জড়িত। রশিদের কথায়, “আমরা শাহনুরের পরিবারের উপরেও চাপ দিচ্ছি। এই ঘটনায় গ্রামের সকলের সম্মান ধুলোয় মিশেছে। শাহনুরের হদিস পাওয়ার চেষ্টা করছি।”
এ দিকে, পুলিশের কাছে শাহনুরের পরিবার জানিয়েছিল স্ত্রী সুজানার হাত ধরেই শাহনুর জেহাদের পথে এসেছে। কিন্তু সুজানা জানিয়েছে, স্বামীই তাকে জেহাদের রাস্তায় টেনে এনেছিল। সে জানিয়েছে, ২০০২ সালে শাহনুর অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে পালায়। পরে মেয়েটির বাবা মেয়েকে ফেরত আনেন। শাহনুরকে এ জন্য ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। তার পর থেকেই শাহনুর পশ্চিমবঙ্গে যাতায়াত বাড়ায়। রাজ্যের যুবকদের সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় সে যেত। তার দাবি, বিয়ের পরে শাহনুরই সুজানাকে বর্ধমানের মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। গোয়েন্দারা এই তথ্যও খতিয়ে দেখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy