Advertisement
E-Paper

তুষার ঝড়ে বিপর্যস্ত আমেরিকা, ঘরবন্দি লক্ষাধিক

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে আশঙ্কা ছিলই। আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। প্রবল তুষার ঝড়ে বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্ব আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা। নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, বস্টন, কানেক্টিকাট, নিউ হ্যাম্পশায়ার, রোড আইল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস-সহ বিভিন্ন শহরে কাল রাত থেকেই জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে বিধ্বস্ত শহরগুলিতে গত দু’দিনে মোট সাড়ে ছ’হাজার উড়ান বাতিল হয়েছে। আটকে পড়েছেন লক্ষাধিক যাত্রী। শহরে শহরে বন্ধ রেল পরিষেবাও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৯

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে আশঙ্কা ছিলই। আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।

প্রবল তুষার ঝড়ে বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্ব আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা। নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, বস্টন, কানেক্টিকাট, নিউ হ্যাম্পশায়ার, রোড আইল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস-সহ বিভিন্ন শহরে কাল রাত থেকেই জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে বিধ্বস্ত শহরগুলিতে গত দু’দিনে মোট সাড়ে ছ’হাজার উড়ান বাতিল হয়েছে। আটকে পড়েছেন লক্ষাধিক যাত্রী। শহরে শহরে বন্ধ রেল পরিষেবাও। খুব প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষকে গাড়ি নিয়েও বেরোতে বারণ করছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে সপ্তাহের শুরুতে কাজের দিনে ঘরে বন্দি আমেরিকার কয়েক লক্ষ মানুষ। দু’দিনের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। ফলে কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর বরফের থেকে এখনই আমেরিকাবাসীর মুক্তি নেই।

কর্মব্যস্ত নিউ ইয়র্ক শহরের ভোল রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে। অর্ধেক মানুষ ঘরে বন্দি। শুধুমাত্র সেন্ট্রাল পার্কেই আজ সকালে প্রায় সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি পুরু বরফ জমেছে। আজকের মতো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতর। বন্ধ রাখা হয়েছে সব স্কুল-কলেজও। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মী ছাড়া সবাইকেই বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হচ্ছে। শহরের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো রাত এগারোটার পর গাড়ি চালানোর উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ১৩টি কাউন্টিকে আপাতত সেই নিয়ম মেনে চলতে হবে। না হলে জরিমানা দিতে হবে ৩০০ ডলার। কুয়োমোর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “রাত এগারোটার পরে আপনি যদি গাড়িতে থাকেন, তা হলে আপনি অপরাধ করছেন।” অ্যামট্র্যাক বন্ধ রেখেছে তাদের রেল পরিষেবা। নিউ ইয়র্ক থেকে বস্টনের সব ট্রেন ইতিমধ্যেই বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। বন্ধ মেট্রো পরিষেবাও। ২০১২ সালে স্যান্ড ঝড়ের সময় বন্ধ রাখতে হয়েছিল মেট্রো চলাচল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এর আগে শুধু বরফের জন্য কখনও বন্ধ থাকেনি নিউ ইয়র্কের মেট্রো। উপকূল এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকায় জারি করা হয়েছে সতর্কতা।

এই পরিস্থিতি যে আরও কয়েক দিন চলবে তা আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়ে দিয়েছে। সকলেরই চিন্তা এখন খাবার মজুত রাখার। তাই বিভিন্ন শহরে স্থানীয় খাবারের দোকানগুলিতে কাল থেকেই ব্যাপক লাইন। ম্যাসাচুসেটসের সমারভিলের দোকানগুলোয় কৌটো খাবার সব শেষ। মিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনের মুদিখানার দোকানের র্যাক থেকে নিমেষেই খালি হয়ে যাচ্ছে পাউরুটি, ডিম, দুধ। কানেক্টিকাটের বাসিন্দা মার্সি রিভার্স চার ঘণ্টা দোকানে লাইন দিয়ে বিরক্ত। এক সাংবাদিককে তিনি বললেন, “চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দুধ, ডিম কিছুই পেলাম না। জানি না এখন কী করব।” মার্সি একা নন। তাঁর মতো অসহায় অবস্থা আরও অনেকেরই।

তবে এত কিছুর মধ্যেও হাসি ফুটেছে বছর তেরোর অলিভার স্ট্রোলারের মুখে। নিউ জার্সির ম্যাপলউডের বাসিন্দা অলিভারের স্কুল কাল থেকে বন্ধ। “আমার পরীক্ষাটা এই সপ্তাহেই ছিল। তুষার ঝড়ের এটাই হল সৌন্দর্য”, বলেছে অলিভার। তবে অলিভারও একা নয়। হাসি মুখের তালিকাটাও নেহাত ছোট নয়।

new york avalanche
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy