Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
আগের চেয়ে দশ গুণ শক্তিশালী

হাইড্রোজেন বোমায় বিশ্ব কাঁপালেন কিম

সাম্প্রতিক কালে যে ক’টি পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া, তার ছ’নম্বরটি ঘটল রবিবার। সে দেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, শাসক কিম জং উন একটি আধুনিক শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেছেন। এই বোমা আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে (আইসিবিএম) বসিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ছোড়া সম্ভব।

পর্যবেক্ষণ: পরীক্ষামূলক ভাবে হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের আগে সব কিছু খতিয়ে দেখছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। রবিবার ওই পরীক্ষার কিছু ঘণ্টা আগে দেশের সংবাদমাধ্যম এই ছবি প্রকাশ করে।

পর্যবেক্ষণ: পরীক্ষামূলক ভাবে হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের আগে সব কিছু খতিয়ে দেখছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। রবিবার ওই পরীক্ষার কিছু ঘণ্টা আগে দেশের সংবাদমাধ্যম এই ছবি প্রকাশ করে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

এ যেন একেবারে ছয়ে ছক্কা!

সাম্প্রতিক কালে যে ক’টি পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া, তার ছ’নম্বরটি ঘটল রবিবার। সে দেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, শাসক কিম জং উন একটি আধুনিক শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেছেন। এই বোমা আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে (আইসিবিএম) বসিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ছোড়া সম্ভব। অতীতেই কিমের দেশ দাবি করেছিল, আইসিবিএম সরাসরি আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে আঘাত করতে সক্ষম।

উত্তর কোরিয়ার এই দাবি কত দূর সত্যি, তা নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তবে এই পরীক্ষা যদি সত্যিই সফল হয়ে থাকে, তা হলে এ যাবৎ কালের মধ্যে এত বড় অস্ত্র পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ায় ঘটেনি। এক বছর আগে পিয়ংইয়ং এ ধরনের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করে শিরোনামে এসেছিল বটে! তবে জাপানের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ বারেরটি আগের বারের তুলনায় দশ গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। যার জেরে উত্তর কোরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে ৬.৩ মাত্রার কম্পন তৈরি হয়েছিল।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে বাসা বাঁধছে রোগ

হাইড্রোজেন বোমাটি কী ধরনের এবং তার আয়তন কত— এ ধরনের কোনও তথ্যই এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই পরীক্ষার ফলে এ বার আমেরিকার দিকে সরাসরি পরমাণু অস্ত্র ছোড়ার বিষয়টি শাসক কিমের বাঁ হাতের খেল্ বললে বোধহয় খুব বাড়াবাড়ি হয় না! রবিবার সকালে এই পরীক্ষার খবর পেয়েই একের পর এক টুইটে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পিয়ংইয়ং বিরাট পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে। ওদের কাজ এবং কথাবার্তা আমেরিকার জন্য ক্রমশ আক্রমণাত্মক এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।’’ এর পাশাপাশি চিনকে বিঁধে ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘চিনের লজ্জা পিয়ংইয়ং। (তাদের ঠেকাতে) চিন যতই চেষ্টা করুক, সাফল্য কিছুই মিলছে না।’’ পরে ট্রাম্প এক বার্তায় জানান, এই পরীক্ষার পরে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যে সব দেশ ব্যবসা চালিয়ে যাবে, তাদের সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্ক ছিন্ন করবে মার্কিন প্রশাসন। হুমকি-পাল্টা হুমকি, একে অপরকে শক্তি প্রদর্শনে যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে মহড়া— সব মিলে উত্তর কোরিয়া এবং আমেরিকার ‘তরজা’টা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই।

রবিবার গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে বড়সড় বাজি ফেলল কিমের দেশ। দিনের শুরুতে উত্তর কোরিয়া দেশের শাসকের একটি ছবি প্রকাশ করে। যাতে দাবি করা হয়েছে, আইসিবিএমে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ বসানো যায় কি না, সেই পরীক্ষা করে দেখছেন কিম জং উন। তার কিছু ঘণ্টা পরেই কোরীয় সেন্ট্রাল টিভি চ্যানেলে বর্ষীয়ান উপস্থাপিকা রি চুন-হি (যিনি উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষা সংক্রান্ত বড় সাফল্যের খবর বিশ্বকে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিমের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি) হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের খবর ঘোষণা করেন। দু’মাস আগে আইসিবিএম-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের কথাও জানান তিনিই।

পরমাণু পরীক্ষা সংক্রান্ত নরওয়ের এক নজরদারি গোষ্ঠীর দাবি, ১৯৪৫ সালের হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা ফেলেছিল আমেরিকা, তার থেকে আট গুণ শক্তিশালী কিমের এই নয়া হাইড্রোজেন বোমা। এই অস্ত্রের পরীক্ষা সত্যিই হয়েছে কি হয়নি, সে বিতর্ক জিইয়ে রেখেও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে অন্য কথা। সেটা হচ্ছে, যা মনে করা হয়েছিল পরমাণু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে উত্তর কোরিয়া।

কিমের পরীক্ষার খবরে গোটা বিশ্ব জুড়েই উঠেছে নিন্দার ঝড়। চিন থেকে রাশিয়া— চুপ নেই কেউই। যদিও কূটনীতিকরা অনেক সময়েই দাবি করেন, প্রকাশ্যে অন্য প্রতিক্রিয়া দেখালেও এই দুই দেশ তলে তলে উত্তর কোরিয়াকে ইন্ধন জুগিয়ে চলেছে। তবে রবিবার যথেষ্ট কড়া ভাষাই শোনা গিয়েছে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে, ‘‘আমাদের সরকার কঠিন ভাবে এর নিন্দা এবং বিরোধিতা করছে। এই ভুল পদক্ষেপ থেকে সরে এসে আলোচনার টেবিলে বসা উচিত উত্তর কোরিয়ার।’’ রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মন্তব্য, ‘‘এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা আর বাড়তে না দিয়ে শান্তি বজায় রাখা দরকার। আমরাও সব পক্ষকে আলোচনায় আসতে বলছি।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ‘বাড়াবাড়ি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-রও। কিমের পরীক্ষার নিন্দা করেছে ভারতও।

অন্য বিষয়গুলি:

North Korea Hydrogen Bomb Kim Jong Un Nuclear Weapons হাইড্রোজেন বোমা উত্তর কোরিয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy