Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কাতার-কাণ্ড নিয়ে বিপাকে পাকিস্তান

এই পরিস্থিতিতে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাটো গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তুরস্ক। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে কাতারে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। ওই সেনারা কাতারি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ ও তেহরান শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

দুই চিনা নাগরিক আইএস জঙ্গিদের হাতে খুন হওয়ার পরে সাংহাই গোষ্ঠীর সম্মেলনে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেননি শি চিনফিং। এ বার পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট নিয়েও বিপাকে পড়ল ইসলামাবাদ। কাতারে পাকিস্তানে সেনা পাঠাচ্ছে বলে দাবি করেছিল পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যমের একাংশ। আজ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনে সৌদি-সহ ছ’টি আরব দেশ ও মলদ্বীপ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এই পদক্ষেপের পিছনে যে আমেরিকার মদত ছিল তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাতারকে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি অবশ্য পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট কাটাতে আলোচনায় সাহায্য করার বার্তাও দিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলির আগ্রাসনের ভয়ও দেখা দিয়েছে কাতারে। নেওয়া হয়েছে সামরিক প্রস্তুতিও।

এই পরিস্থিতিতে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাটো গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তুরস্ক। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে কাতারে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। ওই সেনারা কাতারি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে। পশ্চিম এশিয়ায় ভারসাম্য বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত বলে ধারণা কূটনীতিকদের। পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করে, তুরস্কের পাশাপাশি কাতারে ২০ হাজার সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তানও।

আজ পাক বিদেশ মন্ত্রক জানায়, কাতারে সেনা পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। সম্পূর্ণ মনগড়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। আরব দেশগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে। কূটনীতিকদের মতে, এই প্রচারে স্পষ্টতই অস্বস্তিতে পড়েছে পাকিস্তান। কারণ কাতার ও সৌদি, দু’দেশই পাকিস্তানের মিত্র। ফলে সুন্নি দেশগুলির মধ্যে এই টানাপড়েনে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ।

শিয়া রাষ্ট্র ইরান সম্পর্কে সুর নরম করার ফলেই কাতার একঘরে হয়েছে বলে মনে করেন কূটনীতিকরা। প্রতিবেশী দেশগুলি যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় কিছুটা হলেও খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে কাতারে। সেই সমস্যা মেটাতে আজ পাঁচটি বিমান ভর্তি আনাজ পাঠিয়েছে ইরান। ইরানের বিমান সংস্থা ইরান এয়ার-এর মুখপাত্র শাহরোখ নৌশাবাদি জানিয়েছেন, কাতারের যত ক্ষণ প্রয়োজন তত ক্ষণ এ ভাবে সরবরাহ চালিয়ে যাবে তেহরান। তিনটি জাহাজ ভর্তি ফল ও আনাজও ইরান ছেড়ে কাতারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য তৈরি, জানিয়েছে ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা। সৌদি-সহ আরব দেশগুলির যে বাসিন্দারা কাতারে রয়েছেন তাঁরা থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকার। প্রতিবেশী দেশগুলি কিন্তু কাতারি নাগরিক ও কূটনীতিকদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। কেবল কিছু ক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে তাঁদের থাকার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কূটনীতিকদের মতে, কাতার যে সঙ্কট বাড়াতে চায় না এটাই তার প্রমাণ।

সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগ কাটাতেও সক্রিয় হয়েছে কাতার সরকার। ওয়াশিংটনে কাতারের হয়ে তদ্বির করার জন্য প্রাক্তন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জন অ্যাশক্রফটকে নিয়োগ করেছেন আমির তামিম বিন হামাদ আল ঠানি। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে তৈরি মার্কিন আইন কাতার কতটা মেনে চলছে তাও খতিয়ে দেখবেন অ্যাশক্রফট। জর্জ ডব্লিউ বুশ জমানার অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাশক্রফট ২০০১ সালের জঙ্গি হানার পরে আমেরিকার নয়া সন্ত্রাস-বিরোধী আইন তৈরিতে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE