E-Paper

খুনের এক মাস আগেই বেনামি ‘সতর্কবার্তা’ পেয়েছিল পুলিশ!

ইউরোপে যে সব দেশের বন্দুক আইন সবচেয়ে কড়া তার মধ্যে রয়েছে জার্মানি। সেখানে একমাত্র ২৫ বছরের ঊর্ধ্বেই বন্দুক রাখার আবেদন জানানো যায়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪৪
Kingdom Hall of Jehovah\'s Witnesses

‘জেহোবা উইটনেস সেন্টার’-এর বাইরে মৃতদের উদ্দেশে শোকজ্ঞাপন। ছবি: রয়টার্স।

তার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। ধর্মে আস্থাভাজনদের বিরুদ্ধে মনে বিশেষ বিদ্বেষ পুষে রেখেছে সে— জার্মানির হামবুর্গের এক গির্জায় সাত জনকে খুন করে আত্মঘাতী হওয়া বন্দুকবাজ ফিলিপ এফ-এর নামে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এমন একটি বেনামি চিঠি এসেছিল পুলিশের কাছে!

চিঠি পেয়ে গত মাসেই ফিলিপের বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। তবে সেই সময়ে পুলিশের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিল সে। সব কিছু খতিয়ে দেখে এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুলিশ আধিকারিকদের এক বারও মনে হয়নি যে, ফিলিপের কাছে থাকা লাইসেন্সওয়ালা বন্দুকটি কেড়ে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন রয়েছে। ফলে তাঁরা তা না-করেই সেখান থেকে ফিরে এসেছিলেন। শনিবার এই ঘটনার কথা প্রকাশ করা হয়েছে পুলিশের তরফেই।

বৃহস্পতিবার হামবুর্গের ‘জেহোবা উইটনেস সেন্টার’-এ এক ধর্মীয় সভা চলাকালীন বন্দুক হাতে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে মাস সাতেকের এক অন্তঃসত্ত্বার গর্ভস্থ শিশুর পাশাপাশি মোট সাত জনকে খুন করে আত্মঘাতী হওয়া আততায়ী যুবক ফিলিপের সম্পর্কে উঠে আসা এই নয়া তথ্য নাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনকে। যার প্রেক্ষিতে বন্দুক রাখা নিয়ে নয়া এবং আরও কড়া আইন আনার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে তারা। এমনটাই জানান সে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী।

যদিও ইউরোপে যে সব দেশের বন্দুক আইন সবচেয়ে কড়া তার মধ্যে রয়েছে জার্মানি। সেখানে একমাত্র ২৫ বছরের ঊর্ধ্বেই বন্দুক রাখার আবেদন জানানো যায়। পাশাপাশি লাইসেন্স পাওয়ার আগে আবেদনকারীর বিস্তারিত মানসিক পরীক্ষাও করা হয়।

এ দিন ছড়িয়ে পড়েছে হামলার সময়ের একটি ভিডিয়ো ফুটেজ। সেখানে দেখা গিয়েছে, প্রথমে জানলা দিয়ে গুলি ছোড়ে ওই বন্দুকবাজ। এর পরে ঝড়ের বেগে সভাস্থলের ভিতরে ঢুকে পড়ে সে। সেই সময়ে ভিতরে কমপক্ষে ১২ জন ছিলেন বলে দেখা যাচ্ছে ক্যামেরায়। প্রায় ৯টি ম্যাগাজ়িন গুলি ছোড়ার পরে নিজেকে গুলি করে ফিলিপ। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। গুলি চালানোর খবর পুলিশের কাছে পৌঁছয় স্থানীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ। এর মিনিট চারেকের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় তারা।

স্থানীয় সেনেটর অ্যান্ডি গ্রোটে বলেন, ‘‘পুলিশ তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করেছে বলে অনেকগুলি প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে। না হলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ত হয়তো।’’ হামবুর্গের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটা সবচেয়ে ‘ধিক্কারজনক অপরাধ’ বলেও দাবি করেন তিনি।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ফিলিপ আগে ওই ধর্মীয় সংগঠনটির সদস্য ছিল। তবে বেশ তিক্ততার মধ্যে দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে সে। যার জেরে সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ জন্মেছিল তার মনে। যার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, ফিলিপের নামে আসা ওই বেনামি চিঠিতেও। যেখানে লেখা ছিল, ‘ধর্মে আস্থা রাখা মানুষজনের বিরুদ্ধে মনে রাগ পুষে রেখেছে ফিলিপ। তার বিশেষ রাগ রয়েছে জেহোবা উইটনেসেসদের উপরে।’

এরই পাশাপাশি ওই চিঠিতে আরও দাবি করা হয়, ‘তার (ফিলিপের) হয়তো কোনও মানসিক সমস্যা রয়েছে। যদিও ডাক্তারি-ভাবে এখনও তা প্রমাণিত নয়।’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gunman Attack hamburg Germany

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy