খাতায়-কলমে সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। কিন্তু পরিচয় দিতে গিয়ে নিজেকে সে ইউরোপীয় বলে দাবি করেছে। নিউজ়িল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে বন্দুক নিয়ে হত্যালীলা চালানোর ঠিক আগেই অনলাইনে একটি ইস্তাহার প্রকাশ করেছে ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ছত্রে ছত্রে মুসলিম আর শরণার্থীদের প্রতি প্রবল ঘৃণা ও অতি দক্ষিণপন্থায় চরম বিশ্বাস।
‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ নামে ওই ইস্তাহারে ২৮ বছরের ব্রেন্টন জানিয়েছে, নরওয়ের গণহত্যাকারী অ্যান্ডের্স বেরিং ব্রেইভিকের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে, এমন লোকজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল। মুসলিম আর শরণার্থীদের প্রতি চরম বিদ্বেষী ব্রেইভিক ২০১১ সালে অসলোয় এক সামার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল। তাকেই ‘গুরু’ বলে মানে ব্রেন্টন। বিচারে ব্রেইভিকের ২১ বছর জেল হয়েছে ২০১২ সালে। গণহত্যার আগে সে-ও অনলাইনে একটি ইস্তাহার দিয়েছিল। সেটি ছিল ১৫০০ পাতার। ‘গুরু’-র তুলনায় ব্রেন্টনের ইস্তাহারটি ছোট। ৭৩ পাতার। তবে খুবই অগোছালো লেখা। সাড়ে ষোলো হাজার শব্দ খরচ করে নিজের ব্যক্তিসত্তা ও আদর্শ নিয়ে প্রচুর কথা লিখেছে সে। এই হামলার জন্য তার কোনও আফসোস থাকবে না বলেও জানিয়েছে শেষে। মনোবিশ্লেষকদের মতে, ব্রেইভেকের মতো ব্রেন্টনও জগত-সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন, কল্পজগতের বাসিন্দা। ইস্তাহারে সে লিখেছে, ‘‘জেল থেকে ২৭ বছর পর বেরিয়ে আমিও নোবেল পুরস্কার পাব, নেলসন ম্যান্ডেলার মতো।’’
দু’টি মসজিদে হামলাকারীদের মধ্যে চার জন তাদের কব্জায় বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মতে, ব্রেন্টনই মূল ষড়যন্ত্রকারী। একমাত্র তার বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ব্রেন্টন গত কয়েক মাস ধরে নিউজ়িল্যান্ডে ঘাঁটি গেড়ে ছিল। টুইটার, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় সে নিয়মিত অতি দক্ষিণপন্থী বার্তাও পোস্ট করত। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিউজ়িল্যান্ড পুলিশের নজরে সে কেন ছিল না, সেই প্রশ্ন তুলেছে দেশের বিরোধী দলগুলি।