সোমবার ইজরায়েলি হানায় প্রাণ হারিয়েছে তিন বছরের ছোট্ট কামাল। গুরুতর আহত মা দুয়াও। ইচ্ছে ছিল শেষ বারের মতো ছেলে কামালকে এক বার ছুঁয়ে দেখার। মঙ্গলবার সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই ছেলের দেহ আনা হয়েছে গাজার হাসপাতালে। ছবি: এপি
আন্তর্জাতিক চাপের কাছে শেষে নতি স্বীকার করল ইজরায়েল। মিশরের প্রস্তাব মেনে আজ গাজায় ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণার পাশাপাশি ইতিমধ্যেই গাজা ভূখণ্ড থেকে সেনাও সরিয়ে নিচ্ছে ‘ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স’ (আইডিএফ)। প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসও এই বিরতিতে সায় দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র জেনারেল মোতি আলমোজ বলেন, “আমাদের অনেক বাহিনী এখনও গাজায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তবে তাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” যদিও ফের হামলার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না প্যালেস্তাইনের সর্বহারারা। বিশেষত, গত কয়েকটি সংঘর্ষ বিরতি এবং তা লঙ্ঘন করে বোমাবর্ষণের ঘটনায় বিরতিতে আস্থা হারিয়েছেন সেখানকার ঘরছাড়ারা। আজ সকালে সংঘর্ষ বিরতি শুরুর ঘণ্টা খানেক আগেও হামাস-আইডিএফের লড়াই অব্যাহত ছিল।
আইডিএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট পিটার লার্নার আজ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পিছু না হটার হুঁশিয়ারির দিন কয়েকের মধ্যেই গাজা থেকে সেনা সরানো একেবারেই তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথা নোয়ানোর প্রসঙ্গ উড়িয়ে তিনি জানিয়েছেন, হামাসের প্রায় সব ক’টি সুড়ঙ্গ ইতিমধ্যেই ধ্বংস করে ফেলেছে ইজরায়েলি সেনা। সেই সুবাদেই গাজা-ত্যাগ।
প্যালেস্তাইনি প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলি হামলায় ১৮৩৪ জন নিহত হয়েছেন। আইডিএফ জানিয়েছে, ৯০০ জন জঙ্গিকে খতম করার পাশাপাশি ৩২টি সুড়ঙ্গ নষ্ট করেছে আইডিএফ। জঙ্গিদের হাজার তিনেক রকেট নিষ্ক্রিয় করে জঙ্গিবিরোধী লড়াইয়ে সেনা হামাসকে বড় ধাক্কা দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন পিটার। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রীর কথা মেনে লক্ষ্যপূরণের পরেই সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইজরায়েল।
তবে নতুন করে আক্রমণ না করলেও গাজার উপরে নজরদারি যে চলবেই তা নিয়ে ধোঁয়াশা রাখছে না ইজরায়েল। নজরদারির পাশাপাশি তারা যে ইজরায়েলের সীমান্তের মধ্যে থেকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে তাও জানিয়েছে আইডিএফ।
গাজায় ৭২ ঘণ্টার এই বিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইরানের মদতপুষ্ট প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠীকে ইজরায়েলি হামলা প্রতিহত করতে তেহরান অস্ত্র সাহায্য করেছে বলে আজ জানিয়েছেন ইরানের এক প্রশাসনিক কর্তা। অস্ত্রের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটি বিশেষ প্রযুক্তিও হামাসকে যুদ্ধের সময়ে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ইরানের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন মোশেন রাজেই নামে ওই আধিকারিক। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষ থামলেও লড়াইয়ের প্রকোপ থেকে এখনও বেরোতে পারেনি গাজা। বিদ্যুৎহীন শহরে এখনও পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে।
আগামী দু’দিন অস্ত্রের আওয়াজ ঘুম ভাঙাবে না, সেটা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না গাজার বিধ্বস্ত বাসিন্দারা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy