Advertisement
E-Paper

ইঞ্চি ইঞ্চি করে ভারত এগোচ্ছে এনএসজির পথে, মনে করছে চিন

খুব ধীরে এনএসজি সদস্যপদ পাওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ মন্তব্য কোনও ভারতীয় কূটনীতিকের নয়। এ বক্তব্য চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমের। শেষ পর্যন্ত যদি ভারত এনএসজি-র (নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ) সদস্য হতে পারে তা হলে, দক্ষিণ এশিয়ায় পরমাণু শক্তির ভারসাম্য বিগড়ে যাবে বলেও মনে করছে বেজিং।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ১৮:৫৬

খুব ধীরে এনএসজি সদস্যপদ পাওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ মন্তব্য কোনও ভারতীয় কূটনীতিকের নয়। এ বক্তব্য চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমের। শেষ পর্যন্ত যদি ভারত এনএসজি-র (নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ) সদস্য হতে পারে তা হলে, দক্ষিণ এশিয়ায় পরমাণু শক্তির ভারসাম্য বিগড়ে যাবে বলেও মনে করছে বেজিং। কমিউনিস্ট সরকার পরিচালিত ট্যাবলয়েড দৈনিক গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ কথা লেখা হয়েছে।

ঠিক কী লেখা হয়েছে চিনের সরকারি কাগজে?

‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা, সুইৎজারল্যান্ড এবং মেক্সিকোর সমর্থন আদায় করার পর মনে হচ্ছে নয়াদিল্লি এনএসজিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির দিকে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে।’’

আরও লেখা হয়েছে, ‘‘গোটা বিশ্বে অসামরিক পারমাণবিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে যে সংগঠন, সেই এনএসজিতে ভারত ঢুকলে আম্তর্জাতিক ভাবে স্বীকার করে নেওয়া হবে যে ভারত একটি বৈধ পরমাণু শক্তিধর দেশ।’’

এর ফলে কী হবে, তাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে চিনের সরকারি কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে। লেখা হয়েছে যে, ভারত বৈধ পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর পরমাণু শক্তির অসামরিক ব্যবহারের জন্য পরমাণু জ্বালানি আরও সহজে ভারত আমদানি করতে পারবে। তাতে নিজের দেশের সঞ্চিত পরমাণু জ্বালানিকে ভারত সামরিক ব্যবহারের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। এতে চিনের সর্বক্ষণের মিত্র পাকিস্তানের কৌশলগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে। পাকিস্তান যদি ভারতের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে, তা হলে চিনের জাতীয় স্বার্থের পক্ষেও তা ক্ষতিকর হবে বলে প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে।

এনএসজিতে ভারতের প্রবেশের চেষ্টা নিয়ে চিনের কাগজে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তার শিরোনাম হল, ‘বেজিং কুড সাপোর্ট ইন্ডিয়া’স এনএসজি অ্যাকসেশন পাথ ইফ ইট প্লেজ বাই রুলস’। অর্থাৎ, এনএসজি-তে প্রবেশের যে চেষ্টা ভারত করছে তাকে চিন সমর্থন করতে পারে, যদি ভারত সব নিয়ম মেনে চলে।

কী সেই নিয়ম?

এনএসজি-তে এই মুহূর্তে যে ৪৮টি দেশ রয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই এনপিটি বা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করেছে। অর্থাৎ এই সব দেশ আর পরমাণু বোমা না বানাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। পৃথিবীতে পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রুখতেও তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারতও পরমাণু বোমা তৈরি করা বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য কোনও দেশকে পরমাণু প্রয়ুক্তি ভারত কোনও দিনই দেয় না। ফলে প্রসার ঘটানোরও প্রশ্ন নেই। কিন্তু এনপিটি সই করতে ভারত নারাজ। কারণ আমেরিকা, রাশিয়া বা চিনের মতো যেখানে নিজেদের অস্ত্রাগারে কয়েক হাজার করে পরমাণু বোমা মোতায়েন করে রেখেছে (সরকারি হিসেবে), সেখানে ভারতের অস্ত্রাগারে মাত্র ১১০টি। এই বৈষম্যমূলক পরিস্থিতিতে এনপিটি সই করা অর্থহীন বলে ভারত মনে করে।

আরও পড়ুন:

আজব আইন কাতারে! ধর্ষণের অভিযোগ করে নিজেই জেলে ডাচ তরুণী

চিন বার বার এই ইস্যুতেই জোর দিচ্ছে। এনপিটি সই না করা সত্ত্বেও ভারতকে যদি এনএসজি-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তা হলে পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বলে চিন দাবি করছে। এতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে বলেও বেজিং-এর দাবি। এ প্রসঙ্গে কয়েক দিন আগেই গ্লোবাল টাইমসে আর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তার কয়েক দিনের মধ্যেই দ্বিতীয় বার এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির ইস্যু নিয়ে চিনের সরকারি কাগজে বড়সড় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় আরও স্পষ্ট হল যে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত বেজিং।

কী করে ভারত এনএসজি সদস্যপদের দিকে অল্প অল্প করে এগোচ্ছে, তাও ব্যাখ্যা করেছে গ্লোবাল টাইমস। আমেরিকার এখন ভারতকে নিজের জোট শরিক ভাবতে শুরু করেছে বলে সেখানে লেখা হয়েছে। মার্কিন সক্রিয়তাতেই এখন বিভিন্ন দেশ ভারতের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে বলে চিন মনে করছে। যে নরেন্দ্র মোদীকে কয়েক বছর আগে আমেরিকা ভিসা দেয়নি, সেই মোদী গত দু’বছরে যত বার আমেরিকায় গিয়েছেন, অন্য কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি তত বার আমেরিকা এই সময়ের মধ্যে যাননি বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে চিনা কাগজে।

China Global Times India's NSG Bid Inching Closer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy