ফাইল চিত্র।
ব্রেক্সিট ও চড়া সুরের জাতীয়তাবাদ ক্রমশ ভাঁজ বাড়াচ্ছে ব্রিটেনে বসবাসকারী ভারতীয়দের কপালে। আজ প্রকাশিত কনজারভেটিভ পার্টির ইস্তাহার ব্রিটেনে বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়াদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল। অভিবাসীদের সংখ্যা কমানোর লক্ষ্য নিয়েই যে ভবিষ্যতে এগোবেন টেরেসা, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এই ইস্তাহারে। কনজারভেটিভ নেত্রী বলেছেন, বিদেশি পড়ুয়াদের পড়াশোনা শেষ হলেই দেশ ছাড়তে হবে। কোনও পড়ুয়ার যদি আরও কিছু দিন থাকার দরকার হয়, আগামী দিনে অভিবাসী সংক্রান্ত কড়া শর্তের সঙ্গে মানানসই হলে তবেই তিনি এ দেশে থাকার অনুমতি পাবেন।
টেরেসা মে বৃহস্পতিবার যে ইস্তাহার প্রকাশ করলেন, আপাত ভাবে তাতে তেমন জনমোহিনী বার্তা নেই। ঝুলি উপুড় করে ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, লেবারের তুলনায় কনজারভেটিভ পার্টির ইস্তাহার অনেকটাই মাটিতে পা রেখে তৈরি করা। তবে দুই নেতা-নেত্রী একটি বিষয়ে একমত। দু’জনেই বলেছেন, সুবিধেভোগী একটি শ্রেণির জন্য নয়, দেশ সবার জন্য। টেরেসার বার্তা: ‘‘ব্রিটেনকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময়ে এগিয়ে আসুন আমার সঙ্গে। ব্রিটেনের জন্য লড়াই করার সময়ে আমার হাত শক্ত করুন।’’
টেরেসা গুরুত্ব দিয়েছেন পাঁচটি বিষয়ে: মজবুত অর্থনীতি, ব্রেক্সিটের ফল মোকাবিলা, সামাজিক বিভাজন নিয়ন্ত্রণ, বয়স্ক সমাজের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নিত্য পাল্টে যাওয়া প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগানো। ইয়র্কশায়ারের হ্যালিফ্যাক্সে আজ ইস্তাহার প্রকাশ করেন দেশের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী। কনজারভেটিভ এই নেত্রী দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের থেকে যে একটু আলাদা পথে হাঁটতে চান, বুঝিয়ে দেন সেটাও। নিজের দলের অতীতের থ্যাচারবাদী মতাদর্শ থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তা হলে মার্গারেট থ্যাচারের পরে টেরেসা মে-র মতাদর্শই এ বার দলে প্রাধান্য পাবে? প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। অর্থাৎ ‘থ্যাচার-ইজম’ থেকে ‘মে-ইজম’? তাতে টেরেসা বলেন, ‘‘মে-ইজম বলে কিছু নেই। রয়েছে শুধু ‘কনজারভেটিজম।’ যা দেশের জন্য এবং মানুষের জন্য কাজ করে।’’
ব্রেক্সিট প্রসঙ্গে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের জন্য সব চেয়ে উপযোগী মীমাংসার দিকেই হাঁটবেন বলে জানিয়েছেন টেরেসা। কিন্তু ইস্তাহারে শুনিয়ে রেখেছেন, কোনও চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও খোলা থাকছে।
পেনশনভোগীদের জন্য দুঃসংবাদ রয়েছে এই ইস্তাহারে। কোপ পড়তে পারে বার্ধক্য ভাতাতেও। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি সরকার ও জনতার মধ্যে ‘নতুন সংযোগ’ গড়ে তুলতে চান। স্কুলপড়ুয়াদের বিনামূল্যে দুপুরের খাবার বন্ধ করে তিনি সব প্রাথমিক পড়ুয়ার বিনামূল্যে প্রাতরাশের ব্যবস্থা করতে চান। লেবার পার্টির ইস্তাহারে শিক্ষার্থীদের ফি মকুব-সহ প্রতিশ্রুতির বন্যার কাছে কনজারভেটিভদের ইস্তাহার অনেকটাই ফিকে ঠেকেছে বিশ্লেষকদের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy