ইরাক কিংবা সিরিয়ায় তৃতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় নিতে হবে আমেরিকাকেই। পঞ্চম ভিডিও প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ঠিক এমনই কড়া বার্তা দিল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)। সঙ্গে হুমকি, আমেরিকা তো নয়-ই, তাদের আটকানোর ক্ষমতা বিশ্বের কারও নেই।
এ বারের ভিডিওতেও আইএসের বার্তাবহ হিসেবে দেখা গিয়েছে পণবন্দি ব্রিটিশ সাংবাদিক জন ক্যান্টলিকে। বছর দু’য়েক আগে সিরিয়া থেকে অপহৃত এই সাংবাদিককে বলতে শোনা গিয়েছে, আফগানিস্তানের যুদ্ধ কিংবা ইরাকের হাত থেকে কুয়েত দখলের প্রেক্ষিতে যে পথে হেঁটেছিল আমেরিকা, আজও ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে ওবামা। তাই ফের উপসাগরীয় যুদ্ধ হলে, তার জন্য দায়ী মার্কিন প্রশাসন ও সেখানকার সংবাদমাধ্যমই।
জঙ্গি দমনের নামে পশ্চিমী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আগেই সোচ্চার হয়েছিল এই জঙ্গি সংগঠন। এ বার সরাসরি যুদ্ধের দায় ওবামা প্রশাসনের ঘাড়ে চাপালো আইএস।
অবশ্য জঙ্গিদের সাম্প্রতিক এই হুমকি বার্তায় ওবামা যে আদৌ ভাবিত নয়, তা বোঝাতেই ভিডিও প্রকাশের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আজ পাল্টা নিজেদের বক্তব্য পেশ করে পেন্টাগন। তাঁদের দাবি, মার্কিন সেনার ক্রমাগত বিমান হানার কারণেই কোবানি থেকে ক্রমশ পিছু হটছে আইএস। মাটি পোক্ত হচ্ছে কুর্দ সেনার। সূত্রের দাবি, গত দু’দিনে কোবানিতে আইএসের অন্তত ১৪টি ঘাঁটিতে হামলা করেছে মার্কিন সেনা। পাশাপাশি তাঁদের এও দাবি, ইরাকের রাজধানী বাগদাদকে আইএসের শক্ত ঘাঁটি মনে করারও কোনও কারণ নেই।
অথচ সূত্রের খবর, এ বার আকাশপথেও নিজেদের শক্তি বাড়াতে চাইছে আইএস। সিরিয়ার এক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, ইরাক থেকে যে সব বিমানচালক সম্প্রতি আইএসের দলে নাম লিখিয়েছে, জঙ্গিদের বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারাই। মনে করা হচ্ছে, অন্যান্য দেশ থেকে অপহৃত তিন-তিনটি যুদ্ধবিমান এই মুহূর্তে তাদের কব্জায় রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনটির প্রধান রামি আবদুলরহমান আজই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জঙ্গিরা মূলত আলেপ্পো-স্থিত সিরিয়া সামরিক বিমানঘাঁটি থেকেই যুদ্ধবিমান চালানো শিখছে। তাঁর দাবি, “প্রাক্তন ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনের সময় যাঁরা পাইলট ছিলেন, তাঁদের তত্ত্বাবধানেই জঙ্গিদের বিমান চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।” সিরিয়া প্রশাসন সূত্রের দাবি, জঙ্গিদের হাতে খুব সম্ভবত তাদেরই ঘাঁটি থেকে ছিনতাই করা মিগ ২১ অথবা মিগ ২৩ জাতীয় যুদ্ধবিমান রয়েছে। সিরিয়ার পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত আলেপ্পো আইএসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। সেখানে তো বটেই, একই রকম ভাবে ইরাকের বিভিন্ন এলাকাতেও নিজেদের শক্তি বাড়িয়েই চলেছে জঙ্গিরা। মার্কিন প্রশাসনের তরফে বাগদাদকে সুরক্ষিত তকমা দেওয়ার চেষ্টা হলেও। ইরাকের রাজধানী শহর লাগোয়া আল হুরিয়া এবং আল তালবিয়া সেতুর উপর গত কালই দু’টি গাড়িবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় হত অন্তত পাঁচ। আহত আরও ১৫। দু’টি ঘটনাতেই দায় স্বীকার করছে আইএস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy