পাক সেনা দাবি করেছে, সে দেশের মাটিতে জইশের কোনও অস্তিত্বই নেই। ছবি: সংগৃহীত।
মাসুদ আজহারের দুই সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া ও ফলাহ-ই-ইনসানিয়তের বিরুদ্ধে আজও অভিযান চলল পাকিস্তানে। পাক সরকারের অর্থসচিব স্বীকার করে নিয়েছেন, মে মাসের মধ্যে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করলে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠন এফএটিএফের কালো তালিকায় পড়তে হবে তাদের। তবে এর পরেও পাক সেনা এ দিন দাবি করেছে, সে দেশের মাটিতে জইশের কোনও অস্তিত্বই নেই।
পাক সরকারের এক আধিকারিক জানান, সে দেশে জামাত-উদ-দাওয়ার প্রায় ৩০০টি ধর্মশিক্ষা স্কুল রয়েছে। হাসপাতাল, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও চালায় তারা। জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফলাহ-ই-ইনসানিয়তের প্রায় ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে পাকিস্তানে। গত কালই মাসুদের ছেলে হামাদ আজহার ও ভাই মুফতি আব্দুল রউফকে আটক করেছে পাকিস্তান। আটক করা হয়েছে জঙ্গি সংগঠনের ৪২ জন সদস্যকে। এর পরেই আজ মাসুদের ওই দুই সংস্থার আরও কিছু স্কুল ও সম্পত্তি নিজেদের দখলে নেয় পাক সরকার। বিশেষ করে পঞ্জাব প্রদেশে মাসুদের সংগঠন ও তাদের সম্পত্তির উপর পাক সরকারের অভিযান চলেছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, মাসুদ সম্পর্কে পাক সেনার আজকের বক্তব্য। ক’দিন আগেই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি একটি মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছিলেন, মাসুদ অসুস্থ, তবে তিনি পাকিস্তানেই রয়েছেন। তবে এ দিন পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, ‘‘পাকিস্তানে জইশের কোনও অস্বিত্বই নেই।’’ তাঁর এই দাবির পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে মাসুদ কোথায়! ক’দিন আগেই জইশ প্রধানের মৃত্যুর খবর ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছিল। পরে অবশ্য পাক সংবাদ মাধ্যমের একাংশ মাসুদের পরিবারের সূত্রকে উল্লেখ করে দাবি করে, মাসুদ বেঁচে আছেন। পরে পাক সরকারের এক মন্ত্রীর মুখেই শোনা যায়, মাসুদ বেঁচে আছেন।
পুলওয়ামায় হামলার দায় জইশের স্বীকার করে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে এ দিন সেনা মুখপাত্র দাবি করেন, পাকিস্তান থেকে এমন কোনও কথা বলা হয়নি। এ ছাড়া, মাসুদের সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযানও কারও চাপে করা হয়নি। পাক সেনা মুখপাত্র বলেন, ‘‘গোটা বিশ্বের উচিত জঙ্গি মোকাবিলায় পাকিস্তানকে সাহায্য করা।’’ চিনের মুখেও আজ শোনা গিয়েছে এমনই সুর। চিনা উপ-বিদেশমন্ত্রী কং শুয়ানইউয়ের পাক সফর নিয়ে বেজিংয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং-কে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জানান, পাক-ভারত সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে আলোচনা করতেই এই সফর। চিনা মুখপাত্রের মন্তব্য ‘‘সন্ত্রাস আটকাতে পদক্ষেপ করছে পাকিস্তান।’’ মাসুদ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নও এ দিন কার্যত এড়িয়ে যান চিনের মুখপাত্র।
এরই মধ্যে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি আজ জানান, নয়াদিল্লিতে পাক হাই কমিশনারকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই এই পদক্ষেপ। দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস ভারত ও পাকিস্তানের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy