ধুন্ধুমার: হাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জেরে জনতা-বাহিনী সংঘর্ষ। শুক্রবার ঢাকায়। পিটিআই
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার লেখক মুশতাক আহমেদ জেল হেফাজতে মারা যাওয়ার পরে হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের পাশাপাশি এই আইন বাতিল করার দাবিতে বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
সরকারের সমালোচক মুশতাক ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব গত বছর ৬ মে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তার পরে গ্রেফতার দেখিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘সোশ্যাল সাইটে পোস্টের মাধ্যমে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং গুজব ছড়িয়ে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া’র অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। গত ১০ বছরে ছ’বার মুশতাক এবং কবিরের জামিনের আর্জি খারিজ করা হয়। ২৩ তারিখে শেষ বার দু’জনে আদালতে আসেন। সেই সময়ে কার্টুনিস্ট কিশোর অভিযোগ করেন, গ্রেফতারের পরে শারীরিক নির্যাতন করেছিল পুলিশ। তা থেকে তৈরি ক্ষতে সংক্রমণ হওয়ায় খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায় কিশোরকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে জানানো হয়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা গিয়েছেন ৫৩ বছরের লেখক মুশতাক।
খবরটি ছড়াতেই রাতে এক দল ছাত্র ঢাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এ দিন সকাল থেকেই ছাত্ররা জমায়েত করে শাহবাগের মোড়ে। রাস্তা অবরোধ করা হয়। মিছিল হয় দেশের প্রায় প্রতিটি শহরে। বিকেলে বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং লেখকের গায়েবানা জানাজায় শাহবাগ চত্বরে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।
শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মানুষ। মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, “সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, লেখকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার, বিনা বিচারে আটকে রাখা, জামিন মঞ্জুর না-করা যেন রাষ্ট্রের নিত্য দিনের কাজে পরিণত হয়েছে। আদ্যন্ত অসাংবিধানিক এই আইন কোনও গণতান্ত্রিক দেশে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।” অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এই ঘটনাকে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপরে নির্লজ্জ আঘাত’ বলে বর্ণনা করেন। অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, “প্রমাণ হল এই আইন শুধু মুখের ভাষা নয়, প্রাণও কেড়ে নেয়। এক জন লেখক ছয় বার আবেদন করেও জামিন পান না। কিন্তু লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, খুনিদের ক্ষমা করে বিশেষ ব্যবস্থায় বিদেশ পাঠানো হয়।” মুশতাকের মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করে বিরোধী দল বিএনপি বলেছে, নির্যাতনেই লেখকের মৃত্যু হয়েছে। নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় কমিটি গড়ে এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, তদন্ত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy