Advertisement
০২ মে ২০২৪
China

তাইওয়ানে নির্বাচনের পরেই চাপ বাড়াল চিন

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই সংঘাত সম্প্রতি তীব্র হয়েছে আরও। গত ১৩ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে তাইওয়ানে। নির্বাচনের আগে থেকেই চিনের উচ্চপদস্থ প্রশাসকেরা ঠারেঠোরে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের আপত্তি জানাচ্ছিলেন।

An image of Taiwan

তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরে তাইপেই শহরের কূটনৈতিক এলাকা থেকে উধাও নাউরুব পতাকা। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
তাইপেই শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০০
Share: Save:

প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম ভাগে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ান। দক্ষিণ-পূর্ব চিনের উপকূল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরত্ব তার। চিনের কাছে এই দ্বীপরাষ্ট্র তাদের নিজের অংশ, কখনও না কখনও যা জুড়ে যাবে। আর তাইওয়ানের বেশির ভাগ বাসিন্দা মনে করেন, তাইওয়ান সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং সার্বভৌম একটি দেশ। চিনের সঙ্গে এক হওয়ার কোনও ইচ্ছেই তাঁদের নেই।

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই সংঘাত সম্প্রতি তীব্র হয়েছে আরও। গত ১৩ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে তাইওয়ানে। নির্বাচনের আগে থেকেই চিনের উচ্চপদস্থ প্রশাসকেরা ঠারেঠোরে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের আপত্তি জানাচ্ছিলেন। বিশেষ করে, গণতন্ত্রকামী প্রার্থী উইলিয়াম লাই ছিং-কে তাঁদের একেবারেই পছন্দ ছিল না। চিনের অপছন্দ সত্ত্বেও তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গত শনিবার জিতেছেন লাই ছিং। ৪০.১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। আগামী ২০ মে থেকে দেশের কার্যভার গ্রহণ করবেন তিনি। তবে চিনের চোখে তিনি এক জন ‘বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী’।

লাই ছিংয়ের জয়ের পরে চিনের স্পষ্ট বক্তব্য, তাইওয়ান-চিন একত্রীকরণের পদক্ষেপে কোনও খামতি থাকবে না। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র কথায়, ‘‘তাইওয়ানের মানুষ যদি স্বাধীনতার কথা ভাবে, যদি চিনের এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চায়, তা হলে ইতিহাস ও আইন তাঁদের ক্ষমা করবে না। নির্বাচনের ফল যা-ই হোক না কেন, এটা স্বীকার করতেই হবে চিন ও তাইওয়ান আসলে এক দেশ।’ তাঁর কথায়, তাইওয়ান অতীতেও আলাদা কোনও দেশ ছিল না। ভবিষ্যতে তো হবেই না।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন প্রেসিডেন্ট লাই ছিংয়ের আগামী চার বছর বেশ কঠিন হতে চলেছে। তার কারণ, নির্বাচনে তিনি জিতলেও পার্লামেন্টে তাঁর দল ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি ১১টি আসন হারিয়েছে। ফলে, চিন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলি অত্যন্ত সাবধানে নিতে হবে লাই-কে। চিনের দাবি, লাইয়ের দল তাইওয়ানের সাধারণ নাগরিকের কথা ভাবে না।

নির্বাচনের পরে আজই তাইওয়ানের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এবং নতুন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই ছিং আমেরিকার একটি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানালেন। জো বাইডেনের প্রশাসনিক দফতরের তরফে বেসরকারি ভাবে ওই দলটিকে পাঠানো হয়েছে। সাইয়ের দাবি, এই প্রতিনিধিদের সফর এটাই স্পষ্ট করে যে, তাইওয়ান ও আমেরিকার সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। কালক্রমে তা আরও গভীর হবে। লাই ছিংকে অভিনন্দন জানানোর জন্য গত কালই আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে কটাক্ষ করেছে চিন। সেই প্রেক্ষিতে সাইয়ের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ দিকে, তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে চিনের সঙ্গে যোগ দিল প্রশান্ত মহাসাগরের আর এক দ্বীপরাষ্ট্র, নাউরু। দেশটির তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাইওয়ানকে আর আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে দেখছে না তারা। লাই ছিংয়ের জয়ের পরেই নাউরুর চিনের সঙ্গে হাত মেলানোয় নড়েচড়ে বসেছেতাইওয়ান প্রশাসন।

প্রশান্ত মহাসাগর যেন এক আদিগন্ত খেলার মাঠ। কূটনৈতিক ম্যাচে এখন টানটান উত্তেজনা চিন-তাইওয়ান শিবিরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Taiwan Taipei China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE