নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত মিলিন্দ মোরাগোড়া। ছবি সংগৃহীত।
চিনের জাহাজকে তাদের হাম্বানতোতা বিমানবন্দরে নোঙর করতে দেওয়া ঘিরে নয়াদিল্লির সঙ্গে তিক্ততা কমাতে সক্রিয় কলম্বো। আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত মিলিন্দ মোরাগোড়া বললেন, “এ বিষয়ে যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তখন দেশে নৈরাজ্য চলছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক স্তরে আলোচনাই হয়নি। ভারতের নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি হয়, এমন কিছু আমরা করব না। ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে নির্দিষ্ট নীতি কাঠামো তৈরি করব। এটাও দেখা হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।”
এর আগেই শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ‘ইউয়ান ওয়াং ফাইভ’ নামের ওই চিনা জাহাজটিকে বন্দরে নোঙর করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এই শর্তে যে এটি শ্রীলঙ্কার জলসীমায় কোনও গবেষণা চালাবে না। ভারতের মতে, চিনা জাহাজের লক্ষ্য ভারতীয় কার্যকলাপের উপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানো এবং এ কারণে তারা তীব্র আপত্তিও জানায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউয়ান ওয়াং ফাইভ চিনের সর্বাধুনিক স্পেস-ট্র্যাকিং জাহাজগুলির অন্যতম। ওই জাহাজ থেকে কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেট ও আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা সম্ভব।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, শ্রীলঙ্কার সুর নরম করার পিছনে রয়েছে তাদের বেহাল অর্থনীতি, চিনের ঋণ ফাঁদ এবং ভারতের পাশে দাঁড়ানো। তিন মাস আগে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন মিলিন্দ। তাঁর মাধ্যমে তৎকালীন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে বার্তা পাঠান, ভারত ইতিমধ্যেই যে ৩৫০ কোটি ডলার আর্থিক সাহায্য দিয়েছে, তার জন্য তাঁরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু তাঁদের দেশ এখন অভূতপূর্ব সঙ্কটের মুখোমুখি। তাঁদের আশা, ভারত আরও এক বার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।
মোরাগোড়া আজ বলেছেন, “দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দু’ভাগে ভাগ করছি আমরা। প্রথমটি পরিস্থিতির হাল ধরে একটু থিতু হওয়া। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। প্রথম ক্ষেত্রে দিল্লি আমাদের পাশে থেকেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্যও ভারতের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আশা করছি।” সৌর শক্তি, বিদ্যুৎ, বন্দর পরিচালনা, তেল শোধনাগারের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি ভারতের বিনিয়োগ চেয়েছেন। শ্রীলঙ্কার দূতের কথায়, “শুধু বিনিয়োগই নয়, ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সমন্বয়ের কথাও ভাবছি আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy