Advertisement
০২ মে ২০২৪
Mahsa Amini

মারধর বা মাথায় আঘাত নয়, অসুস্থতার জেরেই মাহশার মৃত্যু, দাবি ফরেন্সিক রিপোর্টে

গত ১৬ সেপ্টেম্বর নীতি পুলিশের কবলে মাহশার মৃত্যুর ঘটনার পরেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন ইরানের মহিলারা। প্রশাসনের কড়া বলপ্রয়োগের ফলেও থামানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ।

মাহশা আমিনি।

মাহশা আমিনি। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১২
Share: Save:

মারধর বা মাথায় আঘাত নয়, ইরানের ২২ বছরের মাহশা আমিনির মৃত্যু হয়েছে শারীরিক অসুস্থতাতেই। শুক্রবার ইরানের ফরেন্সিক দফতর একটি বিবৃতিতে প্রকাশ করেছে এই তথ্য। পাশাপাশি তুলে ধরেছে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আট বছর বয়সে মস্তিষ্কে একটি টিউমারের জন্য জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছিল মাহশার। সেই অস্ত্রোপচারের ফলে তখন সুস্থ হয়ে উঠলেও পরিণত বয়সে সেই সংক্রান্ত অসুস্থতা ধীরে ধীরে ফিরে আসছিল। ঘটনাচক্রে, যে দিন নীতিপুলিশ হিজাব দিয়ে চুল পুরোপুরি না ঢাকার অপরাধে মাহশাকে গ্রেফতার করেছিল, সে দিনই তাঁর অসুস্থতা গুরুতর হয়ে পড়ে। মৃত্যু হয়েছে তার ফলেই। এর আগেও অবশ্য তেহরানে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল মেহদি ফারুজেশ বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘মাহশার মাথায়, মুখে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই।’’

এ দিকে, এই বিষয়টি মানতে নারাজ মাহশার পরিবার। তাঁদের দাবি, মাথায় ঘাড়ে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর। নীতিপুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে তাঁর উপর। সেই বিষয়টি ঢাকতেই বার বার অসুস্থতার তত্ত্ব তুলে আনতে চাইছে প্রশাসন। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহশার বাবা আমজাদ দাবি করেছিলেন, কোনও রকম অসুস্থতা ছিল না তাঁর মেয়ের।পুলিশ-প্রশাসনের দাবি উড়িয়ে মাহশার বাবা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ের কোনও রকম অসুস্থতা ছিল না। ওকে কখনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়নি। কখনও কোনও অস্ত্রোপচার হয়নি ওর। প্রশাসন মিথ্যে কথা বলছে।’’ মাহশার স্কুলের দুই সহপাঠীও একই কথা বলেছেন। তাঁরা জানান, মাহশাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বা গুরুতর কোনও অসুখে ভুগছে এমন কথা তাঁরা শোনেননি। তাঁরা এ-ও বলেছেন, নীতিপুলিশের অত্যাচারে মাহশার মতো বহু মেয়েকে নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়। পরে, কার্যত ‘ভয় দেখিয়ে’ প্রশাসন সেই সমস্ত ঘটনা চাপা দিতে বাধ্য করে সেই মেয়েগুলির পরিবারকে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর নীতি পুলিশের কবলে মাহশার মৃত্যুর ঘটনার পরেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন ইরানের মহিলারা। প্রশাসনের কড়া বলপ্রয়োগের ফলেও থামানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ। প্রকাশ্য রাস্তায় হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে ফেলে ২১ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে গান, নাচ ও কবিতার মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করে চলেছেন তাঁরা। ভাইরাল হয়েছে ফারসি ভাষায় ‘বেলা চাও’ গানটি। প্রাক্তন ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খোমেনেই ও বর্তমান ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের আরোপিত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ইরানের প্রায় সমস্ত শহরের রাস্তাতেই ধ্বনিত হচ্ছে ‘স্বৈরাচারী নিপাত যাও’ স্লোগান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahsa Amini Iran Iran Hijab Row Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE