Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
International News

লাভার চাপে কী ভাবে ফাটল মাউন্ট ক্রাকাতোয়ার দেওয়াল, দেখুন সেই ভয়ানক ভিডিয়ো

শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ সুনামি আছড়ে পড়েছিল ইন্দোনেশিয়ার বুকে। আর সেই সুনামির মূল চক্রী এই ‘মাউন্ট ক্রাকাতোয়া’।

মাউন্ট ক্রাকাতোয়ার দেওয়াল ফেটে বেরিয়ে আসছে লাভা। ছবি: এএফপি।

মাউন্ট ক্রাকাতোয়ার দেওয়াল ফেটে বেরিয়ে আসছে লাভা। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৩৫
Share: Save:

ভয়ানক একটা বিস্ফোরণ। আর তার পরই কালো ধোঁয়া আর ছাইয়ে আকাশ ঢেকে গিয়েছিল। তার মধ্যে থেকেই দেখা যায় মাউন্ট ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির শরীর বেয়ে হু হু করে নেমে আসছে লাভা। ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছিল সমুদ্রের জলে। দেখে মনে হবে একটা দানব আস্তে আস্তে গ্রাস করে নিচ্ছে সমুদ্রটাকে। তাণ্ডব শুরু হয়ে গিয়েছিল সমুদ্রের জলেও। ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দি হয়। সেই ভিডিয়োই এখন ভাইরাল। যা দেখলে শিউরে উঠবেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দেওয়াল ফেটেছে আনাক ক্রাকাতোয়ার। যাকে ‘ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির সন্তান’ বলা হয়। ১৮৮৮-তে ভয়ানক বিস্ফোরণ হয়েছিল ক্রাকাতোয়া আগ্নেগিরির ভিতরে। যার আওয়াজ অস্ট্রেলিয়ার পারথ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সেই বিস্ফোরণের ফলে বিশাল আকৃতির একটি জ্বালামুখ তৈরি হয়। যেটা আনাক ক্রাকাতোয়া নামে পরিচিত।

জন্মের পর থেকেই সেই জ্বালামুখ থেকে একটু একটি করে অগ্ন্যুত্পাত হওয়া শুরু করে। প্রত্যেক ২-৩ বছর অন্তর অগ্ন্যুত্পাতের ফলে জ্বালামুখটা আরও বড় আকার ধারণ করে। এমনটাই জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রে ক্যাস।

গত কয়েক মাস ধরেই লাভা এবং ছাই নির্গত হচ্ছিল আনাক ক্রাকাতোয়া থেকে। কানাডার ভূ-পদার্থবিদ মিকা ম্যাককিনন জানান, সাধারণত আগ্নেয়গিরির পাথরের বাঁধনগুলো আলগা হয়। ফলে সর্বক্ষণ পাহাড়ের গা বেয়ে নীচে নেমে আসতে দেখা যায়। যদি পাহাড়ের একটা বিশাল অংশ ধসে সমুদ্রে নেমে আসে তা হলে আলোড়ন তৈরি হয়, তাতে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বিশাল বিস্ফোরণ হয়েছিল আনাক ক্রাকাতোয়ায়। সেটার চাপ সহ্য করতে না পেরেই পাহাড়ের দক্ষিণ দিকের দেওয়াল ধসে পড়ে সমুদ্রের জলে। সেটা থেকেই সুনামি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্রাকাতোয়ার অগ্ন্যুত্পাতের সেই মুহূর্ত।

অনেক দিন ধরেই ফুঁসছিল আনাক ক্রাকাতোয়া। একটু একটু করে লাভাও বেরিয়ে আসছিল জ্বালামুখ থেকে। নির্গত লাভার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় আগ্নেয়গিরির দেওয়ালে চাপ সৃষ্টি হতে থাকে। একটা সময় সেই চাপ ধরে রাখতে না পেরে দেওয়াল ভেঙে যায়। আর তার জেরে সমুদ্রের তলদেশে থাকা ভূস্তরের প্লেটে বিপুল ধস নামে। রিখটার স্কেলে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের অনুরূপ শক্তি নির্গত হয়। আর তার ফলে সমুদ্রের নীচে বিস্তীর্ণ এলাকার জলস্তরকে ঠেলে সরিয়ে দিতেই সমুদ্র ফুলেফেঁপে ওঠে। সুনামির আকার ধারণ করে সুন্দা প্রণালী দিয়ে এসে শনিবার রাতে তা আছড়ে পড়ে ইন্দোনেশিয়ায়। মৃত্যু হয় প্রায় ২৮০ জনের। আহত বহু।

আরও পড়ুন: আগ্নেয়গিরির প্রাচীর ফেটে সমুদ্রগর্ভে ধস

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় লাইভ কনসার্টে আছড়ে পড়ল সুনামি, দেখুন সেই ভয়ঙ্কর ভিডিয়ো

(সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়েবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেরআন্তর্জাতিকবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE