সিন্ধু নদীর পাড় ঘেঁষে অটক জেল। নদীর ও-পারে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের উপরে শেষ বড় শহর অটক। প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে অবস্থিত দুর্গের ন্যায় জেলে নওয়াজ় শরিফের মতো তাবড় রাজনীতিকেরা এক সময়ে বন্দি ছিলেন। দিন পাঁচেক হল এই ঠিকানাতেই রয়েছেন তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সূত্রের খবর আইনজীবীর কাছে ভেঙে পড়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, এখানে আর থাকতে পারছেন না। জেলের কুঠুরিতে দিনের বেলা মাছি ভনভন করে। রাতে বেরোয় বিষাক্ত পোকামাকড়।
গত শনিবার ইসলামাবাদ আদালত দোষী সাব্যস্ত করার পরই ৭০ বছর বয়সি প্রাক্তন ক্রিকেটার, পরবর্তী কালে রাজনীতিক হয়ে ওঠা ইমরানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান তাঁর আইনজীবীদের কাছে জানিয়েছেন, এই জেল থেকে অবিলম্বে বার করা হোক তাঁকে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাকে এখান থেকে বার করুন। আমি জেলে থাকতে চাই না।’’ তবে ইমরানের আইনজীবীরা এ কথা জানাননি। খবর বাইরে এসেছে জেল-সূত্রে।
সোমবার ইমরানের কৌঁসুলি নঈম হায়দার পানজোঠাকে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘‘ইমরান খুবই দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির জেল। পরিষেবা খুব খারাপ।’’ এ কথা অবশ্য প্রথম দিনই শোনা গিয়েছিল। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রস্তুত করা বিশেষ সেলে পাখা আছে, তবে বাতানুকূল যন্ত্র নেই। একই কুঠুরির মধ্যে এক দিকে বিছানা, অন্য দিকে শৌচাগার। টিভি তো নেই-ই, বাইরের খবরাখবর রাখার জন্য সংবাদপত্রও দেওয়া হচ্ছে না ইমরানকে। অন্ধকার কুঠুরিতে রাত নামলেই পোকামাকড় বেরোয়। পানজোঠা সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতেও নৈতিক জ্ঞান খোয়াতে রাজি নন ইমরান। তিনি যাবজ্জীবন সাজার জন্যেও তৈরি, কিন্তু দাসত্ব মানবেন না। কিন্তু অন্দরের খবর, বন্দিদশা থেকে মুক্তির আর্জি জানিয়ে আইনজীবীদের কাছে ভেঙে পড়েছেন ইমরান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)