ঘাতক: প্যাট্রিক ক্রুসিয়াসের ছবি প্রকাশ করেছে এফবিআই। এএফপি
দিনে দিনে টেক্সাস ছেয়ে ফেলছে স্প্যানিশভাষী অ-মার্কিনরা। ফলে ‘বিদেশিদের’ ভিড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে স্থানীয় শ্বেতাঙ্গরা। টেক্সাসের এল পাসোর ওয়ালমার্ট স্টোরে হামলার মাত্র ১৫ মিনিট আগে অনলাইনে এমনই একটি ‘অভিবাসী-বিরোধী বিদ্বেষমূলক ইস্তাহার’ পোস্ট করা হয় যার মূল বক্তব্য ছিল এমনটাই। এমনকি, এই পরিস্থিতি এড়ানোর পথ হিসেবে আমেরিকাকে জাতির ভিত্তিতে দু’ভাগে ভাগ করার বিশদ ছকও কষে দেওয়া হয় ২,৩০০ শব্দের ওই ইস্তাহারে!
‘দ্য ইনকনভিনিয়েন্ট ম্যানিফেস্টো’। একটি অনলাইন মেসেজ বোর্ডে এই নামেই পোস্ট করা হয় ওই ‘বিদ্বেষমূলক’ ইস্তাহারটি। মার্চ মাসে নিউজ়িল্যান্ডের মসজিদে ৫১ জন মুসলিমকে হত্যার ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার কথাও ফলাও করে লেখা ছিল পোস্টটিতে। প্রসঙ্গত, ওই ঘটনার ঠিক আগেও এই ভাবেই টুইটার এবং অন্য একটি অনলাইন পোর্টালে ৮৭ পাতার একটি ইস্তাহার প্রকাশ করেছিল বন্দুকবাজ। শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের আস্ফালনই ছিল যার মূল বিষয়বস্তু। আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তবর্তী টেক্সাসের এই গণহত্যার ঘটনার আগে করা এই পোস্টটির সঙ্গে ধৃত সন্দেহভাজন প্যাট্রিক ক্রুসিয়াসের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছ’জন মেক্সিকান। আহতদের মধ্যেও রয়েছেন সে দেশের সাত জন। এর প্রেক্ষিতে আমেরিকার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে মেক্সিকো। সরকারের তরফে রবিবার এ কথা জানান দেশের বিদেশ সচিব মার্সেলো এবরার্ড। এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে অভিযুক্তের পরিচয় প্রকাশ্যে আনেননি তদন্তকারীরা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্রের দাবি, ২১ বছরের প্যাট্রিকই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। মেক্সিকোর বিদেশ সচিব ঘটানাটিকে ‘মেক্সিকানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, অভিযুক্তকে তাঁদের দেশে নিয়ে বিচার চালানো সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখবে মেক্সিকো সরকার। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তাঁরা প্রথম পদক্ষেপ করবেন বলে টুইটারে জানিয়েছেন তিনি।
এই গণহত্যার ঘটনাটিকে ‘ঘরোয়া সন্ত্রাস’ হিসেবেই দেখা হচ্ছে বলে জানান টেক্সাস ডিসট্রিক্টের অ্যাটর্নি জন ব্যাস। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে নাতি যে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে চলেছে, তা ঘুণাক্ষরেও জানতেন না বলে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন ক্রুসিয়াসের ঠাকুরদা-ঠাকুরমা। টেক্সাসের অ্যালেনে তাঁদের সঙ্গেই থাকত ২১ বছরের ওই যুবক। তবে মাত্র ছ’সপ্তাহ আগে সে ওই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি।
তাদের স্টোরেই বন্দুকবাজের হানায় প্রাণ হারিয়েছেন ২২ জন। এর মাত্র তিন দিন আগে, অন্য একটি গোলাগুলির ঘটনায় নিহত হন ওয়ালমার্টেরই মিসিসিপি শাখার দুই কর্মী। তা সত্ত্বেও আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে নারাজ ওয়ালমার্ট। ২০১৮ সালে ফ্লরিডার পার্কল্যান্ডের একটি স্কুলে বন্দুকবাজের হানায় ১৭ জনের মৃত্যুর পরে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ন্যূনতম বয়স বাড়িয়ে ২১ করে এই বিপণি। ওয়ালমার্টের মুখপাত্র র্যান্ডি হারগ্রোভের দাবি, ফেডারেল আইন অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির আগে ক্রেতার ‘ব্যাকগ্রাউন্ড চেক’-এর কোনও বাধ্যবাদকতা নেই। তবে ওয়ালমার্ট তাতে জোর দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy