Advertisement
E-Paper

রানি-মেগান প্রচ্ছদে বিতর্ক

বিতর্কিত ওই ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২১ ০৬:০৫
শার্লি এবদোর সেই বিতর্কিত প্রচ্ছদ।

শার্লি এবদোর সেই বিতর্কিত প্রচ্ছদ।

মাটিতে পড়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের পুত্রবধূ মেগান মার্কল। তাঁর গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন স্বয়ং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ! মেগান বলছেন, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। মেগানের বাকিংহাম ছাড়ার কারণ এ ভাবে একটি ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করে ব্রিটেনবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েছে ফরাসি ব্যঙ্গ পত্রিকা শার্লি এবদো। ছবিটি তাদের নবতম সংখ্যার প্রচ্ছদ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

বিতর্কিত ওই ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের। গত বছর মে মাসে মিনিয়াপোলিসে মারা যান কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড। জাল নোট ছড়ানোর অভিযোগে প্রকাশ্যে তাঁর গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিলেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন। আট মিনিট ওই ভাবে থাকার পরে শ্বাসনালি ভেঙে মারা যান ফ্লয়েড। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল সেই ছবি। অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে শোনা গিয়েছিল ফ্লয়েডের শেষ আকুতি, ‘আই কান্ট ব্রিদ... শ্বাস নিতে পারছি না।’ সেই ঘটনার প্রতিবাদে আমেরিকা জুড়ে শুরু হয় জাতি ও বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে এক নতুন আন্দোলন, যার নাম ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’। সেই আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে ব্রিটেন-সহ ইউরোপ এবং বিশ্বের অন্য প্রান্তেও। কৃষ্ণাঙ্গ জীবনের সত্যিই যে মূল্য রয়েছে, সেই বার্তা দিয়ে সম্প্রতি জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারকে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করেছে মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিল। সেই ঘটনার সঙ্গে রানি ও মেগানের তুলনা টানা অনেকেই অসম্মানজনক এবং বাড়াবাড়ি বলে মনে করছেন।

সম্প্রতি ওপরা উইনফ্রের এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ব্রিটিশ রাজপুত্র হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান। ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অব সাসেক্স সে দিনের অনুষ্ঠানে বাকিংহাম ছাড়ার কারণ খোলাখুলি আলোচনা করেন। কৃষ্ণাঙ্গ মায়ের কন্যা এবং প্রাক্তন অভিনেত্রী মেগান জানান, রাজবাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসত। এমনকি মৃত্যুর ভাবনাও তাঁকে গ্রাস করেছিল। তাঁর হবু সন্তানের গায়ের রং কতটা কালো হতে পারে, সে বিষয়েও নাকি আলোচনা হত রাজপরিবারে। জাতিবিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষের এই গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরে রাজপরিবারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, বিষয়টি জানতে পেরে রানি মর্মাহত। তারা পারিবারিক ভাবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। হ্যারির দাদা উইলিয়াম অবশ্য জানিয়েছেন, ব্রিটিশ রাজপরিবার কোনও ভাবে জাতিবিদ্বেষী নয়। মেগানের সঙ্গে ঠিক কে বা কারা বিদ্বেষমূলক আচরণ করেছিলেন, তা খোলসা করে না-বললেও, সাক্ষাৎকারের পরে হ্যারি জানান, রানি এলিজাবেথ ও তাঁর স্বামী কখনও হ্যারি-মেগানের সন্তানের বিষয়ে কুমন্তব্য করেননি। রানির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভাল।

মেগানের সেই অভিযোগ আর জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ড শার্লি এবদোর মলাট-ছবিতে এক করে দেওয়া, অনেকের মতে ভুল এবং অনভিপ্রেত। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। অনেকের মতে, ঘটনা দু’টির অতিসরলীকরণ করা হয়েছে। এক নেট নাগরিকের টুইট, ‘জাতিবিদ্বেষ, অসম্মান আর অপরাধকে এক পংক্তিতে ফেলে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এই ধরনের বাক্‌স্বাধীনতার কথাই কি শার্লি এবদো বলে?’ ইসলাম ধর্মগুরুকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র ছাপানোর জেরে ২০১৫ সালে প্যারিসে এই পত্রিকার দফতরে হামলা হয়। গুলিতে নিহত হন ১২ জন শিল্পী ও কর্মী। তার পর থেকে নিরাপত্তার কারণে প্যারিসেরই কোনও গোপন জায়গা থেকে কাজ চালায় ফরাসি এই পত্রিকাটি।

Queen Elizabeth II
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy