ছবি: এপি।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে মায়ানমার থেকে সামরিক সাহায্য প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করল আমেরিকা। রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপরে মায়ানমারের সেনার অকথ্য নির্যাতনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
সোমবার মার্কিন বিদেশ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মায়ানমারের উপরে কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথাও ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন বিদেশ দফতরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সম্প্রতি যা চলছে, তা নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।’’ সামরিক সাহায্য তুলে নেওয়াকে এক রকম ‘শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবেই দেখছে আমেরিকা। তারা বলেছে, ‘‘এই হিংসার জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহি করতে হবে।’’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার জেরে ওয়াশিংটন ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়ে মায়ানমারের সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে সব রকম কেনাবেচা নিষিদ্ধ করেছে। এ বার সামরিক সাহায্য বন্ধ করা সেই অবস্থানকেই সুদৃঢ় করল। গত সপ্তাহেই মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন বলেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটের দায় মায়ানমারের সেনাবাহিনীর উপরেই বর্তায়।
তিনি বলেন, ‘‘ওখানে যে হিংসার খবর মিলেছে, সেটা গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে না।’’ তখনই তিনি খানিকটা ইঙ্গিত দেন, মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এর পরে মার্কিন অফিসাররা টিলারসনকে বোঝান, কী ভাবে রাখাইন প্রদেশে ‘জাতি নিধন’ (রাষ্ট্রপুঞ্জ এই ভাবেই ব্যাখ্যা করেছে) চলছে। তার পরেই মার্কিন বিদেশ দফতরের এই সিদ্ধান্ত।
বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রেও মায়ানমারের সেনার শীর্ষ স্তরের অফিসারদের উপরে চাপতে পারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আর্থিক নিষেধ প্রয়োগের কথাও ভেবেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা ছাড়াও মায়ানমার সরকার যে ভাবে রাখাইন প্রদেশে র অন্দরে সংবাদমাধ্যম ও রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য সংগ্রহকারীদের ঢুকতে বাধা দিচ্ছে, তা বন্ধ করার জন্যও চাপ দেবে আমেরিকা।
আগামী মাসের গোড়ায় এশিায়া সফরে মায়ানমারে যাওয়ার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তার আগে মায়ানমার প্রশাসনকে মার্কিন বিদেশ দফতরের হুঁশিয়ারি, ‘দেশে শান্তি ও সুরক্ষা ফেরাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা হোক। দুর্গতদের কাছে মানবিক পথে পৌঁছতে হবে। রাখাইন প্রদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন যাঁরা, নিরাপদে তাঁদের দেশে ফেরা সুনিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে তাঁদের মনের ভীতিও দূর করতে হবে। রোহিঙ্গাদের প্রতি এই বৈষম্যের মূল কারণ খুঁজে বার করে সমাধানের কথা ভাবতে হবে।’
তবে মায়ানমারের বিরুদ্ধে এত দিন আমেরিকা কেন সে ভাবে সক্রিয় হয়নি, তা নিয়েও সরব হয়েছেন কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy