Advertisement
E-Paper

পাক কলকাঠি কাবুলে: দিল্লি

তালিবান এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে আফগান সরকারের এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কাবুলের স্পষ্ট তর্জনী রাওয়ালপিন্ডিরই দিকে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৯
ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

লাগাতার তাণ্ডবে কাঁপছে কাবুল। গত ১০ দিনে ৪টি বড় মাপের জঙ্গি হামলা। গত এক মাসের হিসেব ধরলে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে দশে। নাশকতার নেপথ্যে ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে পাকিস্তানের ভূমিকা। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, সম্প্রতি তথ্য-সহযোগে আমেরিকাকে এ ব্যাপারে নিজেদের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে ভারত।

তালিবান এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে আফগান সরকারের এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কাবুলের স্পষ্ট তর্জনী রাওয়ালপিন্ডিরই দিকে। ওই শহরেই পাক সেনার সদর দফতর। রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মাহমুদ সাইকাল টুইটারে অভিযোগ করেছেন, কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল আক্রমণে আইএসআই-হাত আছে। আফগান বিদেশ মন্ত্রকের কর্তা আশরাফ হায়দারিও সম্প্রতি একই অভিযোগ এনেছেন। এ নিয়ে ভারতের সঙ্গেও নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান করছে আশরাফ গানি সরকার।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আফগানিস্তান নিয়ে ‘ব্যাক চ্যানেল’ কূটনীতিতে কথা চালানো হচ্ছে আমেরিকার সঙ্গে। ভারত মনে করছে, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার এই নড়বড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াশিংটনকে নিয়মিত ওয়াকিবহাল রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া আফগান-নীতির বিষয়টি জড়িত। ট্রাম্প যেমন আফগান সেনাকে ব্যাপক হারে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তেমনই পাকিস্তানের উপর থেকে সামরিক সাহায্যের হাত তুলে নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। সে দেশে শান্তি ফেরানোর প্রশ্নে তালিবানের সঙ্গে আর আলোচনা নয়, সরাসরি যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ভারত মনে করে, এর পাশাপাশি পাকিস্তানের ‘সন্ত্রাসে মদতদাতা’ চেহারাটাও ক্রমশ আবরণহীন হচ্ছে। তাই পশ্চিম বিশ্বকে পাশে নিয়ে ইসলামাবাদকে আরও কোণঠাসা করার সেরা সময় এটাই।

গোটা বিষয়ে নিজেদের মতো করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করছে সাউথ ব্লক। নয়াদিল্লির ব্যাখ্যা, আফগানিস্তানে নিজেদের আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করার জন্য শুধু তালিবান অথবা হাক্কানি নেটওয়ার্ক নয়, আইএস-কেও খুব গোপনে সাহায্য করছে আইএসআই এবং পাক সেনা। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, আফগান সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদ উস্কে দেওয়ার পিছনে দু’টি উদ্দেশ্য আছে ইসলামাবাদের। এক, আশরাফ গানি সরকার সম্পর্কে জনতার মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করা। এমন আবহাওয়া সৃষ্টি করা যেখানে আফগানরা মনে করবেন, তাঁদের সরকার দেশবাসীকে ন্যূনতম নিরাপত্তাটুকু দিতে ব্যর্থ। দুই, আমেরিকাকে চাপ দিয়ে আবার আলোচনার রাস্তায় নিয়ে আসা।

আসলে দু’টি বিষয়ই পরস্পর জড়িত। পাকিস্তানকে বাইরে রেখে আফগান-সমস্যার সমাধান অসম্ভব— এতদিন ধরে পশ্চিম বিশ্বে এই তত্ত্বই বিক্রি করে এসেছে ইসলামাবাদ। এখন কোণঠাসা অবস্থায় হিংসা ছড়িয়ে ফের নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে চায় তারা, যাতে আমেরিকা নিজেদের পাক-নীতি পুনর্বিবেচনা করে। সূত্রের খবর, এই বিষয়গুলিই ওয়াশিংটনকে বিশদে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

Kabul Delhi দিল্লি কাবুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy