Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Myanmar

দেশ জুড়ে বিক্ষোভ রুখতে ফেসবুক ব্লক মায়ানমারে

গত ১ ফেব্রুয়ারি, সোমবার আচমকাই সেনা অভ্যুত্থান ঘটে মায়ানমারে। বন্দি করা হয় নেতানেত্রীদের।

দেশে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ব্যাঙ্ককে মায়ানমারের দূতাবাসের সামনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ। রয়টার্স।

দেশে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ব্যাঙ্ককে মায়ানমারের দূতাবাসের সামনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ। রয়টার্স।

  সংবাদ সংস্থা 
ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:১৫
Share: Save:

জনরোষ বাড়ছে দেখে দেশ জুড়ে ফেসবুক পরিষেবা বন্ধ করে দিল মায়ানমারের নয়া সেনা সরকার। যদিও তাতে ক্ষোভ বাড়ছে আরও। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। এর মধ্যে শাসক দলের কর্মী-সমর্থক ছাড়াও রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ। মায়ানমারের পরিস্থিতিতে আজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেজ়ও।

গত ১ ফেব্রুয়ারি, সোমবার আচমকাই সেনা অভ্যুত্থান ঘটে মায়ানমারে। বন্দি করা হয় নেতানেত্রীদের। শাসক দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’ (এনএলডি)-র নেত্রী আউং সান সু চি-কে তাঁর বাসভবনে গৃহবন্দি করা হয়েছে। একাধিক বেআইনি ওয়াকি-টকি বাড়িতে রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের বিরুদ্ধেও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ভাঙার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। দেশের নির্বাচিত সরকারকে এ ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করে নেতানেত্রীদের গৃহবন্দি করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ-মিছিল শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে বিক্ষোভের আগুন ছড়াতে পারে অনুমান করে তড়িঘড়ি ফেসবুক ব্লক করে দেয় সেনাবাহিনী।

মায়ানমারে ফেসবুক খুবই জনপ্রিয়। সু চি সরকার এত দিন ফেসবুকেই যাবতীয় সরকারি ঘোষণা করত। ফলে দেশের প্রায় প্রতিটি বাসিন্দার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বুধবার রাত থেকেই ইন্টারনেট পরিষেবায় ঝামেলা দেখা যাচ্ছিল। তার পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার ‘টেলিনর মায়ানমার’ জানিয়েছে, যোগাযোগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মোবাইল অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের ফেসবুক সাময়িক ভাবে বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নরওয়ের সংস্থার শাখা ‘টেলিনর মায়ানমার’ জানিয়েছে, তারা মনে করে এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন, যদিও নির্দেশ মানতে বাধ্য।

ফেসবুকের তরফে সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘মায়ানমারের টেলিকম প্রোভাইডারদের ফেসবুক ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, ফেসবুক সংযোগ দ্রুত ফেরানো হোক। যাতে মানুষ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, গুরুত্বপূর্ণ খবর পান।’’

ফেসবুক ব্লক করে অবশ্য হালে পানি পাচ্ছে না সেনা সরকার। বিশেষ করে অসহযোগ আন্দোলনে চিকিৎসকদের অংশ নেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসায়। দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় করোনা-পরিস্থিতি সামলে এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন চিকিৎসকেরা। সেই চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ জানিয়ে দিয়েছেন, সেনা সরকারের অধীনে তাঁরা কাজ করবেন না। ১৯৬২ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পরে পাঁচ দশক মায়ানমার শাসন করেছে সেনাবাহিনী। সু চি-র নেতৃত্বে কয়েক বছর হল গণতন্ত্র পেয়েছেন বাসিন্দারা।

মঙ্গলবারের মতো বুধবার রাতেও পথে নেমেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। থালাবাসন বাজিয়ে, গাড়ির হর্নে প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে ভেসে উঠেছে ১৯৭৭-এর একটি সুর। আমেরিকার রক ব্যান্ড ‘কানসাস’-এর ‘ডাস্ট ইন দ্য উইন্ড’-এর সুরে ‘কাবার ম্যাকায় বু’। যার অর্থ— ‘‘এই পৃথিবী না-বদলানো পর্যন্ত আমরা থামব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Myanmar Aung San Suu Kyi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE