বরিস কোন্দ্রাশিন। ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
স্কুলে পড়ার সময়েই এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি। এক সহপাঠীকে খুন করে তার রক্ত খেয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর তাঁকে পাঠানো হয়েছিল একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। প্রায় এক দশক কাটিয়ে সেখান থেকে ফেরার পর এ বার ধরা পড়লেন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে একটি হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার দায়ে।
রাশিয়ার চেলিয়াবিনক্সের ইউরাল্স শহরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বরিস কোন্দ্রাশিন। ৩৬ বছর বয়সী বরিস ডাক্তারির ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে গত নভেম্বর থেকে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছিলেন একটি হাসপাতালে।
রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে, ১৯৯৮ সালে কিশোর বয়সে বরিস তাঁর স্কুলের ১৬ বছর বয়সী সহপাঠীকে খুন করেন। তার পর একটি ধর্মীয় প্রথা মেনে স্কুলের সেই বন্ধুর রক্ত খেয়েছিলেন বরিস। একটি নিউজ ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, বরিস নাকি নিজেকে ‘ভ্যাম্পায়ার’ মনে করেন! ২০০০ সালের অগস্টে জানা যায়, বরিস ভুগছেন বিশেষ ধরনের একটি মানসিক রোগে। যার নাম- ‘হোমিসাইডাল স্কিজোফ্রেনিয়া’। বরিসের কাণ্ডকে আদালত ‘বিশেষ গুরুতর অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে মানসিক চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দেয়। সেই মতো বরিসকে ভর্তি করানো হয় একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কী করছেন, কী ভাবছেন, বরিস ওই সময় তা বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। প্রায় এক দশক কাটানোর পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁদ, আমেরিকায় ধৃত ১২৯ ভারতীয় পড়ুয়া
আরও পড়ুন- খাগড়াগড় কাণ্ডে কেরল থেকে গ্রেফতার আরও এক জেএমবি জঙ্গি
সেই বরিস কী ভাবে হাসপাতালের চিকিৎসকের চাকরি পেলেন, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে।
শহরের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান নাতালিয়া গার্লোভা জানান, মেডিক্যাল প্রতিরোধ বিভাগে চেলিয়াবিনক্স শহরের ১১ নম্বর হাসপাতালের প্রাথমিক চিকিৎসক হিসেবে বরিসকে নিয়োগ করা হয়। ওই হাসপাতালে তাঁর কাজ ছিল মানুষকে মদ খাওয়া বা ধূমপান করার সমস্যা নিয়ে এবং ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে বোঝানো ও সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
ইন্টারফ্যাকস নিউজ এজেন্সি জানাচ্ছে, বরিসকে জানুয়ারিতেই আটক করা হয়েছিল। গার্লোভা বলছেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরিসের ডিগ্রির সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার পরেই তাঁকে বরখাস্ত করে।’’
বরিসের পুরনো প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তাঁরা কেউই জানতেন না, তিনি চাকরি পেয়েছেন। বরিস শুধুই হাই স্কুল পাশ করেছিলেন।
গার্লোভা বলছেন, ‘‘মানুষকে বিপদে ফেলার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই জেনেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। তবে তার পরেও বরিসকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই রাখা উচিত ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy