ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ত্রিদেশীয় সফরের শেষে সাউথ ব্লকের দাবি, সংক্ষিপ্ত হলেও সবচেয়ে কার্যকরী হয়েছে ফ্রান্সে ইমানুয়েল মাকরঁ-র সঙ্গে শীর্ষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। এক দিকে ইউক্রেন নিয়ে দীর্ঘ মতপার্থক্যের পরে প্যারিস, নয়াদিল্লির রাশিয়া সংক্রান্ত অবস্থান নিয়ে অনেকটাই সহিষ্ণু মনোভাব নিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত সহযোগিতায় অন্তরায় হবে না, এটা নিশ্চিত করা গিয়েছে। পাশাপাশি মাকরঁ তাঁর নতুন ইনিংসে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে বড় মাত্রায় সংযুক্ত হতে চাইছেন। এই কাজে তাঁর প্রধান ভরসা যে ভারত, তা দ্বিপাক্ষিক যৌথ বিবৃতির ছত্রে ছত্রে স্পষ্ট।
মোদী ও মাকরঁ-র বৈঠকের পরে ভারতের বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা জানিয়েছেন, “ইউক্রেন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে সুস্পষ্ট এবং বিস্তারিত বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। দুই নেতা এটাই মনে করছেন যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয় এবং সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। সহযোগিতার মাধ্যমে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। ইউক্রেন পরিস্থিতির সুদূরপ্রসারী ফল কী কী হতে পারে তা নিয়েও কথা হয়েছে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে। আলোচনা হয়েছে সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট, কৃষিক্ষেত্রে সারের অভাবের মতো বিষয়গুলিকে রোখা নিয়ে।” মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের কথাও বলা হয়েছে।
তবে ভারতের কাছে সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক লাভ, সাগরপথে ফ্রান্সের সহায়তার আগ্রহ বৃদ্ধি। ব্রিটেন, জার্মানির মতো ইউরোপের দেশগুলিও এই অঞ্চলে সহযোগিতার কথা বলেছে। তাদেরও আগ্রহ রয়েছে এই বিশাল বাণিজ্যমঞ্চে নিজেদের পণ্য এবং বিনিয়োগকে নিরাপদ ও মসৃণ করা। কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে তাদের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। ফ্রান্সের একাধিক দ্বীপ রয়েছে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। প্রায় পনেরো লক্ষ ফরাসি নাগরিকের বসবাস সেখানে। ওই দ্বীপাঞ্চলগুলিতে রয়েছে ফ্রান্সের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল।
ইউক্রেন যুদ্ধের পরে ইউরোপের সার্বিক নিরাপত্তা কাঠামোতে কিছুটা হলেও ঘুন ধরার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তখন প্রতিরক্ষা সমঝোতা, নৌসেনার সমন্বয়, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে ফ্রান্স-ভারতের নতুন উদ্যোগ দেখা যাবে, এমনটাই দাবি করছে সাউথ ব্লক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy