কুলভূষণ যাদব। —ফাইল চিত্র
কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের দেখা করার অনুমতি (কনস্যুলার অ্যাকসেস) দিতে হবে পাকিস্তানকে। এই নির্দেশ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত। কিন্তু রায়ের পর দেড় মাসেও পাকিস্তানের নানা টালবাহানায় অনুমোদন মেলেনি। অবশেষে সোমবার সেই কনস্যুলার অ্যাকসেস দিল ইসলামাবাদ। বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানাল পাক বিদেশমন্ত্রক। আর এর পরই কুলভূষণ ইস্যুতে আরও এক দফা ভারতের জয় দেখছে কূটনৈতিক মহল।
রবিবার পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সালের সরকারি টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, কুলভূষণ যাদবকে সোমবার ২ সেপ্টেম্বর কনস্যুলার অ্যাকসেস দেওয়া হবে। ‘কনসুলার রিলেশন সংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের রায় এবং পাকিস্তানের আইন মেনে’-এই কনসুলার অ্যাকসেস দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন মহম্মদ ফয়সাল।
গত ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক আদালত রায় দিয়েছিল, কুলভূষণ যাদবকে কনস্যুলার অ্যাকসেস দিতে হবে পাকিস্তানকে। সেই রায়ের পর থেকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক এই দাবি করে আসছিল। অগস্টের গোড়ার দিকে পাকিস্তান অনুমোদন দিয়েও শর্ত চাপিয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রক বলেছিল, ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতিনিধিদের কুলভূষণের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পাক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন এবং গোটা পর্ব সিসিটিভিতে ধরে রাখা হবে। কিন্তু এই শর্ত মেনে কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করেননি ভারতীয় কূটনীতিকরা।
Consular access for Indian spy Commander Kulbhushan Jadhav, a serving Indian naval officer and RAW operative, is being provided on Monday 2 September 2019, in line with Vienna Convention on Consular relations, ICJ judgement & the laws of Pakistan.
— Spokesperson 🇵🇰 MoFA (@ForeignOfficePk) September 1, 2019
এই টানাপড়েনের মধ্যেই কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ঘিরে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকে। তার জেরে কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছিল কুলভূষণের কনস্যুলার অ্যাকসেস। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সেই অনুমোদন দেওয়ায় বিদেশমন্ত্রকে স্বস্তির হাওয়া। যদিও এ বারও কোনও শর্ত পাকিস্তান চাপিয়েছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: সংযুক্তিকরণের জন্য এক জনেরও চাকরি যাবে না, ব্যাঙ্ক কর্মীদের আশ্বস্ত করলেন সীতারামন
আরও পড়ুন: অসম এনআরিসতে বাদ ১ লাখ গোর্খা, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ মমতার
ইরান থেকে পাকিস্তানে ঢোকার পর গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগে ২০১৬-এর ৩ মার্চ বালুচিস্তান প্রদেশ থেকে কুলভূষণকে গ্রেফতার করে পাক নিরাপত্তা বাহিনী। তার পর ২০১৭-র এপ্রিলে কুলভূষণকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাক সামরিক আদালত। ওই সময় ভারতের তরফে জানানো হয়, নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ইরানে ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন কুলভূষণ। সেখান থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। কনস্যুলার অ্যাকসেস-এর পাশাপাশি কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের আদের পুনর্বিবেচনার নির্দেশও দেয় আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত।