Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Nuclear Reactor

ভারতে ছ’টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাবে মার্কিন কোম্পানি, চুক্তিবদ্ধ দুই দেশ

ভারতে পরমাণু চুল্লি বানাতে দীর্ঘ দিন ধরেই উৎসাহ দেখাচ্ছিল মার্কিন কোম্পানি ওয়েস্টিংহাউস। যদিও আইনি জটিলতার কারণেই সেই উদ্যোগে তেমন গতি ছিল না।

আমেরিকার একটি পরমাণু চুল্লি। ফাইল চিত্র।

আমেরিকার একটি পরমাণু চুল্লি। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ১৩:৫১
Share: Save:

নিরাপত্তা এবং অসামরিক পরমাণু শক্তি উৎপাদনে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ভারতে ছ’টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করবে আমেরিকা। টানা দু’দিন বৈঠকের পর বুধবার ওয়াশিংটনে বিষয়টি নিয়ে একমত হয় দু’পক্ষই। তার পর দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে সামনে আনা হয় বিষয়টি।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতে এনার্জি সেক্টরে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্য দিকে এখন তেল কেনায় সারা পৃথিবীতে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হল ভারত। তাই ভারতকে পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লি-সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ বিক্রি করতে উৎসাহ ছিল আমেরিকারও। পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে তাই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে চুক্তিবদ্ধ হল দুই দেশ। ওয়াশিংটনে এই বৈঠকে হাজির ছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল এবং মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি আন্দ্রিয়া থম্পসন। যদিও যৌথ বিবৃতিতে ছ’টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করার কথা ছাড়া অন্য কিছু বলা হয়নি।

২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই ভারতের পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে ঢুকতে চাইছিল আমেরিকা। ২০১৬ সালে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কথা প্রথম জানানো হলেও তা আটকে ছিল আইনি জটিলতায়। ভারতের আইন অনুয়ায়ী, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনও দুর্ঘটনা হলে তার দায় নিতে হবে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র যে কোম্পানি বানাচ্ছে, তাদেরই। অন্য দিকে আমেরিকার দাবি ছিল, দুর্ঘটনার দায় নিতে হবে, যারা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তদারকি করবে তাদের। যদিও এই জটিলতার কী রফাসূত্র বেরিয়েছে, তা খোলসা করা হয়নি যৌথ বিবৃতিতে।

আরও পড়ুন: চিনের বাধা, নিরাপত্তা পরিষদে নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা গেল না মাসুদ আজহারকে

ভারতে পরমাণু চুল্লি বানাতে দীর্ঘ দিন ধরেই উৎসাহ দেখাচ্ছিল মার্কিন কোম্পানি ওয়েস্টিংহাউস। যদিও আইনি জটিলতার কারণেই সেই উদ্যোগে তেমন গতি ছিল না। ২০১৭ সালে আমেরিকার পরমাণু চুল্লিগুলি চালাতে গিয়ে বিপুল লোকসান করে দেউলিয়া হয়ে যায় এই কোম্পানি। গত বছরেই জাপানের তোশিবা-র কাছ থেকে এই কোম্পানিটি কিনে নেয় কানাডার ব্রুকফিল্ডস অ্যাসেট কোম্পানি। এর পরই ওয়েস্টিংহাউস নামের এই কোম্পানিকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয় মার্কিন সরকার। মার্কিন শক্তিমন্ত্রী রিক পেরি এই কোম্পানিকেই ভারতে পরমাণু চুল্লি বানাতে বরাত দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। তখন অন্ধ্রপ্রদেশে ছ’টি পরমাণু চুল্লি বানানোর কথা বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে লড়াই ফের পার্লামেন্টে

২০২৪ সালের মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন তিন গুণ করার পরিকল্পনা ভারতের। আমেরিকা ছাড়া ভারতে পরমাণু চুল্লি বানাতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে রাশিয়াও। গত অক্টোবরেই ভারতে আরও ছ’টি পরমাণু চুল্লি বানানোর কথা জানিয়েছিল নয়াদিল্লি এবং মস্কো। ভারত পরমাণু বিদ্যুতের পথে হাঁটলেও অধিকাংশ উন্নত দেশগুলি পরমাণু বিদ্যুতের পরিমাণ কমানোর পথে হাঁটছে। পরিবেশবিদদের দাবি, পরমাণু বিদ্যুতের বিপুল পরিমাণ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য সভ্যতার জন্য ক্ষতিকারক। পাশাপাশি, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে কোনও দুর্ঘটনা হলে যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা সামলানোর পরিকাঠামো বা প্রযুক্তি মানুষের হাতে নেই বলেও দাবি বিজ্ঞানীদের একাংশের।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE