বাইরের কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে (পাকিস্তান) সংঘাতের প্রশ্নে অথবা নিজেদের সুরক্ষাকে আপৎকালীন ভিত্তিতে কিছুটা উন্নত করে নেওয়ার ক্ষেত্রে বারবার ভারত যে দু’টি রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী থেকেছে, তা হল রাশিয়া এবং ইজ়রায়েল। এ বার পহেলগাম কাণ্ডের পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জামের আয়োজন করতে গিয়ে এই দু’টি দেশের দ্বার স্বাভাবিক ভাবেই আগের মতো অবারিত নয় আর। রাশিয়া এবং ইজ়রায়েল নিজেদের ঘরের দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ নিয়ে এতটাই ব্যতিব্যস্ত যে তারা অন্য দেশকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো বা প্রয়োজনীয় সহায়তা করার জায়গায় নেই বলেই কূটনৈতিক সূত্রের খবর।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া সফর বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ৯ মে ‘বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ’ রয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয়। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন মোদী। তবে বুধবার রাশিয়া জানিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মোদীর বদলে রাশিয়ার ওই অনুষ্ঠানে ভারতের তরফে থাকতে পারেন কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি।
এটা ঠিকই যে পহেলগামের হামলার পরে দু’টি দেশই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ভারতে ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত রুভেন আজ়ারের দাবি, গত বছরে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যে ভাবে তাঁদের দেশে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল, তার সঙ্গে মিল আছে জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গি হানার। তাঁর কথায়, ‘‘পহেলগামে জঙ্গি হানার সঙ্গে অনেক মিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইজ়রায়েলে হানার। পহেলগামে ছুটির আনন্দ করছিলেন পর্যটকেরা। আর ২০২৩ সালে ইজ়রায়েলে গানের জলসায় আনন্দ করছিলেন দর্শকেরা। তখন হামলা করেছিল হামাস।’’
কিন্তু এর পরে আর ভারতীয় সেনার সঙ্গে ইজ়রায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও সমন্বয় ঘটেছে বলে খবর নেই। সে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা যা তাতে সেটা সম্ভবও
নয় এখন।
অন্য দিকে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ হবে, এ রকম আশা তৈরি হচ্ছে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিন দিনের জন্য সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছে তারা। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ৭-৮ মে মধ্যরাত থেকে ১০-১১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। এর পরে পাকাপাকি ভাবে যুদ্ধ বন্ধের জন্য দফায় দফায় বৈঠক করছে আমেরিকা। তবে যুদ্ধ বন্ধ হলেও আগামী তিন মাস মস্কো নতুন করে অস্ত্র সরবরাহ জায়গায় নেই কোনও রাষ্ট্রকেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)