Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Protest

মায়ানমারে ফের চলল গুলি, নিহত ৭ বিক্ষুব্ধ

নেট-নাগরিকদের একাংশ আজ সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন, কাল ইয়াঙ্গনে রাতের অন্ধকারে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।

মোমের আলোয়: সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্না। শনিবার ইয়াঙ্গনে। পিটিআই।

মোমের আলোয়: সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্না। শনিবার ইয়াঙ্গনে। পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীদের মৃত্যুমিছিল অব্যাহত মায়ানমারে। আজ নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ফের মৃত্যু হয়েছে সাত জন বিক্ষোভকারীর। মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশে সেনা শাসন চালু হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৯০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগেরই বয়স পঁচিশের নীচে।

আজ নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে ম্যান্ডালে শহর ও কাচিন প্রদেশে। ম্যান্ডালেতেই মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে আজই চার জনের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেনা-বিরোধী শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আজ গুলিতে অনেক বিক্ষোভকারী গুরুতর আহত হয়েছেন। ফলে নিহতের সংখ্যা বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

নেট-নাগরিকদের একাংশ আজ সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন, কাল ইয়াঙ্গনে রাতের অন্ধকারে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। রাতের কার্ফু উপেক্ষা করে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে বেরোলেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গুলি করছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। আজও ইয়াঙ্গনে সেনার অত্যাচারের প্রতিবাদে রাত আটটার পরে কার্ফু উপেক্ষা করে মোমবাতি মিছিলে অংশ নেন বহু মানুষ। বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে রাতে সেনা-পুলিশের সশস্ত্র তল্লাশি অভিযান বেড়েছে। বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু বিক্ষোভকারীকে তুলে নিয়ে আসার অভিযোগ উঠছে।

এর মধ্যেই ম্যান্ডালে থেকে কাচিন যাওয়ার রাস্তায় একটি রেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, রেলকর্মীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে এ কাজ করেছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। এর ফলে দ্রুত ওই রুটে রেল পরিষেবা চালু করাও এখন সম্ভব হবে না।

মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক বার নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন। এ বার আপাতত অস্থায়ী ভাবে আমেরিকায় বসবাসকারী মায়ানমারের নাগরিকদের সে দেশে থাকার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকান প্রশাসন। হোমল্যান্ড সিকিওরিটির সচিব আলেহান্দ্রো মায়োরকাস জানিয়েছেন, মায়ানমারের বাসিন্দারা আগামী ১৮ মাস সেখানে বৈধ ভাবে থাকতে পারবেন। মায়োরকাসের কথায়, ‘‘ফেরার সময় এটা নয়।’’

এ দিকে, মায়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা চার রাজ্যকে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক করেছে পড়শি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। রাজ্যগুলি হল মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও অরুণাচলপ্রদেশ। কিছু দিন আগেই মিজোরাম প্রশাসন জানিয়েছিল, মায়ানমারের মোট ১৬ জন নাগরিক সীমান্ত পেরিয়ে তাদের রাজ্যে প্রবেশ করেছেন। এঁদের মধ্যে ১১ জন পুলিশ কর্মী, যাঁরা এখনকার সেনা শাসনের ঘোরতর বিরোধী। মায়ানমার সেনা এঁদের ফেরত পাঠানোর অনুরোধও জানিয়ে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে বাকি তিন রাজ্যকেও সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কারণ সীমান্ত লাগোয়া এই চার রাজ্যেই রাতের অন্ধকারে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে বলে সম্প্রতি জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলিকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ভারতের মোট চারটি রাজ্যের সঙ্গে মায়ানমারের ১,৬৪৩ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত রয়েছে, যার বেশির ভাগটাই অরক্ষিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE