Advertisement
E-Paper

দাড়িতে দাঁড়িয়ে কিউবা আজও

কাস্ত্রো নেই। তবে হাভানার রাস্তায় আজও দাড়িধারীদের ভিড়। তফাৎ একটাই। একদিন কিউবায় যে দাড়ি বিপ্লবের প্রতীক ছিল, তা আজ ‘স্টাইল স্টেটমন্ট’।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩০
দাড়ি দিয়ে যায় চেনা: পোস্টারে কাস্ত্রো ও ট্যাক্সিতে যুবক। ছবি: এএফপি

দাড়ি দিয়ে যায় চেনা: পোস্টারে কাস্ত্রো ও ট্যাক্সিতে যুবক। ছবি: এএফপি

চে গেভারা থেকে ফিদেল কাস্ত্রো, ক্যামিলো সিয়েনফুয়েগোস থেকে হালের রাজনীতিক র‌্যামিরো ভেলদেস— কিউবার বিপ্লবের ইতিহাসে দাড়ির উপস্থিতি দীর্ঘদিনের। কাস্ত্রো তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘এই দাড়ি আমার দেশের জন্য অনেক কিছু।’’ বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে দিন সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারব, সে দিন দাড়ি কেটে ফেলব।’’

কাস্ত্রো নেই। তবে হাভানার রাস্তায় আজও দাড়িধারীদের ভিড়। তফাৎ একটাই। একদিন কিউবায় যে দাড়ি বিপ্লবের প্রতীক ছিল, তা আজ ‘স্টাইল স্টেটমন্ট’। পুরনো হাভানার রুই ওবিস্পোয় কারুশিল্প সামগ্রীর দোকান চালান ২৪ বছরের ফ্রাঙ্কো মানসো। ফ্রাঙ্কোর কথায়, ‘‘দেখলাম, দাড়িটা আমায় দিব্যি মানিয়েছে, ফ্যাশনও হচ্ছে।’’ পেশায় নাপিত ৩১ বছরের ডেভিড গনজ়ালেজ়ও জানালেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দাড়ির চাহিদা ভালই।

এই দাড়ির কারণে কিন্তু এক দিন বিপদে পড়তে যাচ্ছিলেন কাস্ত্রো। সেটা ১৯৬০ সাল। তাঁর দাড়িকেই নিশানা করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। ঠিক হয়, কাস্ত্রোর জুতোয় রেখে দেওয়া হবে থ্যালিয়াম সালফেট। যাতে তাঁর সমস্ত দাড়ি খসে যায়, যাতে জনতার সামনে হাসির খোরাক হন কাস্ত্রো। যদিও সে বার বাতিল হয় কাস্ত্রোর বিদেশ সফর। ফলে দুরভিসন্ধিটা বাস্তবায়িত হয়নি।

কিউবার সাংবাদিক-লেখক ম্যানুয়েল সোমজ়া জানাচ্ছেন, কিউবার সংস্কৃতিতে দাড়ি বাড়বাড়ন্তের পিছনে কাস্ত্রোদের বৈপ্লবিক আবেদনের পাশাপাশি আরও কিছু কারণ রয়েছে। ১৯৫৯-এর আগে পর্যন্ত জিলেট রেজ়ারই জনপ্রিয় ছিল। ১৯৬২-তে কিউবার উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে জিলেট অমিল হয়ে যায়। দাড়ি রাখার প্রবণতা বাড়ার সে-ও একটা কারণ। সে সময় কিউবায় যে সব রেজ়ার পাওয়া যেত, তার ব্লেডের গুণগত মান ছিল অত্যন্ত খারাপ। যেমন চেকোশ্লোভিয়া থেকে আসত ‘ভেনসেরেমস’ (আমরা করব জয়) নামে একটি ব্র্যান্ডের ব্লেড। বাক্সে লেখা থাকত বিপ্লবী স্লোগান। কিউবায় সেই ব্লেড ‘পুরুষের কান্না’ বলেই বেশি পরিচিত ছিল। কারণ তা দিয়ে দাড়ি কামানো ছিল খুবই কষ্টকর। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে হু হু করে বাড়ে দাড়ি কামানোর ক্রিম ও ‘আফটার শেভ’-এর দামও। ফলে দাড়ি কামানোর ব্যাপারটাই জীবন থেকে বাদ দিয়ে দেন অনেকে।

আজকের প্রজন্ম অবশ্য ফ্যাশনের চাহিদা মেনেই দাড়িপ্রেমী। কিউবার সিনেমা ইনস্টিটিউটে কর্মরত বছর তেইশের অ্যালেন গিল যেমন জানালেন, বান্ধবীর আবদার মেটাতেই দাড়ি রেখেছেন তিনি। বান্ধবী নাকি বলেছেন, দাড়িতে অ্যালেনকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় দেখায়।

Cuba Fidel Castro Beard Che Guevara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy