প্রতীকী ছবি।
গত ২৫ অক্টোবর সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিল দেশে। তার পরে গত ২১ নভেম্বর দেশের বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আবদাল্লা হামদককেই ফের প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্বহাল করার জন্য চুক্তি সই হয়।
এর প্রতিবাদে সুদানের সাধারণ মানুষ গত রবিবার রাজধানী খার্তুমে জড়ো হন বিক্ষোভ দেখাতে। সেখানেই অন্তত ১৩ জন মহিলা, সেনা ও পুলিশের হাতে ধর্ষিতা বা গণধর্ষিতা হয়েছেন বলে জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিক্ষোভ চলাকালীন সেনার অত্যাচারে সে দিন মৃত্যুও হয়েছে দুই আন্দোলনকারীর।
রবিবার প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। জমায়েত করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখানোই তাঁদের পরিকল্পনা ছিল বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে চলে আসে সেনা ও পুলিশ। নির্বিচারে মারধর চলতে থাকে। চলে গুলিও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত
দফতরের মুখপাত্র লিজ় থ্রসেল জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে মহিলা বিক্ষোভকারীরা যখন এ-দিক ও-দিক পালাচ্ছিলেন, তখনই তাঁদের কয়েক জনকে তুলে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন। তার পরে সেই মহিলাদের উপরে যৌন নিপীড়ন চালানো হয়। লিজ় থ্রসেলের কথায়, ‘‘বিক্ষোভকারীরা যেখানে জড়ো হয়েছিলেন, তার খুব কাছেই ওই ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটে। এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা থেকে স্পষ্ট, ওখানকার পুলিশ ও সেনাবাহিনী যা খুশি করতে পিছপা হয় না। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ জমায়েতে গুলি চালানোর ফলে তাঁরা ভয় পেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগটাই নিয়েছিল সেনা-পুলিশ।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘‘এই মারাত্মক অভিযোগের যাতে নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত হয়, আমরা সেটা চাই। ওই বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের উপরে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে বলেও আমরা শুনেছি। অযথা অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে সেখানে।’’
সুদানের চিকিৎসকদের একটি সংগঠন জানাচ্ছে, ওমদুরমান এলাকায় সে দিন এক বিক্ষোভকারীর মাথায় গুলি করা হয়। আর এক ব্যক্তিও পরে মারা যান। এই নিয়ে গত অক্টোবর থেকে চলতে থাকা বিক্ষোভের বলি হয়েছেন ৪৭ জন। এখনও পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ৩০০।
ধর্ষণ ও গণধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেনা নায়ক আবদেল ফতেহ আল-বুরহানের বক্তব্য, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র রক্ষা করতে সেনাবাহিনী নিজের কাজ করেছে।’’ যাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ, সেই প্রধানমন্ত্রী হামদক রবিবারের ঘটনা নিয়ে একটি কথাও বলেননি। তবে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বিক্ষোভ সামলাতে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাতেই নভেম্বরের চুক্তিতে সই করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy