‘অনহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ’— শেখানো হয়েছিল ‘হীরক রাজার দেশে’। চিনেও এক বিমান পরিষেবা সংস্থা কিছুটা একই রকমের নীতিশিক্ষা দিতে চাইছে তার কর্মীদের। তাদের বক্তব্য, ‘‘চাকরি বাঁচাতে চাইলে মেদ ঝরাতে হবে।’’
হাইনান এয়ারলাইন্স নামে চিনের একটি বিমান পরিবহণ সংস্থা সম্প্রতি তার মহিলা কর্মীদের একাংশের জন্য একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যে সমস্ত মহিলা কর্মী বিমানে পরিষেবা দেওয়ার কাজ করবেন, তাঁদের নির্দিষ্ট ওজনসীমা পেরোলে চলবে না। কর্মীর ওজন নির্ধারিত ওজনের থেকে ১০ শতাংশ বাড়লেই চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হবে তাঁকে। বিমান সংস্থার এই নতুন নীতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কোনও সংস্থা তার কর্মীদের আইনত কি এই নির্দেশ দিতে পারে?
হাইনান বিমান পরিবহণ সংস্থা অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থনে জানিয়েছে, পরিষেবা এবং ভাবমূর্তি যথাযথ রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণ নীতি জরুরি। সেই নীতি অনুযায়ী বিমান কর্মীর উচ্চতা (সেন্টিমিটারে) থেকে ১১০ বাদ দিলে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে, তত কেজি ওজন হতে হবে তাঁর। মূলত বিমানের ভিতরে পরিষেবা দেওয়া মহিলাকর্মীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য। এই ওজন বাড়লে তাঁদের বিমানের ভিতরের পরিষেবা থেকে সরিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তবে নতুন যে নীতি নিয়ে বিতর্ক, তাতে বলা হয়েছে যে সমস্ত মহিলা বিমানকর্মীর ওজন নির্ধারিত ওজনের থেকে ৫ শতাংশ বেশি হবে, তাদের কর্তৃপক্ষের রিভিউ কমিটির মুখোমুখি হতে হবে। তার যোগ্যতার বিশ্লেষণ করা হবে, কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করা হবে তাঁর। কিন্তু ওজন ১০ শতাংশ বেড়ে গেলে অবিলম্বে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হবে কর্মীকে।
হাইনানের এই নতুন নীতি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনেকেই জানিয়েছেন, কর্মীদের উপর এই ধরনের নীতি চাপিয়ে দিয়ে আদতে তাদের মর্যাদাহানি করছে সংস্থাটি। নান্দনিকতাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মানবিকতার অসম্মান করছে তারা।