Advertisement
১১ মে ২০২৪

বাণিজ্য, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষায় সৌদিকে পাশে চায় নয়াদিল্লি

মুসলিম গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে বাহরাইনের মতো সৌদি আরবও কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তীব্র ভারত-বিরোধিতা করে কার্যত পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেওয়ার পরে সৌদির তরফে ইসলামাবাদকে বলা হয়, এই নিয়ে আর স্বর না চড়াতে।

—ফাইল ছবি

—ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার রিয়াধ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়া ছাড়া সৌদির রাজা আবদুল্লা বিন আবদুলাজিজ আল সৌদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। দু’দেশের মধ্যে ‘স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কাউন্সিল’ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও হবে। ভারত ও সৌদির মধ্যে প্রতিরক্ষা সমঝোতা বাড়ানোর লক্ষ্যেও একটি চুক্তি সই হবে বলে জানানো হয়েছে।

মুসলিম গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে বাহরাইনের মতো সৌদি আরবও কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তীব্র ভারত-বিরোধিতা করে কার্যত পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেওয়ার পরে সৌদির তরফে ইসলামাবাদকে বলা হয়, এই নিয়ে আর স্বর না চড়াতে। এ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের সচিব টিএস তিরুমূর্তি বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে সৌদি আরব যথেষ্ট বিবেচনা দেখিয়েছে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পাকিস্তানের উপরেও পড়েছে।’’ কূটনৈতিক শিবিরের মতে, সৌদির এই অবস্থানের প্রথম ও প্রধান কারণ, ভারতের বিরাট বাজার। দিল্লির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো সৌদির আশু লক্ষ্যের মধ্যে পড়ে। পুলওয়ামা এবং উরি-কাণ্ডের পরে সবার আগে পাক মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাসবাদের ঘটনার নিন্দাও করেছিল রিয়াধ।

ইরান থেকে তেল আমদানি নিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে টানাপড়েন চলছে। ভারতের বিপুল শক্তি চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে সৌদি, এমনটাই জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। দু’দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার মধ্যে যৌথ উদ্যোগ নিয়েও চুক্তি চূড়ান্ত হবে। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরে সৌদি অ্যারামকো সংস্থা ঘোষণা করতে পারে যে, ভারত পেট্রোলিয়ামের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আগ্রহী তারা। একই সঙ্গে সৌদির আর একটি সংস্থা আল জেরি ভারতের কোনও সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে পেট্রল পাম্প খোলার কথাও ঘোষণা করতে পারে। তা ছাড়া, ভারতের ‘স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজ়ার্ভ’ নিয়ে দু’দেশের চুক্তিও হতে পারে।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য করার জন্য আগ্রহী সৌদি কিছুটা হলেও ভারতের মুখাপেক্ষী। তিরুমূর্তি বলেন, ‘‘ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সৌদির নৌ-সেনা আছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে এই অঞ্চলটিতে যৌথ ভাবে কাজ করার প্রশ্নে জোর দেওয়া হবে। দু’দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তির এটি একটি বড় দিক।’’

সৌদির সঙ্গে নতুন যে ব্যবস্থাটি তৈরি হচ্ছে (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কাউন্সিল) তার শীর্ষে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ও সৌদির যুবরাজ। তার নীচে থাকবেন ভারত-সৌদির বিদেশমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীরা। তাঁদের নিয়ে তৈরি হবে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিয়োগ এবং নতুন নতুন যৌথ উদ্যোগ তৈরি করাটাই হবে এই কাউন্সিলের কাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India Saudi Arabia Oil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE