Advertisement
E-Paper

৫ হাজার মাইল সাঁতরে জীবনদাতার কাছে বার বার ফিরে আসে এই পেঙ্গুইন

রক্তের কোনও টান নেই, তবুও সে বারে বারে আসে! নেই কোনও ঘরবাড়ি, তা সত্ত্বেও প্রবল টান অনুভব করে। আর সেই টানের কারণেই পাড়ি দেয় প্রায় আট হাজার কিলোমিটার পথ। সাঁতার কেটেই ফিরে আসে তার জন্মদাতার কাছে! আর্জেন্তিনা-চিলির সমুদ্র সৈকত থেকে জল কেটে কেটে সোজা ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো। গত চার বছরে এক বারের জন্যও ভুল হয়নি।

ডি’সুজা এবং ডিনডিম।

ডি’সুজা এবং ডিনডিম।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ১৬:৪৯
Share
Save

রক্তের কোনও টান নেই, তবুও সে বারে বারে আসে! নেই কোনও ঘরবাড়ি, তা সত্ত্বেও প্রবল টান অনুভব করে। আর সেই টানের কারণেই পাড়ি দেয় প্রায় আট হাজার কিলোমিটার পথ। সাঁতার কেটেই ফিরে আসে তার জন্মদাতার কাছে! আর্জেন্তিনা-চিলির সমুদ্র সৈকত থেকে জল কেটে কেটে সোজা ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো। গত চার বছরে এক বারের জন্যও ভুল হয়নি।

নাম তার ডিনডিম। লাতিন আমেরিকার ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইন। রক্ত নয়, ঘর নয়, তবে কি ভালবাসার টানেই সে ফিরে আসে ব্রাজিলে? ভালবাসা তো বটেই! তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কৃতজ্ঞতা বোধও! এ গল্প নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়া এক পেঙ্গুইন এবং বৃদ্ধ রাজমিস্ত্রির। দিনে দিনে তা রূপান্তরিত হয়েছে সন্তান ও পিতার কাহিনিতে। কী রকম?

বছর পাঁচেক আগের কথা। রাজধানী শহর রিও ডি জেনেইরোর কাছের এক দ্বীপে মৃতপ্রায় এক পেঙ্গুইনকে উদ্ধার করেন জোওয়া পেরেইরা ডি’সুজা। বছর পঁচাত্তরের ওই বৃদ্ধ পেশায় রাজমিস্ত্রি। কখনও কখনও মত্স্যজীবীর কাজও করেন। তেল মাখামাখি অবস্থায় পড়ে থাকা পেঙ্গুইনটিকে দেখে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব ছিল না, সে বেঁচে আছে। ডি’সুজা তাকে উদ্ধার করে শুশ্রূষা করেন। গা থেকে তেল মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা শুরু করেন। তাকে খাবার দেন। কয়েকের সপ্তাহের শুশ্রূষায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠে সে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। নতুন করে জীবন পায় সে। তার গায়ে যাতে শক্তি ফিরে আসে, তার জন্য রোজ মাছ খেতে দিতেন। এর পর ডি’সুজা তাঁকে সমুদ্রে ছেড়ে দেন। জলে চলে যায় পেঙ্গুইনটি। সেটা ছিল ফেব্রুয়ারি মাস। ভাবেননি, আর কখনও ফিরে আসবে সে!

পেঙ্গুইনটি চলে যাওয়ার পর বেশ কিছু দিন তার অভাব বোধ করেন ডি’সুজা। একটা সময়ের পর ভুলেও যান তিনি। এর পরে মাস চারেক কেটেছে কি কাটেনি! জুনের মাঝামাঝি সময়ে এক দিন পেশাগত কারণে সমুদ্রের পাড়ে ছিলেন ডি’সুজা। হঠাত্ই দেখেন, একটি পেঙ্গুইন জল থেকে উঠে এসে তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে। চিনতে ভুল হয়নি। এ তো সে-ই! দু’জনের দেখা হয়। ডি’সুজা তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করেন। সে-ও মুখ বাড়িয়ে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করে। ডি’সুজার মনটা যেন আবেগে ভেসে যায়। পেঙ্গুইনটির একটি নাম দেন তিনি— ডিনডিম। এর পর টানা আট মাস ওই সৈকতেই থেকে যায় সে।

আবার ফেব্রুয়ারি আসে। ডি’সুজাকে ছেড়ে আবারও সে জলে ভেসে পড়ে। সোজা আর্জেন্তিনা-চিলির সমুদ্র সৈকত। জননকাল শুরু হয়ে গিয়েছে যে! কিন্তু, সেটা মাত্র মাস চারেকের জন্য। তার পরে ফের আট হাজার কিলোমিটার পথ সাঁতরে ডিনডিম ফিরে আসে ডি’সুজার কাছে। দু!জনের এখন পিতা-সন্তানের সম্পর্ক। সে কথা স্বীকারও করেছেন ডি’সুজা। বলেছেন, ‘‘আমি ডিনডিমকে নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসি। বিশ্বাসও করি, ও-ও আমাকে ভালবাসে। প্রত্যেক বার ও যখন ফিরে আসে মনে হয়, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল।’’ গত চার বছরে এই সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে।

penguin Rio de Janeiro Dindim

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}