যুবকের কাটা মাথা (ছবিতে যা কালো করে দেওয়া হয়েছে) হাতে তরুণীর এই ছবিই ছড়িয়েছে সোশ্যাল সাইটে।
এক যুবকের কাটা মাথা হাতে নিয়ে টুইটারে ছবি পোস্ট করলেন এক ব্রিটিশ তরুণী। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জেহাদি ওই তরুণীর পিছনে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছে দুই কিশোরও!
ত্রাণকর্মী ডেভিড হেইনসের মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও প্রকাশের পরের দিনই ফের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এই ছবি ছড়িয়ে পড়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, টুইটারে নিজেকে মুজাহিদা বিন্ত উসামা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণী ডাক্তারি পড়ছেন। আইএসআইএস-এ (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া) যোগ দিতে সম্প্রতি দেশ ছেড়েছেন। টুইটার অ্যাকাউন্টে নিজেকে আল-খানসা বাহিনীর চিকিৎসক বলে উল্লেখ করেছেন উসামা।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, উসামা বর্তমানে সিরিয়ার রাকায় রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের যুদ্ধ কায়েম রাখতে আইএসআইএস আল-খানসা ব্রিগেড নামে একটি মহিলা জঙ্গিবাহিনী তৈরি করেছে। যাদের কাজ জঙ্গি-সাম্রাজের মহিলাদের উপর নজর রাখা, যাতে ধর্মীয় অনুশাসনের বাইরে এক পা-ও না বাড়াতে পারেন গৃহবন্দি মহিলারা।
তাৎপর্যপূর্ণ, এই নারী বাহিনীর শীর্ষ সারির নেত্রীরা কেউই সিরিয়া বা ইরাকের বাসিন্দা নন। বেশিরভাগই ব্রিটেনের নাগরিক। লন্ডনের কিঙ্গস কলেজ সূত্রে এই খবরের সত্যতা স্বীকারও করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৬০ জন ব্রিটিশ মহিলা সিরিয়ায় জেহাদিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সকলেরই বয়স ১৮ থেকে ২৪। তাদের কারও স্কুল-কলেজের হদিস মেলেনি। অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে শনাক্ত করা ওই জেহাদিরা সকলেই বাড়িতে পড়াশোনা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সিরিয়ার জঙ্গি-রাজধানী রাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় কেউ পশ্চিমী জীবনযাপন করছে কি না, তার উপরেও নজর রাখছে খানসা বাহিনী। উসামা এই বাহিনীর এক জন শীর্ষ নেত্রী বলে দাবি করছেন গোয়েন্দারা।
মেলানি স্মিথ নামে কিঙ্গস কলেজের এক গবেষকের কথায়, “খানসা ব্রিগেড ফরাসি এবং ব্রিটিশ মহিলাদের নিয়েই তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে ব্রিটিশরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।” তিনি আরও জানিয়েছেন, মহিলা বাহিনী ছাড়াও প্রায় পাঁচশো ব্রিটিশ নাগরিক ইতিমধ্যেই সিরিয়ায় গিয়ে আইএসআইএস-এ সামিল হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ২০ বছরের গ্লাসগোর আকশা মাহমুদ, ম্যাঞ্চেস্টারের ১৬ বছরের যমজ দুই বোন জাহরা এবং সালমা হালেন, ২২ বছরের খাদিজা দারেরা। রয়েছেন স্যালি জোনস নামে ৪৫ বছরের এক মহিলাও।
এ দিকে, পশ্চিম এশিয়ায় জঙ্গি দৌরাত্ম্য রুখতে প্যারিসে আজ জরুরি বৈঠকে বসলেন ২০টি দেশের প্রতিনিধিরা। ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রক দফতরে ওই বৈঠকের শুরুতেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া অলাঁদ পশ্চিম এবং আরব দেশগুলিকে ‘স্পষ্ট, কঠোর এবং সততার সঙ্গে’ জঙ্গি মোকাবিলায় সমর্থনের আর্জি জানান। তিনি বলেন, “ইরাক প্রশাসনের লড়াই আমাদের সকলের লড়াই।” বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সেরগেই লভরভ, মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি, ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড। জঙ্গি বিরোধী এই লড়াইয়ে পশ্চিম এশিয়ায় বিমান হামলা চালানো হলেও স্থল অভিযান যে হবে না তা আজ স্পষ্ট করে দেন ফরাসি প্রেসিডেন্টও। জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএস-কে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যাপক বিমান হামলার আর্জি জানিয়েছেন ইরাকের প্রেসিডেন্ট ফাওদ মাসোমও।
প্রকাশিত ভিডিও-তে জেমস ফোলি, স্টিভেন সটলফ এবং ডেভিড হেইনসকে যে জঙ্গি হত্যা করছে, তাকে শনাক্ত করেছে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। জেহাদি জন নামে পরিচিত ওই জঙ্গির অবস্থান জানতে গোয়েন্দা সূত্রকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ভাবেও চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy