Advertisement
২৭ জুলাই ২০২৪

তাইল্যান্ডের নাগরিকই নয় গুহায় আটকে পড়া ৪ জন

তাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকে পড়া ফুটবল দলটির কোচ এক্কাপল চান্টাওং-সহ তার তিন শিষ্য ডুল, মার্ক ও টি-এর নাগরিকত্বই নেই। পাসপোর্ট-ভিসা তো দূরের কথা। দেশের ঠিকানাহীন বাসিন্দা তারা। আশ্রয়হীন ভবঘুরে।

মৃত্যুঞ্জয়ী: চিয়াং রাইয়ের হাসপাতালে কিশোর ফুটবলাররা। বুধবার। ছবি: এএফপি।

মৃত্যুঞ্জয়ী: চিয়াং রাইয়ের হাসপাতালে কিশোর ফুটবলাররা। বুধবার। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ব্যাঙ্কক শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েই রেখেছিল ফিফা। কিন্তু রাশিয়া কেন, বিদেশে যাওয়াই তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকে পড়া ফুটবল দলটির কোচ এক্কাপল চান্টাওং-সহ তার তিন শিষ্য ডুল, মার্ক ও টি-এর নাগরিকত্বই নেই। পাসপোর্ট-ভিসা তো দূরের কথা। দেশের ঠিকানাহীন বাসিন্দা তারা। আশ্রয়হীন ভবঘুরে।

২৫ বছর বয়সি এক্কাপল এখন দেশের হিরো। ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে তাঁর ছেলেদের নামেও। গত কাল সবাইকে উদ্ধার করার পরে এক ডুবুরি যেমন বলেন, ‘‘ভাবা যায় না, এতগুলো দিন ওই পরিস্থিতিতে থেকেও ওরা কী শান্ত রয়েছে! কী ঠান্ডা মাথা। এত মনের জোর ওরা পেল কোথা থেকে!’’

সমস্ত কৃতিত্ব এক্কাপলকেই দিতে চান তাইল্যান্ডের মানুষ। তাঁদের কথায়, ‘‘ও শক্ত না থাকলে, এই অসাধ্য সাধন হত না।’’ ব্রিটিশ উদ্ধারকারী দল গুহায় ফুটবল দলের খোঁজ পাওয়ার আগে ন’টা দিন পাতালের অন্ধকারে কাটিয়ে ফেলেছিল তারা। ঘুম নেই, খাওয়া নেই, অন্ধকারে জলের উপরে জেগে থাকা চ্যাপ্টা পাথরে বসে কাটিয়ে দেওয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিনরাতের হিসেব নেই। কেউ আদৌ তাদের খুঁজতে আসবে কি না, তা-ও জানা নেই। শুধুই অপেক্ষা।

গত ৭ জুলাই এক্কাপলের উদ্দেশে চিঠি লিখেছিলেন মা-বাবারা, ‘‘নিজেকে দোষ দেবেন না। আমাদের ছেলেদের একটু দেখবেন, তা হলেই হবে।’’ জবাবে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে এক্কাপল জানান, তার পক্ষে যতটা সম্ভব, তিনি করবেন। গত ২৩ জুন দলের ছেলেদের নিয়ে ওই গুহায় ঢুকেছিলেন এক্কাপল। মঙ্গলবার সবার শেষে গুহা থেকে বেরোন তিনি।

স্কুলে পড়াকালীন সন্ন্যাসী হবেন বলে স্থির করেছিলেন এক্কাপল। কিন্তু পরে দিদিমার দেখাশোনা করতে সন্ন্যাসব্রত ছাড়েন। ফুটবল কোচ হন। তাদের ফুটবল ক্লাবের কর্তা নপারাত খানথাভং বলেন, ‘‘ছেলেগুলোর কাছে নাগরিকত্ব পাওয়া স্বপ্নের মতো। ওরা তো চিয়াং রাইয়ের বাইরে কোথাও খেলতে যেতে পারত না। সামনের মরসুমে ওদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া তো যাওয়া সম্ভব নয়।’’ তাইল্যান্ডে এমন বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ।

ছেলেদের বেরনোর খবরে খুশি তাইল্যান্ড। তবে এর মধ্যেই দুঃসংবাদ। অভিযানের শুরু থেকে শেষ অবধি প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যে অস্ট্রেলীয় চিকিৎসক হাজির ছিলেন, সেই রিচার্ড হ্যারিস গুহা থেকে বেরিয়েই শোনেন, তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। ভেবেছিলেন, ক’টা দিন তাইল্যান্ডে থেকে অভিযানের সাফল্য উপভোগ করবেন। দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE