E-Paper

শেষমেশ ‘হার’ মানল বিবিসি! পর্দায় ফিরছেন গ্যারি লিনেকার, আবার কটাক্ষ শরণার্থী নিয়ে

লিনেকারকে সরিয়ে দিতে বিবিসি-র অন্দরে চূড়ান্ত ঝামেলা শুরু হয়। সংস্থার ‘মূল্যবোধ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেক কর্মী। কিন্তু লিনেকারকে সরিয়ে দিতে বিবিসি-র অন্দরে চূড়ান্ত ঝামেলা শুরু হয়।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৪
A photograph of Gary Linekar

প্রাক্তন ব্রিটিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার ফাইল চিত্র।

চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হলেন বিবিসি কর্তৃপক্ষ। ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপক হিসেবে ফিরিয়ে আনা হল প্রাক্তন ব্রিটিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকারকে। বিবিসি-র ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভি বললেন, ‘‘বিবিসি-র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্যারি। আমি এ-ও জানি, ওঁর কাছে বিবিসি-র মূল্য কতটা। এ সপ্তাহে ওঁর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি।’’ বিবিসি-র ‘হার’ স্বীকারে উচ্ছ্বসিত লিনেকার। জানিয়েছেন, কাজে ফেরার অপেক্ষায় তিনিও। কিন্তু সেই সঙ্গে এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন, শরণার্থী নীতি বিষয়ে নিজের অবস্থানে তিনি অনড়। বলেছেন, ‘‘গত কয়েকটা দিন যত কঠিনই হোক না কেন, নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে পালানো, অনেক দূরের কোনও দেশে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেওয়ার সঙ্গে এর কোনও তুলনা হয় না।’’

সম্প্রতি নতুন শরণার্থী নীতি ঘোষণা করে একটি বিল পাশ হয়েছে ব্রিটেনে। সেই বিলের পক্ষে সওয়াল করে একটি ভিডিয়ো টুইট করেছিলেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান। লিখেছিলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে, আর না। এ রকম কোনও নৌকা করে এ দেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নারী-শিশু নির্বিশেষে।’ সুয়েলার সেই ভিডিয়ো রি-টুইট করে গত ৭ মার্চ লিনেকার টুইট করেছিলেন— ‘হে ঈশ্বর! এর থেকে ভয়াবহ আর কী হতে পারে!’ ’৩০ দশকের নাৎসি জার্মানির সঙ্গেও ব্রিটেনের তুলনা করেছিলেন তিনি। দাবি করেন, ইউরোপের বড় দেশগুলি যে সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়, তার তুলনায় ব্রিটেনে আশ্রয় পাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। লিনেকারের এই টুইট ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। বিবিসি তড়িঘড়ি জানিয়ে দেয়, সংস্থার নির্দেশিকার বিরোধী কাজ করেছেন লিনেকার। কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে পক্ষ নেওয়া উচিত হয়নি তাঁর। এর পরেই বিবিসি কর্তৃপক্ষ জানান, সামাজিক মাধ্যমে লিনেকারের মতামত তুলে ধরার বিষয়ে সংস্থা যত দিন তাঁর সঙ্গে সহমত না হচ্ছে, তত দিন ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থাপনাবন্ধ থাকছে।

কিন্তু লিনেকারকে সরিয়ে দিতে বিবিসি-র অন্দরে চূড়ান্ত ঝামেলা শুরু হয়। সংস্থার ‘মূল্যবোধ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেক কর্মী। অনেকে আবার সংস্থার চেয়ারম্যান রিচার্ড শার্প ও ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভির পদত্যাগ দাবি করেন। লিনেকারকে ছাড়া ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ সঞ্চালনা করতে অস্বীকার করেন তাঁর দুই সহ-উপস্থাপক অ্যালান শিয়ারার এবং ইয়ান রাইট। লিনেকারের জায়গায় অন্য কেউ কাজ করতে রাজি হননি। গত শনিবার কোনও উপস্থাপনা ছাড়াই ২০ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয় ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ অনুষ্ঠান। শনিবার বিকেল থেকে বিবিসি-র খেলা বিষয়ক অন্য বেশ কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপকেরাও লিনেকারকে সমর্থন করে তাঁদের অনুষ্ঠান করতে অস্বীকার করেন।

দু’দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হল বিবিসি। আজ লিনেকারকে ফিরিয়ে আনার কথা ঘোষণা করার পরেই প্রাক্তন ফুটবলার টুইট করেন, ‘‘শনিবার ম্যাচ অব দ্য ডে-র চেয়ারে বসার জন্য তর সইছে না।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘অদ্ভূত কতগুলো দিন গিয়েছে। আমি খুশি যে সময়টা পেরিয়ে এসেছি। যে অভাবনীয় সমর্থন পেয়েছি, বিশেষ করে সহকর্মীদের থেকে, তার জন্য আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অভূতপূর্ব একতা প্রদর্শন।’’

টিম ডেভির ব্যাখ্যা: ‘‘বিবিসি-র সোশ্যাল মিডিয়া নির্দেশিকায় কিছু ধূসর অংশ রয়েছে। তার জন্যই ধন্দ তৈরি হয়েছিল।’’ তাঁদের পরিষেবায় যে বিঘ্ন ঘটেছিল, তার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন ডেভি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gary Lineker BBC Former Footballer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy