Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
WHO

সংক্রমণ হলেও ‘ইমিউনিটি’র নিশ্চয়তা নেই: হু

ইতিমধ্যে সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দিয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠীর মধ্যে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার একটি তত্ত্ব বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:২২
Share: Save:

করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের দৌড়ে জোর ধাক্কা খেল ওষুধ নির্মাতা সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন। এক স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে তাদের সম্ভাব্য প্রতিষেধক প্রয়োগের পরে ‘অজানা অসুস্থতা’ দেখা দেওয়ায়, কোভিড-ভ্যাকসিন পরীক্ষা সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হচ্ছে।

অন্তত ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে সম্প্রতি ট্রায়াল চালাচ্ছিল জনসন অ্যান্ড জনসন। স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থাও চালু হয়েছিল। এক জনের অসুস্থতা ধরা পড়ার পরে আপাতত সে-সব বন্ধ। কী ধরনের অসুস্থতা তা নিয়ে খোলসা করা হয়নি। সংস্থার মতে, প্রতিষেধক পরীক্ষা সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এই ধরনের গবেষণায় কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছেন।

ভরসাযোগ্য করোনা ভ্যাকসিন এখনও হাতে পায়নি মানুষ। ইতিমধ্যে সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দিয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠীর মধ্যে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার একটি তত্ত্ব বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে বিষয়টি যে অবৈজ্ঞানিক এবং নীতিগত ভাবে ঠিক নয় তা জানিয়ে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সোমবার সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বলেছেন, ‘‘রোগ ছড়িয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরির পথে আমরা কখনও হাঁটেনি। প্রতিষেধক প্রয়োগের ক্ষেত্রে এই শব্দটা আমরা ব্যবহার করে থাকি। কোনও জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশকে প্রতিষেধক দিয়ে তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা হয়। রোগ ছড়িয়ে দিয়ে নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে আমরা এখনও তেমন কিছু জানি না। সংক্রমিতের দেহে প্রাথমিক ভাবে এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলেও, তার স্থায়িত্ব কত দিন, জানা নেই। অনেকেই দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হচ্ছেন।’’

গ্রেব্রিয়েসাসের মতে, এই তো সবে শুরু। আমাদের উপরে কোভিডের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব কী হতে চলেছে তা এখনও জানি না। তাই রোগ ছড়িয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি করার ভাবনা অনৈতিক। এই প্রসঙ্গে ‘আরোগ্য সেতু’র মতো অ্যাপ ব্যবহার করে ভারতে কী ভাবে সংক্রমণের ক্লাস্টার চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে, সেই উদাহরণও দেন তিনি।

মঙ্গলবার দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে প্রায় একই ধরনের তথ্য সামনে গিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বার কোভিড আক্রান্তের শরীরে আরও জটিল উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আমেরিকার নেভাডায় ২৫ বছরের এক যুবক ৪৮ দিনের মধ্যে দু’বার করোনা আক্রান্ত হন। ভাইরাস দুটির ধরন আলাদা হলেও তারা সার্স-কোভ-২ গোত্রের। প্রথম বার উপসর্গ তেমন না থাকলেও, দ্বিতীয় বার সংক্রমণের পরে তার অবস্থার খুবই অবনতি ঘটে। বেলজিয়াম, ইকুয়েডর, নেদারল্যান্ডস, হংকংয়েও এই ধরনের খবর মিলেছে।

শীতের শুরুতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মতো ব্রিটেনেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ উঠেছে। সংক্রমণের ঝুঁকির ভিত্তিতে ব্রিটেনকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার। লিভারপুল-সহ উত্তরের অংশটি সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যে সমস্ত বার-এ শুধুমাত্র মদ বিক্রি হয়, খাবার পরিবেশন করা হয় না, সেগুলি বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকছে জিম, পুল।

সহ প্রতিবেদন: শ্রাবণী বসু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WHO Herd immunity Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE