
ইজ়রায়েলে রবিবার ইরানের হামলা। ছবি: রয়টার্স।
ফের ইরানের পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আইডিএফ-এর দাবি, রবিবার ইরানের ইয়াজ়দ, বুশেহর, ইসফাহান এবং আহভাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ওই এলাকায় ইরানের স্ট্র্যাটেজিক মিসাইল কমান্ড সেন্টার রয়েছে, যেখানে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করে রাখা হয়। এ ছাড়াও, বুশেহর-এ ইরানের একমাত্র বাণিজ্যিক পরমাণু শক্তিকেন্দ্র রয়েছে। যদিও ইরানের এক আঞ্চলিক কর্তার দাবি, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইজ়রায়েলি ড্রোনগুলিকে মাঝ-আকাশেই ধবংস করে দিয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার আক্রমণের নিন্দা জানাল চিন। বেজিংয়ের দাবি, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে আকাশপথে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে আমেরিকা! শুধু তা-ই নয়, আমেরিকা রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদেরও কোনও তোয়াক্কা করেনি বলে মনে করছে চিন। রবিবারের হামলা প্রসঙ্গে বিবৃতি প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিদেশ মন্ত্রক।
সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে হরমুজ় প্রণালী বন্ধ রাখার পথে হাঁটতে চলেছে ইরান। সে দেশের পার্লামেন্টে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।উল্লেখ্য, পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মধ্যে সরু সমুদ্রপ্রণালী হল হরমুজ়। এই প্রণালী ৪০ কিমি চওড়া। এই জলপথ দিয়েই বিশ্বের অধিকাংশ তেল আমদানি-রফতানি হয়। সংঘাতের আবহে ইরান হরমুজ় প্রণালীতে অবরোধ সৃষ্টি করতে পারে, এমন জল্পনা ছিল আগে থেকেই। তার ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম হু হু করে বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাগচি জানিয়েছেন, সোমবার পুতিনের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসতে রবিবারই রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তিনি। ইস্তানবুলে একটি সাংবাদিক বৈঠকে আরাগচি বলেন, ‘‘রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে আমরা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের অবস্থান স্থির করি।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি বা ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) হয়েছিল, তাতে পাঁচ শক্তিধর রাষ্ট্রের সঙ্গে ছিল রাশিয়াও।
রবিবারই ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে আমেরিকার হামলার তীব্র নিন্দা করেছে রাশিয়া। এই হামলা শুধু ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ই নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী বলেও জানিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। রবিবার রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘এত দিনে এটা স্পষ্ট যে, ভয়াবহ উত্তেজনা বৃদ্ধি শুরু হয়ে গিয়েছে, যা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে আরও বিঘ্নিত করে। আমেরিকার এই হামলা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনকারী।’’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে মোদী জানিয়েছেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ফোন কথোপকথনে পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মোদী। একই সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টকে উত্তেজনা প্রশমনেরও আর্জি জানিয়েছেন।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রবিবার আরও একটি বার্তা দিয়েছেন সমাজমাধ্যমে। লিখেছেন, ‘‘গত সপ্তাহে আমরা আমেরিকার সঙ্গে সমঝোতা করছিলাম, ইজ়রায়েল তখন কূটনীতি উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সপ্তাহে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমেরিকা কূটনীতি উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। এর থেকে কী প্রমাণিত হয়? ব্রিটেন এবং ইউরোপের প্রতিনিধিদের মতে, ইরানকেই কূটনীতির টেবিলে ফিরতে হবে। কিন্তু আমরা যেটা কখনও ছাড়িনি, সেখানে আবার ফিরব কী ভাবে?’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারায়ানো গ্রোস্সি সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। আইএইএ-র গভর্নরদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণুঘাঁটিতে আমেরিকার হামলা এবং তার পর ইজ়রায়েলের ধারাবাহিক হামলার নিন্দা করছে পাকিস্তান। ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আবার বলছি, এই আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের সব নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ অনুযায়ী, ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে এই হিংসা অস্বস্তিকর। অবিলম্বে এই সংঘাত প্রশমনের দাবি জানাচ্ছি। সকলের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা উচিত।
বিবৃতি দিয়ে রবিবারের মার্কিন হামলার কড়া নিন্দা করেছে ইরানের বিদেশ মন্ত্রক। অভিযোগ, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হয়েও আমেরিকা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম মানেনি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই গুরুতর অপরাধের অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিণতির জন্য আমেরিকার সরকারকেই দায়ী করছে ইরান। গণহত্যাকারী ইহুদিবাদী সরকারের সঙ্গে অপরাধমূলক যোগসাজশ করেছে আমেরিকা। এই মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় স্বার্থরক্ষার্থে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিরোধের অধিকার ইরানের আছে।’’ আরও বলা হয়েছে, ‘‘এই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর দায়িত্ব সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ইরান। এই ধরনের স্পষ্ট আগ্রাসনের মুখে নীরবতা সমগ্র বিশ্বকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেবে।’’
পশ্চিম ইরানের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলের বায়ুসেনা (আইএএফ)। তাদের সামরিক বাহিনী ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এই তথ্য জানিয়েছে। বলা হয়েছে, কিছু ক্ষণ আগে ইজ়রায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র যে লঞ্চার দিয়ে নিক্ষেপ করা হয়েছে, সেগুলি আইএএফ নিষ্ক্রিয় করেছে।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য আমেরিকা ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম এবং আন্তর্জাতিক আইন ভয়ানক ভাবে লঙ্ঘন করেছে। আজ সকালের ঘটনাগুলি জঘন্য। এর পরিণতি হবে দীর্ঘস্থায়ী। এই ভয়ানক বেআইনি অপরাধমূলক আচরণ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সকল সদস্যের শঙ্কিত হওয়া দরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম অনুযায়ী আত্মরক্ষা, জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার অধিকার ইরানের আছে।’’
ইরান থেকে রবিবার সকালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে ইজ়রায়েলে। ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর চেষ্টা চলছে। আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র সক্রিয় করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তেল আভিভে সাইরেন বাজছে। জেরুসালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে (শেল্টারে) চলে যেতে বলা হয়েছে। আইডিএফের বিবৃতি, ‘‘ইরান থেকে ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে।
ইরানে আমেরিকার হামলায় খুশি ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর সুরেই ‘শান্তির’ বার্তা দিলেন তিনি। বললেন, ‘‘শক্তির মধ্যে দিয়েই শান্তি আসে!’’ ইরানের পরমাণুকেন্দ্রকে নিশানা করা ট্রাম্পের এক শক্তিশালী সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের পরামর্শদাতা হোসেন শরিয়তমাদারি অবিলম্বে আমেরিকার জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ডাক দিয়েছেন। জানিয়েছেন, হরমুজ় প্রণালীও বন্ধ করে দেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকার হামলার পর এ বার আমাদের পালা। দেরি না করে বাহরিনে আমেরিকার নৌসেনার জাহাজে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে হবে। হরমুজ় প্রণালীতে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে।’’ কোরানের উদ্ধৃতি তুলে তিনি লেখেন, ‘‘যেখানেই খুঁজে পাবে, ওদের মেরে ফেলো।’’ এখনও খামেনেই সরকারি ভাবে আমেরিকার হামলা নিয়ে কোনও বার্তা দেননি।
আমেরিকার হামলার পর ফোরডো, ইসফাহান এবং নাতান্জ়ের পরমাণুকেন্দ্রগুলির কাছে দূষণের কোনও খবর নেই, জানিয়েছে ইরান। সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার সেফ্টি সিস্টেম সেন্টারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পরমাণুকেন্দ্রগুলি থেকে কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের খবর নেই। ফলে ওই এলাকায় জনগণের চিন্তার কোনও কারণও নেই। এর আগে ইজ়রায়েলও ইরানের পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল। সে বারও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়নি।
ইরানে আমেরিকার হামলার পর সতর্ক ইজ়রায়েল। দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইজ়রায়েল জানিয়েছে, আপাতত বাইরে থেকে কোনও বিমানের ইজ়রায়েলে প্রবেশ এবং ইজ়রায়েল থেকে কোনও বিমানের বাইরে যাওয়া বন্ধ। কত দিনের জন্য তা বন্ধ থাকবে, জানানো হয়নি।
ইরানে আমেরিকার হামলার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমেরিকা যে ভাবে ইরানের বিরুদ্ধে আজ বলপ্রয়োগ করেছে, আমি তা দেখে অত্যন্ত শঙ্কিত। যে অঞ্চল এমনিতেই খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে, আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য যে অঞ্চল আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ভয়ানক উত্তেজনা তৈরি করা হল। এই সংঘাত এ বার হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। পশ্চিম এশিয়া এবং সারা বিশ্বের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।’’
ইজ়রায়েলের সঙ্গে মিলেই ইরানে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের ভাষণে এমনটাই জানালেন ট্রাম্প। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমি নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা যে ভাবে দল হিসাবে কাজ করেছি, সে ভাবে হয়তো আর কেউ কখনও করেনি। ইজ়রায়েলের উপর যে হুমকি রয়েছে, তা মুছে দিতে আমরা কাজ করেছি। ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী অসাধারণ কাজ করেছে।’’
ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ইরানকে শান্তিস্থাপন করতে হবে, নয়তো বিপর্যয় ঘটবে। গত আট দিনে আমরা যে বিপর্যয় দেখেছি, তার চেয়ে আরও অনেক বড় কিছু হবে। মনে রাখবেন, আরও অনেক ‘টার্গেট’ বাকি রয়েছে। আজ যে হামলাগুলি হয়েছে, সেগুলি সবচেয়ে কঠিন এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তিস্থাপন না-করা হয়, আমরা অন্য ‘টার্গেট’-এও সমান দক্ষতায় হামলা চালাব। সেগুলি হবে নির্ভুল এবং দ্রুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy